পিবিআইয়ের এসআইকে ঘুষ না দেয়ায় মিথ্যা প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

মামলা তদন্তের সময় বিবাদীরা ঘুষ না দেয়ায় এক ব্যক্তির থেকে সাদা কাগজে সই নিয়ে স্বাক্ষী বানিয়ে নিজের ইচ্ছামত জবানবন্দি লিখে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করার অভিযোগ উঠেছে গোপালগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপ-পরিদর্শক (এসআই) রুপকুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে।

রবিবার সকালে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে এমন অভিযোগ করেন উপজেলার পাকুরতিয়া গ্রামের আজিজুল হক, আতিয়ার শেখ ও নুরনবী শেখ।

আরো পড়ুন :
> যবিপ্রবির সিএসই বিভাগের সফট্ওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ল্যাব উদ্বোধন
> নলছিটিতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে ধর্ষনের অভিযোগে মামলা

সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, নাজিরপুর উপজেলার উত্তর ঝনঝনিয়া গ্রামের নাসির উদ্দিন মোল্লা টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া বাজারের টিনের দোকানে টাকার প্রয়োজন হলে প্রায় এক বছর আগে আমাদের তিন ভাইয়ের থেকে মোট ৩৫ লক্ষ টাকা ধার নেয়। তার বিনিময়ে সিকিউরিটি বাবদ কৃষি ব্যাংকের ৩ টি চেক জমা দেয়। টাকাটা দুই মাসের কথা বলে নিলেও চার মাসেও কোন টাকা ফেরত দেয়নি। পরে টাকার জন্য বেশি চাপ দিলে আমাদের তিন ভাইকে তার সাক্ষরিত ৩ টি চেক প্রদান করে। প্রায় একমাস পরে আবারও টাকা চাইলে আমাদের নামে টুঙ্গিপাড়া আমলী আদালতে সি,আর ৪৮৬/২২ ধারায় জোরপূর্বক ৩ টি চেক ও স্টাম্প রাখার মামলা করে। তখন আদালত থেকে তদন্তভার পায় টুঙ্গিপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম।

তখন এসআই কামরুল ইসলাম সরজমিন তদন্ত করে পান, ব্যাবসায়িক লেনদেনের কারনে তিন ভাইয়ের কাছে আলাদাভাবে ৩ টি চেক জমা দিয়ে মোট ৩৫ লক্ষ টাকা ধার নেন বাদী নাসির। এছাড়া জোরপূর্বক চেক ও স্টাম্প নেয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি বলেও আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।

তারা আরও বলেন, কিন্তু বাদী নাসির সেই প্রতিবেদনে নারাজি দিলে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন পিবিআইয়ের এসআই রুপকুমার বিশ্বাস তদন্তে আসলে ত্রিশ হাজার টাকা ঘুষ দিলে তদন্ত প্রতিবেদন বিবাদীদের পক্ষে দেবে বলে জানায়। কিন্তু বিবাদীরা ১০ হাজার টাকা দিলে চাইলে তা নিতে চায়না এসআই রুপকুমার বিশ্বাস। পরে বাদীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে ও সরজমিন তদন্তের প্রমান হিসাবে উর্ধতন কতৃপক্ষকে দেখানোর কথা বলে পাকুরতিয়া বাজারের কাঠমিস্ত্রি আজাদ শেখের কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নেয়। পরে ঐ কাগজে তার জবানবন্দি নিজের ইচ্ছামত লিখে তাকে তিন নম্বর স্বাক্ষী বানিয়ে দেয়। এছাড়া আরও দুইজন স্বাক্ষীও জানেনা তারা মামলার স্বাক্ষী। মূলত চেক ও স্টাম্প জোরপূর্বক নেয়ার কোন ঘটনাই ঘটেনি। তাই মিথ্যা প্রতিবেদন ও আজাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নিয়ে স্বাক্ষী বানিয়ে দেয়ার নিন্দা জানাই।

বিবাদী আতিযার শেখ বলেন, আমরা এতদিন জেনে এসেছি পিবিআই সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন দেয় আদালতে। কিন্তু এসআই রূপকুমার আমাদের ধারণা মিথ্যা করে দিয়েছে। তাই আমরা তার উপযুক্ত বিচার চাই। তার বিরুদ্ধে শীঘ্রই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর দরখাস্ত করবো।

এ বিষয়ে মামলার বাদী নাসির উদ্দিন মোল্লার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে গোপালগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই রুপকুমার বিশ্বাস বলেন, তারা সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করেছেন সেগুলো সম্পূর্ন ভিত্তিহীন। আর কারো কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নেইনি। প্রয়োজনীয় নথি রেখেই প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে, প্রয়োজনে আপনারা সেগুলো পাবেন।

গোপালগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের পিবিআইতে অর্থনৈতিক লেনদেনের কোন সুযোগ নেই। এ মামলার বিষয়ে না জেনে কিছু বলতে পারিছিনা।

জুলাই ০৯, ২০২৩ at ১৭:৪৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর