ইবির রেজিস্ট্রার পদের লোভে গোপনে কাঁদা ছোড়াছুড়ি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ রেজিস্ট্রার পদের লোভে পদলোভীদের গোপনে কাঁদা ছোড়াছুড়ি, নকল তথ্য ফাঁঁসসহ বিভিন্ন অভিযোগে অশান্ত হয়ে ওঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবন। অভিযোগ ওঠেছে সাবেক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ডিভিশনের পরিচালক বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আলী হাসান ও বর্তমান পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ডিভিশনের পরিচালক ড. নওয়াব আলীসহ গুটি কয়েক কর্মকর্তার কাছে বন্দি বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সকল রেকর্ড সংরক্ষণকারী অনুমোদনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও সাবেক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ডিভিশনের পরিচালক এইচ এম আলী হাসান সৎ নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন বলে দাবি করছেন। অন্যদিকে গোপন ধুম্রজালগুলো ষড়যন্ত্র বলে স্বীকার করেছে দুই কর্মকর্তা। এছাড়া বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদ নিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি নিয়ে গোপনে কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার তুঙ্গে।

প্রশাসনের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, আবারো পুর্ননিয়োগ পেয়ে রেজিস্ট্রার হিসেবে বহাল থাকাতে পারে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ. এম আলী হাসান (আলহাজ্ব)। সর্বদা সৎ থেকে নিজ অবস্থানে কাজ করে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন। সূত্র মতে, মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে থেকেই ছাত্রলীগে যোগ দিয়েছেন। টানা প্রায় ১০ বছর দিয়েছেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব। পরে তিনি যোগদান করে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সর্ব বৃহৎ শিক্ষাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত হয়ে কর্মকর্তাদের সর্ববৃহৎ দায়িত্ব পালন করছেন।

আরো পড়ুন :
> ক্ষোভে ফুঁসছে সারাদেশ
> বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদকপ্রাপ্তির ৫০ বছর

জানা যায়, এইচ এম আলী হাসান ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ডিভিশনের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। নিয়োগ লাভের পর ৭০ কোটি টাকার প্রকল্প সুষ্ঠু ও সফলভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করেন এবং রাষ্ট্রের কোষাগার অতিরিক্ত প্রায় তিন কোটি টাকা জমা প্রদান করেন। ইউজিসির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের মধ্যে সারাদেশের মধ্যে একমাত্র তার নেতৃত্বে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পটিই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়। যার ফলস্রুতিতে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাকে ইউজিসি ও এ.এম.ই.ডি থেকে অভিনন্দিত করা হয়।

বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৭ কোটি টাকার প্রকল্পটি এইচ এম আলী হাসানের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে ২৬ শে জুন থেকে এটা অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির ঊর্ধ্বমুখি সম্প্রসারণের ও বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু হয়ে প্রকৌশল অফিসের সহযোগিতায় হলে তার সময় সমাপ্ত হয়। এছাড়া ৯ টি ১০ তলা ভবনের টেন্ডার প্রক্রিয়াও প্রকৌশল অফিসের মাধ্যমে সম্পাদন সমাপ্ত হয় আলী হাসানের সময়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, টেন্ডার দরপত্র প্রক্রিয়া প্রকৌশল অফিস কর্তৃক সম্পাদিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে ২০১৮ সাল পর্যাপ্ত সমস্ত প্রকল্প মিলে মোট অর্থ আসে ৪৩ বছরের ১৭০ কোটি টাকা। অথচ এইচ এম আলী হাসান পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ডিভিশনের পরিচালক হওয়ার পর অতিতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়ে তিনি ৫৩৭ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প সরবরাহ থেকে আনতে সক্ষম হন। তার এই ধারাবাহিকতায় বর্তমান আধুনিক ও উন্নয়নশীল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম তার দক্ষতা অভিজ্ঞতা ও সততা বিবেচনায় এনে ২০২২ সালের ৩০ জুন তাঁকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। তিনি দীর্ঘদিন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ডিভিশনের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তি, সংস্থা ব কোন প্রতিষ্ঠান কোন অভিযোগ উপস্থান করেন নি। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রায় এক বছরের সময়কালে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ জমা পারেনি। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মেয়াদের প্রায় ১ বছরকালে তার বিরুদ্ধে ফেক আইডি খুলে নকল ও বানেয়াট মিথ্যা ভিত্তিহীন মনগড়া তথ্য প্রচার করা হয়েছে। তবে তারপরো বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করে গিয়েছেন তিনি।

এইচ এম আলী হাসান বলেন, দীর্ঘসময় সফলতার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলোতে আছি। এখন পর্যন্ত তেমন কোন অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে নেই। আমি আমার সততা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সামনের দিনেও আমার বস্তুনিষ্ঠতার সাথে সৎ ও উপাচার্য মহোদয়ের আদেশে আদিষ্ট হয়ে কাজ করে যাব। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এছড়া তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে যারা বিশ্ববিদ্যালয় ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রচার করছে তারা তদন্ত করুক। অনেকে তদন্ত করেছে কিন্তু আমি সৎ থাকায় আমার বিরুদ্ধে তারা তেমন গুরুতর কোন অভিযোগ পায়নি। গত এক বছর আগে পিডির দায়িত্বে থেকে ভার্টিকুলার এক্সটেনশনসহ সকল দায়িত্ব তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বুঝিয়ে দিয়েছি। এছাড়া এই এক বছরের দশতলা ভবনসহ কি হয়েছে তা জানা নেই। সেসময় টেণ্ডার হয়ে গিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই হীন স্বার্থ ও চরিতার্থ করার জন্য রেজিস্ট্রার পদলোভী ব্যক্তিরা দীর্ঘ দীর্ঘ পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ডিভিশনের পরিচালক দায়িত্বে থেকে বিদায় নেওয়ার পূর্বের ন্যায় বর্তমানে তারা আমার সততা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সফল্য বয়ে আনা দেখে ঈর্ষান্বিত হচ্ছে। তারা আমার পদে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প কোটি কোটি টাকা আত্মসর্বস্ব, একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজগুলো মুখথুবড়ে ফেলতে চাই। সেজন্য এমন ধুম্রজাল ও অপপ্রয়াশ চালাচ্ছে। এছাড়া এই ষড়যন্ত্রের মাঝে শুধু কর্মকর্তারা না শিক্ষক, কর্মচারী ও পদলোভীরা আছেন বলেন মনে করে তিনি।

মে ২৩, ২০২৩ at ১১:১১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রাআঅ/ইর