আ’লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি মাদককারবারীদের রাখতে তোড়জোড়

চিলমারীর সীমান্তবর্তী জেলা গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে মাদক ব্যবসায়ী, বিএনপি-জামায়াত কর্মী ও একাধিক মামলার আসামীকে অন্তর্ভুক্ত করতে তোড়জোড় চলছে। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা চিহ্নিত এসব অপরাধীদের কমিটিতে স্থান পাইয়ে দিতে লবিং করছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের পদ প্রত্যাশী নেতারা এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।

গত বছর ১২ জুন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি নির্বাচিত হন বিশিষ্ট শিল্পপতি আফরুজা বারী এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আশরাফুল আলম সরকার লেবু।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুন্দরগঞ্জে আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী ও একাধিক মামলার আসামী সাজু সরদারকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান দিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চেষ্টা করছেন। সাজু আওয়ামী লীগ কিংবা সহযোগী সংগঠনে কখনই সম্পৃক্ত ছিলেন না। তার নামে মাদ্রক মামলাসহ একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এলাকায় মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত সাজু সরদারের ছোট ভাই শামীম সরদার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে তার একটি পা বিচ্ছিন্ন হয়। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে সাজু কমিটিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীদের।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটির সহ সভাপতি মো: সাজেদুল ইসলাম বলেন, সাজু সরদার সুন্দরগঞ্জে আলোচিত মাদক ব্যাবসায়ী। এমন বিতর্কিত ব্যক্তি কমিটিতে স্থান পেলে আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। সুন্দরগঞ্জের রাজনীতি কলঙ্কিত হবে। তিনি বলেন, মাদক সম্রাট ও বিএনপি-জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতাকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান দেওয়ার চেষ্টায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতা এসব বিতর্কিতদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছেন।

আরো পড়ুন :
>অভয়নগরে শুভসংঘের উপহার পেয়ে খুশি ভ্যান ও রিক্সাচালক ভাইয়েরা
> ভোক্তা অধিকারের অভিযান জরিমানা ১ লক্ষ টাকা: প্রতিষ্ঠান সিলগালা

পদ প্রত্যার্শী স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লেবুর হাত ধরে দলের অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন মো: মশিউ রহমান বিপ্লব। তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামাত নেতা মাজেদের মামাতো ভাই। তার নামে জমি দখল, চাঁদাবাজি, হুমকি-ধামকি, ঘরবাড়ি পোড়ানো, হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

তারা আরো বলেন, কখনই দল না করে বিএনপি-জামায়াত পরিবারের মো: নূর আলম সরকার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগে ভেড়ানোর চেষ্টা চলছে। এখানেও দলের বেশ কয়েকজন নেতা উপজেলা কমিটি সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা নেতারা সুপারিশ করছেন। এনিয়ে বেশ বেকায়দায় আছেন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা উপজেলা নেতারা।

সকল অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সরকার লেবু বলেন, সাজু সরদারকে কমিটিতে রাখার সুযোগ নেই। সাজু সরদার চিহ্নিত মাদক কারবারী। তিনি আরো বলেন, আমরা এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তুত করিনি। চেষ্টা করব যেন বিতর্কিত কেউ কমিটিতে স্থান না পায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সাজু মাদক সম্রাট কিনা জানি না। তবে সে যোগ্য হলে অবশ্যই পদ পাবে। তিনি আরো বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারন সম্পাদক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে আমাদের কাছে পাঠালে আমরা তা যাচাই-বাছাই করব। যোজন-বিযোজনের প্রয়োজন হলে করব। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ পেতে আমি কোন সুপারিশ করছি না।

মে ২৪, ২০২৩ at ১৫:৫৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ফহ/ইর