ফলন ও পতিত জমির ব্যবহার বৃদ্ধির প্রত্যাশা : যশোরে চারা রোপণ পদ্ধতিতে পাট চাষ

চারা রোপন পদ্ধতিতে পাট আঁশ উৎপাদন প্রযুক্তি যশোর অঞ্চলের কৃষকদের পাট আঁশের ফলন ও পতিত জমির ব্যবহার বৃদ্ধির আশা দেখাচ্ছে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই)-এর মণিরামপুর উপকেন্দ্র।

বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) এর উপকেন্দ্র, মণিরামপুর, যশোর অফিস চারা রোপন পদ্ধতিতে পাট আঁশ উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য যশোর জেলার যশোর সদর, মণিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলায় বিনা মূল্যে ৭ একর জমিতে চারা রোপন পদ্ধতিতে পাট আঁশ উৎপাদন প্রযুক্তির প্রদর্শনী স্থাপন করার জন্য বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে পাটের চারা সরবরাহ করেছে।

পাট গবেষণা উপকেন্দ্র মণিরামপুরের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানান, সাধারণ পাটের জীবনকাল ১২০ দিন। কিন্তু বোরো ধান কেটে ওই জমিতে পাট চাষ করতে গেলে পুরো জীবনকালের আগেই অনেক চাষী পাট কাটতে বাধ্য হন অন্য ফসল লাগানো জন্য। ফলে পাটের উৎপাদন কমে যায়। রোপন পদ্ধতিতে পাট চাষ করলে সুবিধা হলো আগেই অল্প জমিতে পাটের বীজ ছড়িয়ে দিয়ে ৩৫ দিন পর তুলে তা জমিতে রোপন করলে ভালো হয় এবং পুরো জীবনকাল পাটগাছ পায়। এতে সুবিধা পাটের উৎপাদন বেশি হয়।

চারা রোপণ পদ্ধতিতে পাটের আবাদ করেছেন কেশবপুরের আলতাপোলের কৃষক মোঃ আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা সচারচর বোরো ধান কাটার পর সরাসরি বীজ বপন করে পাট চাষ করে থাকি। এতে করে পাটের পুরোপুরি জীবনকাল সম্পন্ন করে পাট কাটতে পারি না। ফলে পাট আঁশ উৎপাদন খুব লাভজনক হয় না। কিন্তু চারা রোপন পদ্ধতিতে পাট আঁশ উৎপাদন করলে পুরোপুরি জীবনকাল সম্পন্ন করে পাট পাট করতে পারবো এবং পরবর্তী ফসলও যথাসময়ে বপন করতে পারবো। এতে করে আমার ফলন এবং আয় উভয়ই বৃদ্ধি পাবে।

যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে যশোর জেলায় এখন পর্যন্ত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ২৫ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে পাট চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়া বোরো-পতিত- আমন শস্যক্রমের জমি ৫৪ হাজার হেক্টর। এই ৫৪ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) কর্তৃক উদ্ভাবিত চারা রোপন পদ্ধতিতে পাট চাষাবাদ করা সম্ভব। এর ফলে বোরো ও আমন ধানের অনেক পতিত জমি পাট চাষের আওতাভুক্ত হবে।