ঘূর্ণিঝড় মোখার ভয়ে ঘরের চালায় আশ্রয় নিচ্ছে রোহিঙ্গারা

ছবি- সংগৃহীত।

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয়স্থল কয়েক লাখ রোহিঙ্গা নাগরিকের। প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আসতে থাকা মোখার প্রভাবে সেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরগুলোও রয়েছে ঝুঁকিতে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ দুর্যোগের প্রভাব মোকাবিলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে কাজ করার জন্য সাড়ে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে একটি প্রস্তুতিমূলক সভা করা হয়েছে। এরই মধ্যে ক্যাম্পগুলোতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ক্যাম্পে স্কুল, ও মসজিদ-মাদ্রাসাসহ মজবুত সেন্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ঝড়ের খবরে রোহিঙ্গা শিবিরে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মো. হোসেন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্প পাহাড়ের তীরে। সব ঝুপড়ি ঘর। বড় ঝড় হলে কী হবে, তা নিয়ে আতঙ্কে আছি।’

উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা শিবিরের মাঝি হেদায়েত উল্লাহ বলেন, ‘যারা নিচে ঘর করছিল, তারা ঘূর্ণিঝড় আসার খবরে ভূমিধসের ভয়ে আছে।’

টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বিষয়ে ক্যাম্পের অলিগলিতে সতর্ক করা হচ্ছে। এ ছাড়া পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতিদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

সবাইক সতর্ক করা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ খালিদ হোসেন বলেন, সব রোহিঙ্গা শিবিরে লোকজনকে সতর্ক করা হয়েছে। মাইকিং করে ক্যাম্পের দুর্বল ঘরগুলো বাঁশ ও রশি দিয়ে মজবুত করতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি পাহাড়ে অতি ঝুঁকিপূর্ণদের চিহ্নিত করে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, আজ (গতকাল শুক্রবার) সেখানে পরিদর্শন করে সব রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের ভেতরের মসজিদ ও লার্নিং সেন্টার আশ্রয় নেয়া জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

টেকনাফ ১৬-এপিবিএনের পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশাও জানালেন, মোখার প্রভাবে সৃষ্টি পরিস্থিতিতে যেকোনো সহায়তার জন্য তারা প্রস্তুত।

ভাসানচরে প্রস্তুতি রেড ক্রিসেন্টের
দৈনিক বাংলার নোয়াখালী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মোখার প্রভাব মোকাবিলায় ভাসানচরে অবস্থানরত ৩০ হাজার রোহিঙ্গার জন্য বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পাঁচ শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জেলা ইউনিটের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবীরা বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দও দেয়া হয়েছে।

শিহাব উদ্দিন জানান, জরুরি পরিস্থিতিতে ভাসানচরের ২০ হাজার রোহিঙ্গাকে দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে রাখার মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাদের জন্য তাঁবুসহ অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

মে  ১৪, ২০২৩ at ২০:৩০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর