কাঁঠালিয়া রাতের আঁধারে মন্দিরের জমি দখল করে কাঁটাতারের বেড়া

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় অর্ধশত বছরের পুরাতন একটি মন্দিরের জমির মালিকানা দাবি করে পথ আটকে দোকানঘর নির্মান ও মন্দিরের মাঠের একাংশে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (২জুন) সকালে সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয় লিখিত অভিযোগে দায়ের করেন মন্দির কমিটি কর্তৃপক্ষ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শনিবারর মধ্যেরাতে উপজেলায় আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমছিটকি এলাকায় শ্রী শ্রী সর্বজনীন বারোয়ারি কাঁলি মন্দিরের প্রবেশ পথের গেইট ভেঙ্গে একটি দোকান ও মাঠের একাংশ দখল করে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দখল করে নিয়েছে স্থানীয় রেজাউল কবির শাওন ওরফে শাওন দর্জি,আজাদ ফকির, শাহিন দর্জি, জাহিদুল ইসলাম সহ তাদের পক্ষের লোকজন। এদের মধ্যে রেজাউল কবির শাওন ওরফে শাওন দর্জি বাংলাদেশ সেনাবাহীনির সৈনিক পদে নিযুক্ত রয়েছে।

আরো পড়ুন :
> আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী বাজেট হয়নি
> মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব

এদিকে মন্দির দখলের ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা ও  আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। মন্দির কমিটি ও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জানান, যে প্রক্রিয়ায় একটি পক্ষ মন্দিরের সামনের ও পাশ্ববর্তী জমির মালিকানা দাবি করছেন সেটি অবৈধ। আমরা ও আমাদের পূর্বপুরুষরা দীর্ঘ ৫০ বছর যাবত এখানে পূজা পালন করে আসছি। প্রতি বছর এখানে কাঁলি, শিতলা, রক্ষাচন্ডী, মনষা, শিব, হরি, বিষ্ঞু, শনি দেবতার পূজা উদ্যাপিত হয়। এতে বিভিন্ন এলাকার প্রায় কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। এছাড়াও এখানে প্রতিদিন স্থানীয়রা এই মন্দিরে তৃর সন্ধ্যা দিয়ে আসছে।

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক বঙ্কিম মিত্র বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে এখানে মন্দির নির্মান করা হয়। সে থেকে এখানে বছরে ১২ টি পূজা পালিত হয়ে আসছে। মন্দিরে জমি দখল দেওয়ার পর থেকে তারা এখানে ঘোরাঘুরি করে আমাদের হুমকি মূলক কথাবার্তা বলে।’

মন্দির কমিটির সভাপতি গৌতম চন্দ্র হালদার বলেন, আমাদের মন্দিরের পথ আটকে ফেলায় ২ দিন ধরে আমাদের মন্দিরে পূজা আর্চনা বন্ধ রয়েছে। আমরাও হুমকির মধ্যে রয়েছি, সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। যারা জমি দখল করে রাখছে তারা বলছে যে, এটা তারা ক্রয় করেছে। কিন্তু মন্দিরের সম্পত্তি ক্রয় করা যায় না। এটাই আমরা জানি। আমরা সরকারের মাধ্যমে এর সমাধান চাই। মুসলমান হোক, বৌদ্ধ হোক, হিন্দু হোক, সরকারতো নিরপেক্ষভাবে মন্দির, মসজিদ, গীর্জা রক্ষা করবে। আমরা চাই, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে মন্দিরের সম্পত্তি উদ্ধার করে  আমাদেরকে সুন্দরভাবে পূজা করার পরিবেশ তৈরি করে দিক।

এদিকে অভিযুক্তদের দাবি, মন্দিরের সামনে ও পথের জমি তাদের নিজস্ব ক্রয়কৃত সম্পত্তি। প্রকৃত ওয়াসিশের কাছ থেকে এটি তারা ক্রয় করছে বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, এবিষয়ে এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জুন ০২, ২০২৩ at ১৬:৩৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মোনাহাঈ/ইর