যশোর জেলা আ.লীগের নতুন কমিটির দেয়ার আহ্বান মিলন-শাহীনের

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

রবিবার সন্ধ্যায় যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়।

৭৫ সদস্যবিশিষ্ট যশোর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি। উপদেষ্টা পরিষদ আরও ১৯ জনের। ৯৪ সদস্যের বিশাল বহরের কমিটি। কিন্তু ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের মাত্র ৮ জন নেতা।

বেশিরভাগ নেতা অনুপস্থিত থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্ষোভের সুরে  এ কথা বলেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে শহিদুল ইসলাম মিলনকে সভাপতি ও শাহীন চাকলাদারকে সাধারণ সম্পাদক করে ২২ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ২০২১ সালের ৩০ জুলাই জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে ১৯ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ ও ৭৫ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। যশোরের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নয় এমন অনেককেই তদবির করে কমিটিতে স্থান দেয়া হয়। আবার অনেকে ত্যাগী নেতা কমিটিতে পদ পাননি। ফলে দলীয় কর্মসূচিতে জেলা আওয়ামী লীগের পদধারী বেশিরভাগ নেতা অনুপস্থিত থাকেন।

ভিডিও: https://www.youtube.com/watch?v=I0XRTTYnN7k

মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানে ক্ষুব্ধ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমপি শাহীন চাকলাদার বলেন, আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একটা অনুষ্ঠানে জেলার সিনিয়র কোনো নেতাই উপস্থিত হয়নি। এই সভা থেকে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চাইব, এই জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন করে আবার কাউন্সিলর দিয়ে, অন্ততপক্ষে যারা দলের দুর্দিনে সব সময় দলের সঙ্গে থাকে তাদের দিয়েই কমিটি ঘোষণা করতে।

তিনি বলেন, এখন সময় হালুয়া রুটির ভাগাভাগির সময়। কে এখন বসে স্কুল দখল করবে। কেউ নদীর বালির মহল দখল করবে। এই সমস্ত নেতা দিয়ে আওয়ামী লীগ চলছে। এটা দুঃখজনক ব্যাপার। আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একটা দিনে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের তেমন কোনো নেতাই আসেননি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে শাহীন চাকলাদার আরও বলেন, এই অনুষ্ঠানে জেলার সভাপতিও আছে। চলেন ঢাকায় গিয়ে তাদের জিজ্ঞাস করি, আপনারা যশোর জেলার এই সব নাম কোথায় পেয়েছিলেন। কোথায় থেকে ধরে এনে দিয়েছিলেন। তারা এখন নেতা হয়ে কেউ অনুষ্ঠানে আসে নাই কেন। আমি ওই সব নেতার চাকরি করি না। আমার নেতা হচ্ছে শেখ হাসিনা। আমার আদর্শ বঙ্গবন্ধু। আজকের দিনে দুঃখ লাগে, আজকে যদি ১৭ এপ্রিল না থাকত, তাহলে ৯ মাসের এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংগঠিত করতে পারতাম না। এই দিনে যদি মুজিবনগর সরকার গঠিত না হতো, তা হলে আজ আওয়ামী লীগের নাম নিশানা থাকতো না।

অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, জেলা কমিটির এতো বহর, অথচ অনুষ্ঠানে আজ জেলার উল্লেখযোগ্য কোনো নেতা উপস্থিত নেই। আছে গুটিকয়েক ছাত্রলীগ ও শহরের নেতাকর্মীরা।

জেলা আওয়ামী লীগের যেসব সিনিয়র নেতারা আজ অনুষ্ঠানে আসেনি তাদের নাম উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আপনারা জেলা আওয়ামী লীগের পদপদবি নেওয়ার জন্য তদবির করবেন, অথচ পদ পাওয়ার পরে দলের কর্মসূচিতে উপস্থিত হবে না এটা দুঃখজনক। বিশৃঙ্খলাকারীদের দলে জায়গা হবে না।

উল্লেখ, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে সারা দেশের আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করার কর্মসূচি ঘোষণা করলেও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এদিন কোনো পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। জাতীয় বা দলীয় পতাকা উত্তোলন না করেই মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এমনকি দায়সারাভাবেও যশোর শহরের বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ। শ্রদ্ধা জানানো সময়ে সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনসহ জেলা আওয়ামী লীগের ৫ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্র জানিয়েছেন।

এপ্রিল ১৯.২০২২ at ১২:৩৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আক/জআ