৩য় টার্মিনালে বিদ্যুৎ সংযোগের লাইন টানার ক্ষেত্রে ঠিকাদার মানছে না সঠিক নিয়ম

২০১৭ সালে বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। আর বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এই নির্মাণকাজ করছে জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং।

এই কোম্পানি গুলো তাদের কাজের সুবিধার্তে কিছু সেক্টরে বাংলাদেশের লোকাল সংস্থার মাধ্যমে করানোর সিন্ধান্ত নেন। সেই মোতাবেক টেন্ডারকল করে যোগ্য কোম্পানিগুলোকে কাজ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় বিদ্যুৎ সংযোগের টার্মিনালের বাহিরে ২ কিঃমিঃ ও ভিতরে ২ কিঃমিঃ এর কাজ পান যৌথভাবে রনি এন্টারপ্রাইজ, মুন্সি ইজ্ঞিনিয়ারিং ও সাজু এন্টারপ্রাইজ । এই দুই কোম্পানি উত্তরা ৫ নং সেক্টর লেকপাড় রোড থেকে শুরু করে ৩ নং সেক্টর হয়ে বিমানবন্দরের দিকে পিছডালা মসৃন রাস্তা কেটে ৩৩ কেভি ভূগর্বস্থ বিদ্যুৎ ক্যাবল স্থাপনের কাজ করে যাচ্ছে।

কিন্তু তাদের কত টুকু দৈর্ঘ ও প্রস্ত কাটা হবে তার কোন নথি নেই সাইডে। কি ধরনে মালামাল ব্যবহার করা হবে তার কোন কাগজ আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন ক্রাবে যান। সরেজমিনে দেখাযায় কোথাও কোথাও সেনেটারী পাইব ও কোথাও ফেগ্যিবল পাইব ব্যবহার করছেন। মালের গুনগতমান ঠিক আছে কিনা জানতে চাইলে সাজু এন্টারপ্রাইজ কতৃক নিয়োগকৃত ইঞ্জিনিয়ার সুধাংশু ও রনি এন্টারপ্রাইজের ইঞ্জিনিয়ার শাহ আলম বলেন ডেসকো অফিস কর্তৃক যেই ধরনের চুক্তি আছে সেই চুক্তি মোতাবেক আমরা মালামাল সরবরাহ করছি। রাস্তা কাটার কোন পারমিশন আছে কিনা দেখতে চাইলে তারা বলেন সিটি কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়ার মনোরঞ্জনের সাথে সাক্ষাৎ করতে।

আরো পড়ুন :
>> চৌগাছার বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ের ব্রিজ এবং সংযোগ সড়ক সরু হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
>> অভয়নগরে মাদ্রাসা শিক্ষক তোজাম্মেল হকের মৃত্যুতে বিভিন্ন মহলের শোক

সিটি কর্পোরেশন জানান আন্তর্জাতিক মানের কাজ হওয়ায় রাস্তা কাটার পারমিশন দেওয়া হয়েছে। তবে কতটুকু কাটার কথা আর কতটুকু কাটা হচ্ছে এই ব্যাপারে সাইডে গিয়ে সিটি কর্পোরেশনের কোন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। তবে কেউ একজন বলে উঠলো সিটি কর্পোরেশনকে দুই কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে যদিও সাইডের লোক বলছে ডেসকো থেকে বড় বড় কর্মকর্তারা কাজটি পরিদর্শন করার জন্য আসেন। কিন্তু বিগত দুইদিন যাবৎ সাইডে ঘুরে কোন কর্তব্যরত বড় বাবু কে দেখা যায়নি। এই কাটাকাটির কাজে রাস্তার ধারে বসানো হয়নি কোন সেফটি গার্ড। কাজ করার সময় শ্রমিকদের নেই কোন নিরাপত্তামূলক নির্মাণ সামগ্রী। কাজের শর্তে যদিও উল্লেখ থাকে যে যতটুকু পাইপ টানা হবে ততটু

কু মাটি ও বালু দিয়ে ভরাট করতে হবে। কে শুনে কার কথা সরকারি কাজ বলে জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই। হাসান নামে এক পথচারী বলেন একে তো বৃষ্টির দিন তারপর রাস্তার পাশে লাল মাটি গুলো এমনভাবে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে ওঠ। মহিউদ্দিন নামে সেক্টরের এক বাসিন্দা বলেন সিটি কর্পোরেশন রাস্তা কাটার টাকা তো পেয়েছেন ঠিকই কিন্তু কবে নাগাদে রাস্তাগুলো মেরামত করবেন আদো কি মেরামত হবে।

বিষয় গুলো নিয়ে টেলিফোনে কথা হয় ডেভেলপমেন্ট এন্ড প্রজেক্ট অনুবিভাগের প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম এর সাথে। তিনি দাবী করেন শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রেখে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে থার্ড টার্মিনালের কাজ। তিনি আরো বলেন কাজটি পরিদর্শনের দায়িত্বে রয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সনাতন দত্ত। সনাতন দত্ত বলছেন কাজে কোথাও কোন রকমের অবহেলা হচ্ছে না। জনগণ বলছেন সেফটি গার্ড ছাড়া রাস্তা কাটা মোটেও উচিত নয়। রাস্তার দুই ধারে জমে আছে বালুর স্তুুপ। তাহলে কি ডেসকো ও সিটি করপোরেশন মিলে কি অনিয়ম কে নিয়মে পরিনত করছেন না তো।

মে ২০, ২০২৩ at ১৬:২৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রমি/শাস