ইশতেহারের আলোকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দিকনির্দেশ

ছবি- সংগৃহীত।

প্রতিটি বাজেটে নির্বাচনী ইশতেহারে থাকা প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটিয়ে থাকে আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই বলে থাকেন আওয়ামী লীগ যা কিছু করে না কেন, নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকেই করে। দলটির নেতারা বলছেন, নির্বাচনের আগে ইশতেহারে আওয়ামী লীগ যা কিছু প্রতিশ্রুতি দেয়, প্রতিটি কর্মকাণ্ডেই তার প্রতিফলন থাকে। এমনকি ইশতেহার অনুযায়ী প্রতি বছর বাজেট প্রণয়ণ করা হয়। আর মাত্র ৬ মাস পরই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ইশতেহারে থাকছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রতিশ্রুতি। সেই আলোকেই এবারের বাজেটে থাকছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দিকনির্দেশনা।

টানা তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্র ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ইশতেহার শিরোনাম ছিল ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ’। সেখানে বলা হয়েছিল উন্নয়ন, সুশাসন, দারিদ্র্যদূরীকরণ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, আমার গ্রাম আমার শহর, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, এলিভেটর এক্সপ্রেসওয়েসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা। এ বছর ঘোষিত হলো নির্বাচনী বাজেট। এ বারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বাজেটের শিরোনাম দেয়া হয়েছে ‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’। এবারের বাজেটে প্রাধান্য পেয়েছে আয়বর্ধন ও কর্মসৃজনের ধারা অব্যাহত রেখে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে টেকসই করা। সেই সঙ্গে থাকছে ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জনের মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ, ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ; ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং ২১০০ সালে নিরাপদ বদ্বীপ বাংলাদেশ বিনির্মাণ।

আরো পড়ুন :
> যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটেও পাস হলো ঋণসীমা বাড়ানোর বিল
> মেসির ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দিল পিএসজি

এবারের বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে স্মার্ট-নীতি-কৌশলের কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নয়ন ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেন তিনি। সামনের বছরগুলোতে স্বল্পন্নোত দেশ থেকে টেকসই উত্তরণ ও উত্তরণ পরবর্তী বাস্তবতা মোকাবিলা করার কৌশলও এখনই নির্ধারণ করার কথা বলেছেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বাংলাদেশকে উন্নত থেকে উন্নততর রুপান্তরের কৌশল বিন্যাস করছি।

এবারের বাজেটে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিফলন কতটুকু হলো জানতে চাইলে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, যে বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের টার্গেট পূরণ করতে সক্ষম হবে। এর মধ্যে সামজিক সুরক্ষা খাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতনভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সংসদ সদস্যদের নির্বাচনী এলাকায় নানা উন্নয়ন প্রকল্পে বাজেট বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া আরো বেশকিছু জনকল্যাণমূলক কাজের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেসব দেখে বলা যায়, আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী ইশতেহার দিতে যাচ্ছে, তার প্রতিফলন এই বাজেটে রয়েছে।

এদিকে, বাজেট সম্পর্কে জানতে চাইলে গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এই বাজেট হচ্ছে সংকটে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বাজেট। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার যে অভিযাত্রা, সেই অভিযাত্রার প্রথম সোপান হচ্ছে এই বাজেট। এই বাজেটে বাংলাদেশ আরো ঘুরে দাঁড়াবে। সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখেই এ বাজেট করা হয়েছে।

বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এবারের বাজেট ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার সহায়ক। এই বাজেট সময়োপযোগী ও জনকল্যাণমুখী। বিশ্ব অর্থনীতি যখন মন্দা, সে মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সময় উপযোগী বাজেট দিয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, এই বাজেটের মাধ্যমে সেই স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট নগরায়ন এবং স্মার্ট জনগণ গড়ে উঠতে সাহায্য করবে।

জুন ০২, ২০২৩ at ১২:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর