সিলেট জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ, ভূমি বিরোধের জেরে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি

সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার নিজ ফুলসাইন্দ গ্রামে ভূমি বিরোধ কেন্দ্র করে মিথ্যা মামলা দিয়ে বার বার নাটক সাজিয়ে পুলিশি হয়রানি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগসহ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিলেট জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন জানিয়েছেন গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি নজরুল ইসলাম।
১৫ মে সোমবার বৃদ্ধ নজরুল ইসলাম সিলেট জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এই অভিযোগ দাখিল করেন।

অভিযোগে তিনি উল্লেখ্য করেন, নিজ ফুলসাইন্দ গ্রামের সন্ত্রাসী বিএনপি নেতা মাহবুব জামান ও এমরান গং গত ৬ মার্চ তারিখে পরিকল্পিত ভাবে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় বৃদ্ধ নজরুল ইসলাম ও তার পরিবারের নারি পুরুষ মিলে ৭ জনে বিরুদ্ধে ঘটনার নাকট সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দেন। এই মিথ্যা মামলা নং-৬৩/২০২৩ইং।

মামলায় পুলিশ দিয়ে গভীর রাতে বৃদ্ধ নজরুল ইসলামের বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় হানা দিয়ে পুলিশ মারমুখি ও অশালিন আচরণ করেন বলে অভিযোগ দেওয়া হয়। পুলিশ সুপার বরাবরে নজরুল ইসলাম আবেদনে জানিয়েছেন মামলার বাদী পক্ষের দেয়া অভিযোগ তদন্ত না করে রাত ১২ টায় থানায় মামলা রেকর্ড করে রাত ৩টায় বাদী পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ আসামী ধরার নামে বাড়ির মহিলাদের অশালিন আচরণ এবং মহিলার ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে থাকেন। মামলার বাদি পক্ষ কর্তৃক বিবাদীদের ফাঁসাতে বৃদ্ধ নজরুল ইসলামের বাড়ির পুকুরে তিনি ও তার পরিবারের অলক্ষ্যে তার বাড়ির পুকুরে বাদি পক্ষ লোহার রড পুকুরে ফেলে দিয়ে বৃদ্ধ নজরুল ইসলামের পক্ষকে ফাঁসিয়ে নাটক সাজিয়ে দেন।

থানায় মামলা রেকর্ডের ৩ ঘন্টার মধ্যে বৃদ্ধ নজরুল ইসলামের বড় ছেলে হাসনাতকে ৬ মার্চ পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। ১১ মে পূর্বে জামায়াত নেতা,পরবর্তীতে বিএনপি নেতা ও মামলার বাদী মাহবুব জামান ও এমরান গং গোলাপগঞ্জ মডেল থানার সাব ইন্সপেক্টর হাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে নজরুল ইসলামের বাড়ির পুকুরে ফেলে রাখা লোহার রড পুকুরের পানির ভেতর কোথায় আছে এমরান দেখিয়ে দেয় পুলিশকে। আর সে জন্য পুলিশ ওই লোহার রড উদ্ধার করে আলামত হিসেবে জব্ধ করে থানায় নিয়ে যায়। বাদী, বিবাদী একই গোষ্ঠি গত পরস্পরের আত্মীয় স্বজন হয়।

বৃদ্ধ নজরুল ইসলামের বাড়ির একমাত্র আসা যাওয়ার রাস্তায় মামলার বাদি মাহবুব জামান পক্ষ রাস্তার অংশিদার হওয়ার কারণে হিংসা বসত রাস্তার মধ্যে পাকা দেয়াল নির্মাণ করে সেটি নিজেরা ভেঙ্গে দিয়ে নাটক সাজিয়ে বৃদ্ধ নজরুল ইসলামের বাড়ির পবিরবারে উপর দোষ চাপিয়ে মামলা করেন। গত ১৪ মার্চ তারিখে মামলার বাদি মাহববু জামান, বৃদ্ধ নজরুলের ভাতিজিকে রাস্তায় দেখে মাহববু জামানের ভাতিজা এমরান অশালিন কথা বার্তা বলে। এই অশালিন কথার প্রতিবাদ করায় এমরান ও মাহবুবু জামান নজরুলের স্কুল পড়ুয়া নাতিকে রাস্তা থেকে তুলে তাদের বাড়িতে বেআইনি ভাবে নিয়ে আটক রাখে।

এ ঘটনা জানা জানির পর সালমানকে উদ্ধার করতে নজরুলের বাড়ির লোকজন এমরানের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবাদ করে সালমানকে উদ্ধার করে আনেন। এই উত্তেজনা কর ঘটনাটি এমরান ও মাহবুব জামান পক্ষ মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে নিজেরা নাটক সাজিয়ে এমরান কে আহত দেখিয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি দেখিয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় উল্টো অভিযোগ দায়ের করেন।

থানা পুলিশ ও তাদের কথায় সব সময় সাড়া দেয়। এ ঘটনার শুরুর সময় নজরুলের ভাতিজি ফরিদা ইয়াসমিন তাৎক্ষনিক ভাবে ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশি সাহায্য চাইলে দীর্ঘ ১ ঘন্টা পর পুলিশ পরামর্শ দেয় থানায় গিয়ে অভিযোগ করার জন্য। কিন্তু এমরান ও মাহবুব জামান পক্ষ তাদেরকে ভয় ভীতি দেখালে তিনি থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে পারেননি। ১৯৯৯ সন থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে যৌথ অংশিদারী ভূমিতে ভাগ ভাটোয়ারাহীন অবস্থায় বিরোধ চলে আসছে।

এমতাবস্থায় বৃদ্ধ নজরুল ইসলাম আইনকে মান্য করে বিরোধপূর্ণ ভূমি সমাধানের লক্ষে সিলেটের বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ৩য় আদালতে সত্ত্ব বাটোয়ারা মোকাদ্দমা ১৯৩/২২ দায়ের করেন। ওই মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মাহবুব জামান ও এমরান গং বারবার নজরুলের বাড়ির রাস্তায় গিয়ে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করার নামে নাটক সাজিয়ে পুলিশ এনে বাড়ির নারি পুরুষদের মামলা দিয়ে হয়রাণী করছেন। সে জন্য বৃদ্ধ নজরুল ইসলাম এ প্রতিবেদকে বলেন, দেখেন বার-বার পুলিশ দিয়ে মাহববু জামান গং নাটক সাজিয়ে প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন গভীর রাতে পুলিশ দিয়ে হানা দেওয়া হয়। পুলিশের সঙ্গে মাহবুব জামান ও এমরান গং অভিযানে অংশ নিতে দেখা গেছে।

এতে তার পরিবারের স্কুল কলেজ পড়–য়া ভাতিজা ও ভাতিজি সহ বাড়ির মহিলাদের মানহানি ঘটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে নজরুল ইসলাম পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদনে বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছেন।

মে  ১৬, ২০২৩ at ২০:৩৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর