থানচিতে আমের ফলন ভালো, কাঙ্খিত দাম পাচ্ছে না চাষিরা

প্রতিবছরে মণের প্রতি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে আম্রপালি, রাংগুই আম’সহ অন্যান্য জাতের আমের বাগান চাষিদের কাঙ্খিত দাম পেলেও এবছরে এখনো ভরা মৌসুমে আমের দাম পাননি। আমের মৌসুমের শেষের দিকে যখন আমের দাম বাড়ার কথা, তখনো কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না বান্দরবানে থানচিতে আম বাগান চাষিরা।

আমের বাগান আগাম বিক্রি এবং লোকসানের নিশ্চিত জেনেও দাম বাড়ার অপেক্ষা না করে আমবাগান বিক্রি করেছেন। আর কারও কারও বাগানের আম না ছিড়েঁ প্রতিবছরে কাঙ্খিত দামের বিক্রি আশায় অপেক্ষা করেছেন চাষিরা। বাগানিদের প্রায় প্রত্যেক বাগানই আমের ফলন ভালো, কিন্তু হতাশ মনের চাষিদের আম কাঙ্খিত দাম পাবো কি? প্রশ্ন জেগেছে অনেকেই।

আরো পড়ুন :

> অভয়নগরে নওয়াপাড়া পৌরসভা ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক প্রচারের উদ্বোধন
> জুড়ীতে কালা হত্যা মামলায় নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার জলিলের

থানচি উপজেলায় ছান্দাক পাড়া, হালিরাম পাড়া, নাইন্দারী পাড়া, কমলা বাগান পাড়া, নোকতাহা পাড়া, নারিকেল পাড়া, জিনিঅং পাড়া ও আপ্রুমং পাড়া’সহ বেষ্ট কয়েকটি পাড়ায় আম বাগান চাষিদের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাংগুই জাতের আম এবছরে যথেষ্ট ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু আমের দাম কম হওয়ায় মৌসুম শুরুতে বিক্রি করিনি তাঁরা। প্রতিবছরে মতো কাঙ্খিত দামের পাওয়ার আশায়, ক্ষতি সম্মুখীন হচ্ছেন বাগানিরা। আম বাগানের সার ও কীটনাশক, আগাছা দমনে খরচ এবং নিজেদের পারিশ্রমিকও তুলতে পারছেন না অনেকেই। আবার কারো কারো আগাম বাগান বিক্রি কারণে লাভবানও হচ্ছেন।

এদিকে থানচি সদর’সহ রেমাক্রী, তিন্দু ও বলিবাজার ইউনিয়নের আমবাগানিদের প্রায় প্রত্যেকেই কম-বেশি লোকসানের মুখে পড়েছেন। বাগানিদের কারও মুখেই হাসি নেই। দেশের আমের দাম না থাকার কারণে বাগান চাষিরা যেমন ক্ষতি সম্মুখীন, তেমনি লোকসানের অবস্থায় পুঁজিও উঠে আসে কি না, সেই সংশয়ে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় আমবাগান চাষিরা বলেছেন, রাংগুই জাতের আম এবছরে যথেষ্ট ফলন ভালো হয়েছে। এখানে অধিকাংশ বাগানই রাংগুই জাতের আম বাগান করেন। এই আম আম্রপালি ও অন্যান্য জাতের আমের চেয়ে রাংগুই দেরিতে ফলন দেয়। পাকা অবস্থায় টেকেও বেশি দিন। কিন্তু আমের দাম কম হওয়ায় মৌসুম শুরুতে বিক্রি করিনি।

তাঁরা আরো বলেছেন, এবছরে দাম বাড়ার অপেক্ষা থাকার কারণে বাগানগুলোতে শত শত মণের দুই-তৃতীয়াংশ আম ঝরে পড়ে পঁচে গেছে। ভরা মৌসুমে এখনো মণের প্রতি ৬শত থেকে ৭শত টাকার। কাঙ্খিত দাম না পেয়ে হতাশ বাগান চাষিরা। এমতাবস্থায় হলে আগামী বছরে কম খরচে আম বাগান পরিচর্চায় হবে- বলেছেন চাষিরা।

এদিকে প্রতিবছরে মতো থানচি সদরে আগাম আমবাগান ক্রেতা মো. জসিম, নুরুল’সহ কয়েকজনে জানান, পাহাড়ের আগাম কয়েকটি আমবাগান কিনেছি, আমের দাম না বাড়ার কারণে কেনার পুঁজির অর্ধেক তুলতে পারবো কি না, তা নিয়ে সন্দেহে আছেন। প্রতিবছর এ সময়ের তুলনায় বাগানিরা প্রায় অর্ধেক দাম আম বিক্রি করছেন। এতে বাগানিরা যেমন ক্ষতি সম্মুখীন, তেমনি আমবাগান কিনে নেওয়া ব্যবসায়ীরাও লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

থানচি উপজেলা কৃষিদপ্তরের অফিসার বিপ্লব মারমা জানান, এবছরের বিভিন্ন জাতের আমের ফলন ব্যাপকভাবে ভালো হয়েছে। কিন্তু কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় হতাশ চাষিরা। তবে উপজেলা চার ইউনিয়নের কৃষিদপ্তরের অন্তর্ভুক্ত চাষিদের সকল ধরনে কৃষিকাজে পরিচর্চা ও পদ্ধতি ব্যবহারের সহযোগিতার প্রদান করা হয়েছে।

আগষ্ট ০১, ২০২৩ at ১৭:৫৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর