যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা ফেরানো জরুরি

ছবি- সংগৃহীত।

পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেছেন, সড়কে গণপরিবহনের বিশৃঙ্খলার কারণেই দুর্ঘটনা বাড়ছে। ঢাকার রাস্তা এবং সব মহাসড়কে একই অবস্থা বিরাজ করছে। বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধের দায়িত্ব যাদের, তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছে না বলেই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এ থেকে উত্তোরণে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলা ফেরানোই সবচেয়ে জরুরি। এজন্য সংশ্লিষ্টদের কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে। সড়কে আবারো আইন না মানা এবং শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়া প্রসঙ্গে ভোরের কাগজের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন এই পরিবহন বিশেষজ্ঞ।

অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, ঢাকায় একসময় ২৫ কিলোমিটার গতিতে যানবাহন চলতো। তখন দুর্ঘটনাও কম ঘটেছে। কারণ তখন যানবাহনের গতি থাকলেও শৃঙ্খলা ছিল, প্রতিযোগিতা কম ছিল। এখন আমরা দেখছি গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গতি কমেছে, কিন্তু দুর্ঘটনা বেড়েছে। এর প্রধান কারণ- সড়কে বিশৃঙ্খলা ও চালকদের বেপরোয়া আচরণ। এই বিষয়টি যাদের দেখার দায়িত্ব তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। দায়িত্ব পালনে পুলিশ ও বিআরটিএর লোকজন অনেকটাই উদাসীন। এই সুযোগে চালকরাও বেপরোয়াভাবে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়, দুর্ঘটনা ঘটে। মহাসড়কেও একই অবস্থা। তাই সড়ক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এখন সময়ের দাবি।

উদাহরণ টেনে অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, একটু খেয়াল করলে রাজধানীর ভেতরের সড়কেই ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ দেখা যায়। ক্যান্টনমেন্ট এলাকার রাস্তায় যানবাহনগুলো শৃঙ্খলার সঙ্গে চলে। কারণ সেখানে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা আছে। একই যানবাহন ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাইরের রাস্তায় আসা মাত্রই চালকের আচরণে পরিবর্তন আসে। এর কারণ- নজরদারির অভাব। হাতিরঝিল, গুলশান, বনানী এলাকার মধ্যে চলাচলরত যানবাহনের গাঁয়ে আচড় থাকে না। মাঝপথে যাত্রী উঠানো ও নামানো হয় না। অথচ অন্যসব রাস্তায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সারাদেশের গণপরিবহন ব্যবস্থায় সংস্কার করতে হবে। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। তাহলেই সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমবে এবং সড়ক নিরাপদ হবে। আমি আগেও বলেছি এবং এখনো বলব, সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের দেয়া ১১১ সুপারিশ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ঊর্ধ্বে উঠে এগুলো বাস্তবায়ন করা না হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে না।

মে  ১৮, ২০২৩ at ১০:৪৪:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর