চৌগাছার কৃতী সন্তান ৪১ তম বিসিএসএ সদ্য কর ক্যাডার নাসরিন সুলতানা মিল্কি

কোভিড-১৯ বিশ্ববাসী তথা আমাদের দেশের মানুষের কাছে অভিশাপ। তবে ব্যতিক্রম মনে হয় আমার বেলাতে। করোনা যেন আমার জীবনে আশীর্বাদ। প্রতিদিন করোনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন। বই খাতা নিয়ে চলে আসি বাড়িতে।
 অত্যন্ত সতর্কতার সাথে করোনাকালীন রাত-দিন ২৪ ঘন্টার মধ্যে অন্তত ১৫/১৬ ঘন্টা বই নিয়ে সময় পার করেছি। দুই বছরের কঠোর অধ্যবসয়ে আজকের এই সাফল্য। কথাগুলো বলেন, চৌগাছার কৃতী সন্তান ৪১ তম বিসিএসএ সদ্য কর ক্যাডার হওয়া নাসরিন সুলতানা মিল্কি।
আরো পড়ুন :

> পাইকগাছায় ঈদুল আযহায় ভিজিএফ’র চাল বঞ্চিতদের ডিসি’র কাছে অভিযোগ
> বাবার সাথে অভিমান করে ছেলের আত্মহত্যা

নাসরিন সুলতানা মিল্কি চৌগাছা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ইছাপুর গ্রামের পিতা আতাউর রহমান আর মা রিজিয়া সুলতানার মেয়ে। কোনও ভাই নেই মিল্কির, দুই বোনের মধ্যে সে ছোট। বড় বোন নাজনিন সুলতানা শিল্পি গৃহিনী। শিল্পির স্বামী চৌগাছা সরকারি শাহাদৎ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে গ্রামের বাড়ি ইছাপুর গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের মেয়ে নাসরিন সুলতানা মিল্কি, তাই এত বড় অফিসার হওয়া সত্ত্বেও তার ভেতরে নেই কোন অহংকার। কর ক্যাডার মিল্কি একটি দা হাতে বাড়ির চারপাশে বন কেটে পরিষ্কার করছে।
নাসরিন সুলতানা মিল্কি ২০০৫ সালে ইয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে ৫ম শ্রেণি পাশ করেন। ২০১১ সালে চৌগাছা সরকারি শাহাদৎ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। চৌগাছা সরকারি কলেজ হতে ২০১৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ২০১৮ সালে প্রথম বিভাগ পেয়ে অনার্স শেষ করেন। এরপর করোনার ছোবলে সব কিছু এলোমেলো হলেও হাল ছাড়েনি মিল্কি। বাড়িতে ফিরে এসে সমানভাবে পড়ালেখা করে গেছেন। ২০২২ সালে প্রথম বিভাগ পেয়ে মাস্টার্স পাশ করেন।
এরপর বিসিএস এর জন্য প্রস্তুতির পাশাপাশি অন্য একটি চাকরির জন্যও চলে চেষ্টা। ২০২২ সালে প্রাইমারির পরীক্ষা দেন মিল্কি, চাকরি হয়ে যায়। ২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি উপজেলার মাড়ুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন। বর্তমানে শিক্ষকতা পেশায় তিনি আছেন। প্রাইমারির পরীক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি ২০২১ সালে ২৯ নভেম্বর তিনি বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেন এবং সাফল্যের সাথে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
 ২০২৩ সালের ১৪ মে বিসিএস এ মৌখিক পরীক্ষা দেন এবং সদ্য ঘোষিত ৪১তম বিসিএসএ তিনি কর ক্যাডার হন। তার এই সাফল্যে গোটা পরিবারসহ এলাকার মানুষ আনন্দে আত্মহারা। গ্রামের বয়োবৃদ্ধরা বলেন, আমাদের সেই ছোট্ট মিল্কি আজ মস্তবড় অফিসার, তার সাফল্যে আমরা আনন্দিত গর্বিত।

আগস্ট ১৪, ২০২৩ at ১৯:৫৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর