আম গাছে ‘সফেদা’! ভিড় মানুষের, খেতে সাহস পাচ্ছে না কেউ

ছবি- সংগৃহীত।

আমগাছে অসংখ্য ফল ধরেছে। কিন্তু সেগুলো দেখতে কোনোভাবেই আমের মতো নয়। থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা ফলগুলো দেখতে সফেদার মতোই। আম গাছে সফেদা কীভাবে হবে? বিষয়টি নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। অদ্ভুত এই ফল দেখতে অনেকে ভিড় করলেও কেউ খেতে সাহস পাচ্ছেন না।

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের পশ্চিম খাদা, ধানসাগর ইউনিয়নের সিংবাড়ি ও খোন্তাকাটা ইউনিয়নের রাজৈর গ্রামের বেশ কয়েটি বাগানের আম গাছে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। কাছে গিয়ে ধরে না দেখলে কী ফল সেটি কোনোভাবেই বোঝার উপায় নেই। স্থানীয়রা জানালেন, ফলগুলো আমই। হঠাৎ সবুজ আমের গায়ে এমন ধূসর বর্ণ দেখে কেউ বুঝতেই পারছেন না।

আরো পড়ুন :
> মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব
> কাঁঠালিয়া রাতের আঁধারে মন্দিরের জমি দখল করে কাঁটাতারের বেড়া

সফেদার মতো দেখতে এসব আম পোকায় ভরা বলে জনিয়েছেন বাগান মালিকরা। উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, ছত্রাকের আক্রমণে আমগুলো সফেদার মতো দেখা যাচ্ছে।

পশ্চিম খাদা গ্রামের আম বাগান মালিক শাহজাহান আকন বলেন, ‘আমার ৭৫ বছর বয়স। জীবনে এর আগে কখনও আম গাছে সফেদার মতো ফল হতে দেখিনি।’

সিংবাড়ি গ্রামের সুমন সরদার বলেন, ‘এ বছর আমাদের অনেক আম গাছে সফেদা রঙের ফল হয়েছে। যা বিক্রি করা যায় না। ভয়ে কেউ খেতেও চায় না। আমাদের গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে আমের চাষাবাদ না হলেও প্রায় প্রতিটি বাড়িতে কম বেশি আম গাছের বাগান রয়েছে। এ বছর আমও ধরেছে বেশ। কিন্তু কিছু গাছের আম সফেদা ফলের মতো ধূসর রঙের হওয়ায় তা খাওয়া নিয়ে আমার পরিবারসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ভীতি দেখা দিয়েছে। যে কারণে এসব আম খামারিরা বাজারে বিক্রিও করতে পরছি না।’

শরণখোলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, ‘আম গাছে কখনো সফেদা হয় না। দেখতে অবিকল সফেদা ফলের মতো হলেও আসলে এগুলো আম। এগুলো এক ধরনের রোগ, যা প্রথমে আফ্রিকা মহাদেশের উগান্ডার আম গাছে দেখা দেয়। এটা এখন বাংলাদেশে কিছু অঞ্চলে আম গাছে দেখা যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এই রোগাক্রান্ত আমের গায়ে ছত্রাকের আবরণ পড়ে দেখতে সফেদা ফলের মতো হয়েছে। এতে ভয়ের কিছু নেই। ছত্রাকের কারণে পোকা হলেও যেকোনো সময় ওই আম খাওয়া যাবে।’

এ কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বাগেরহাটে গত এক মাস ধরে চলা তাপদাহে বাতাসে আদ্রতা কমে যাওয়ার কারণে আমে ছত্রাকের কারণে এমনটা হয়েছে। যাদের গাছে এমন আম হচ্ছে তারা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে কিটনাশক স্প্রে করলে আমের এই ছত্রাকজনিত সমস্যা সমাধান হবে।’

জুন ০২, ২০২৩ at ১৬:৪৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর