প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও অগ্রগতি ‘শূন্য’

ছবি- সংগৃহীত।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অত্যন্ত পুরাতন যশোর শামস্-উল-হুদা স্টেডিয়াম। ঐতিহ্যবাহী এই স্টেডিয়াম নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে অল্প বৃষ্টি হলেই ডোবায় পরিণত হয়। স্টেডিয়ামটি আরও আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে বেশ কয়েকবছর ধরে। কিন্তু এখনো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বা অর্থ মন্ত্রণালয়ে সংস্কার প্রকল্পের ফাইল আটকে আছে। গত বছর ২৪ নভেম্বর এই মাঠেই সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের জনসভায় স্টেডিয়ামে ১১ স্তরের গ্যালারি নির্মাণের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা উৎফুল্ল হন। আশায় বুক বাধেন যশোরবাসী। তবে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ছয় মাস পার হলেও সংস্কার প্রকল্পের ফাইল একটুও নড়চড় হয়নি বলে জানিয়েছে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব কবির।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠন হওয়ার দশ বছর পর ১৯৫৯ সালের ১৫ জানুয়ারি স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর জাকির হুসাইন। এরপর ১৯৭৬ সালে খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অর্থায়নে যশোর স্টেডিয়ামের আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থায়নে ১৯৯৪-৯৫ সালে নির্মিত হয় বর্তমানের জেলা ক্রীড়া সংস্থার অফিস সংলগ্ন ভিআইপি গ্যালারি। এছাড়া নানা সময়ে সরকারি ও ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা।

আরো পড়ুন :
> আ. লীগ সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে
> সাতক্ষীরায় ১১টি অস্ত্রসহ যুবক গ্রেফতার

তবে এইসব স্থাপনা এখন জরাজীর্ণ। অনেকাংশে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া অল্প বৃষ্টিতে মাঠটি ডোবায় পরিণত হয়। আর এই মাঠ সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন মন্ত্রী, এমপি, জনপ্রতিনিধি ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদসহ (এনএসসি) বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ করছেন জেলা ক্রীড়া সংগঠকরা। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তবে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১১ স্তর বিশিষ্ট গ্যালারি নির্মাণ করে দেয়ার ঘোষণায় নতুর আশার আলো দেখতে শুরু করেন যশোরের ক্রীড়া সংগঠকরা।

যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব কবির বলেন, বিভিন্ন মহলে যোগাযোগের পর ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আমেনা খাতুন ক্রিকেট গ্যালারির পশ্চিম পাশ থেকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অফিস পর্যন্ত ২১ ফুট উঁচু ও ৫শ ফুট লম্বা গ্যালারি নির্মাণ করা হয়। ধীরে ধীরে পুরো গ্যালারি নির্মাণের কথা ছিল। এ জন্য ৮-১০ বার প্রজেক্ট জমা দেয়া হয়েছে। কখনো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, আবার কখনো অর্থমন্ত্রণালয়ে আটকে যায়। বিভিন্ন দপ্তরে তদবির করে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল ছাড় করানো হয়েছিল। জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর মনে করেছিলাম দ্রুত প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেয়ার পরও মন্ত্রণালয়ে তদবির করতে হয়। তদবির করার কোন লোক না থাকায় বর্তমানে প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে।

যশোরের সাথে সারা দেশের যোগাযোগের জন্য রয়েছে সকল ধরনের ব্যবস্থা। হোক সেটা আকাশপথ, সড়ক পথ কিংবা রেলপথ। ফলে এখানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলার আয়োজন করা বেশ সহজই। সেই ধারণা থেকে যশোরবাসী মনে করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অত্যন্ত পুরাতন শামস্-উল-হুদা স্টেডিয়ামটি একদিন আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে পরিণত হবে। কিন্তু কবে হবে বা আদতেই হবে কিনা সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি কোন মহল থেকেই।

মে ২৪, ২০২৩ at ২০:৩৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর