শনিবার যশোরে বিএনপির সমাবেশে, থাকবেন রিজভী, শংঙ্কা ও উত্তপ্ত যশোর আ.লীগের প্রতিহতের হুমকি তবে আমলে নিচ্ছে না যশোর বিএনপি

ছবি- সংগৃহীত।

শনিবার (২৭ মে) যশোরে সমাবেশ করবে বিএনপি। এ সমাবেশ ঘিরে কয়েকদিন ধরে প্রতিহতের হুমকি দিচ্ছে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। তবে হুমকি আমলে নিচ্ছে না বিএনপি। হুমকি ধামকি ও বাঁধা উপেক্ষা করেই সমাবেশ সফল করবেন বলে বিএনপির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন।

এ সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তিনি অসুস্থ থাকায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।

এবিষয়ে প্রেস ক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত এ সব কথা বলেছেন।

আরো পড়ুন :
> রাতের আধারে স্থায়ী অভয়াশ্রমের মাছ চুরি
> কুবিতে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কে ফাঁটল

অন্যদিকে, একই দিনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ও বিএনপি পাশাপাশি সমাবেশ করার ঘোষণায় যশোরের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। উভয় পক্ষের মিছিল সমাবেশে শক্তির মহড়া জানান দেওয়ার চেষ্টা করবে দুই দল। এতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে বিচলিত নন পুলিশ ও বিএনপির নেতারা। তবে, দু দলের সমাবেশকে ঘিরে আতঙ্কিত ও শংঙ্কায় সাধারণ মানুষ।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার, নির্যাতনসহ সরকার পদত্যাগের ১০ দফা দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করবে যশোর জেলা বিএনপি। সমাবেশ সফল করতে জেলা বিএনপি ইতিমধ্যে সকল উপজেলা ও ইউনিয়নে প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন করেছে। বিএনপির জনসভাকে ঘিরে যখন সকল প্রস্তুতি চলছে, সেই মুহূর্তে বিএনপির সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় যশোর আওয়ামী লীগ।
বিএনপি বৃহস্পতিবার প্রশাসনের পক্ষ শহরের ভোলাট্যাংক রোডে জনসমাবেশের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুমতি পেয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন। বেলা ১২ টা থেকে শুরু হওয়া জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন, জেলা বিএনপির আহŸায়ক মরহুম তরিকুল ইমসলামের সহধর্মীনি অধ্যাপক নার্গিস বেগম।

এদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতির পাওয়ার পর জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ দলের খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে সাথে নিয়ে সমাবেশ স্থল পরিদর্শন করেছেন।

প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, ২৭ মে যশোরে বিএনপির সমাবেশ করার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে পুলিশ নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতারে নেমেছে। এই গণগ্রেফতারের মধ্যেই আমরা সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে দুঃখের বিষয় প্রথমে আমরা শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাঁ ও টাউন হল ময়দানে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু ঈদগাহে ঈদের প্যান্ডেল থাকাতে অনুমতি দেয়নি। আর টাউন হল ময়দানে আমাদের সমাবেশের অনুমতি চাইলে আমাদের না দিয়ে সরকার দলীয় শ্রমিক সংগঠনটিকে অনুমতি দেয়। তবে শহরের ভোলা ট্যাংক রোডে তাদের সমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি দেয়া হয়েছে। সরকার দলীয় নেতা কর্মীদের হামলা হুমকি উপেক্ষা করেই এই সমাবেশ সফল করা হবে। আমাদের যে দাবি সেই দাবিতে সাধারণ জনগণের দাবি। সেই দাবি আদায়ে আমরা আমাদের নৈতিক অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াবো না। যশোরে সমাবেশকে ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন হুমকি মূলক বক্তব্য প্রদান করছে। তাদের সেই হুমকিতে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিচলিত না।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তারা পাহারা দেবে। সে ক্ষেত্রে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান আমাকে সভা সমাবেশ করার অধিকার দিয়েছে। সেই সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন; কিংবা সংবিধান সমন্বিত রাখবার জন্য যে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তারা যশোরে দায়িত্ব পালন করছেন তারা নিশ্চয়ই এটা বিবেচনা করবে। দায়িত্বটা তাদের। আমি আমার গণতান্ত্রিক অধিকারের বাইরে কিছু বলছি না। আওয়ামী লীগ সব জায়গায় তারা সংঘাত সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করেছে। প্রশাসন দিয়ে চেষ্টা করেছে, গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ করে দিয়ে চেষ্টা করেছে তারা তো কোনো পথই বাকি রাখেনি। নতুন কোনো পথ খোলাও রাখেনি। আমরা সংঘাত এড়িয়েই সমাবেশে করবো।

এই বিষয়ে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন বলেন, বিএনপি ভোলা ট্যাংক রোডে সমাবেশ করবে এটা পুলিশের অবহিত করেছে। সমাবেশ কেন্দ্র করে পুলিশ তৎপর থাকবে। যাতে কোন সহিংসতা না হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসেন আরও বলেন, একই দিনে দুটি সমাবেশ হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা নেই। কারণ, শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার জন্য পুলিশ দুই পক্ষকে আহŸান জানিয়েছে। তা ছাড়া পুলিশের অতিরিক্ত সতর্কতা থাকবে বলে তিনি জানান।

মে ২৬, ২০২৩ at ১৯:০৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর