রাজশাহীতে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের চিঠি

রাজশাহী নগরীর উপকন্ঠ এলাকা গুলোতে রয়েছে প্রায় শতাধিক ইটভাটা। আইন ও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই নামে বেনামে এসকল দীর্ঘ ২৫/৩০ বছর ধরে চলছে এসব ইটভাটাগুলি। ইটভাটা পরিচালনা জন্য যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন তা অধিকাংশ ইটভাটা মালিকদের কাছে নেই।

স্থানীয় প্রশাসকে ম্যানেজ করে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পরিচালনা হচ্ছে ভাটাগুলি। এসব ভাটাগুলি অধিকাংই জনবসতিপূর্ণ এলাকায় পাশে ফসলি জমিতে অবস্থিত। প্রতি বছর শতশত বিঘা ফসলি জমি গিলছে ভাটাগুলি। এতে দেশ হারাচ্ছে ফসলি জমি। রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। দূষণ হচ্ছে পরিবেশ। স্বাথ্য ঝুকি রয়েছে স্থানীয়। আর লাভবান হচ্ছে অবৈধ ইটভাটার মালিকগন।
রাজশাহীর উপকণ্ঠ কাটাখালী থানাধীন ইউসুফপুর ইউনিয়ন নওদা পাড়া গ্রামের এম.জেড.পি ইটভাটা। এই ইটভাটার মালিক মাজদার সরকার।

কয়েক বছর যাবত অবৈধভাবে ইটভাটা চালিয়ে আসছে। এই ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র নাই, বিএসটিআই এর কোনো কাগজপত্র নাই, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নাই। এতগুলো নাই এর মধ্যে চলছে ভাটার ব্যবসা। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভাটাটি অবস্থিত। ২৫০গজ দূরেই রয়েছে নওদাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এম.জেড.পি ইটভাটার সরকারি কোন অনুমোদন পাননি ইটভাটার মালিক মাজদার সরকার।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ইটভাটাটি কয়লার পরিবর্তে গাছের কাঁচাখড়ি ও ডালপালা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ভাটার একজন শ্রমিক জানান গড়ে প্রতিদিন ১০০ মনের উপর জ্বালানি হিসেবে গাছের কাঁচা খড়ি ব্যবহার করা হয় এই ইটভাটায়। ফলে পরিবেশ দূষিতসহ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে জনশক্তি।

জানতে চাইলে এম.জেড.পি ইটভাটার মালিক মাজদার সরকার বলেন, রাজশাহীতে অন্যান্য সকল ইটভাটা যে নিয়মে চলছে আমার ইটভাটাও সে নিয়মে চলছে।

তিনি আরও বলেন গতবছর ভ্রাম্যমাণ আদালত আমার ইটভাটা বন্ধ করে দিয়েছিল আমি উপরমহলে কথা বলে সবকিছু ঠিকঠাক করে নিয়েছি। এখন ইটভাটায় আগুন দেওয়ার প্রস্ততি চলছে বলেও জানান ইটভাটার মালিক মাজদার সরকার।

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মনির হোসেন জানান, জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা প্রস্তুতের ও পরিচালনার জন্য ইটভাটার মালিক মাজদার সরকারকে অবৈধ এমজেডপি ইটভাটা সরিয়ে নেওয়ার জন্য গত রোববার (১৫ নভেম্বর) একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। ইটভাটাটির ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। একই অনুলিপি চারঘাট নির্বাহি অফিসারকেও (ইউএনও) পাঠানো হয়েছে।

তিতি আরও জানান, গতবছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানাধীন সাথী ব্রিকস ও বিশ্বাস ব্রিকস নামের দুইটি ইটভাটা নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরিচালনার জন্য ধ্বংস করা হয়েছে। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

চারঘাট নির্বাহি অফিসার সৈয়দা সামিরা (ইউএনও) জানান, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এম.জেড.পি ইটভাটা অপসারণের জন্য রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তর একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তারা বলে জানান ইউএনও চারঘাট।

১৬ নভেম্বর, ২০২০ at ২০:০৫:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআরআর/এমএআর