বেঁচে থাকতে সব শেষ মেধাবী রনজিতের, এখন সাহায্য চান

ছবি- সংগৃহীত।

মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০২ সালের এসএসসি ব্যাচে বিজ্ঞান বিভাগের অন্যতম মেধাবী ছাত্র রনজিত ঘোষ উত্তম (৩৫)। এসএসসি পরীক্ষার বছরেই বাবা মারা যাওয়ার পরও ভালো ফলাফল নিয়ে পাস করে নানা চড়াই উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে উচ্চ শিক্ষায়ও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন।

এমএসসি পাস করে একটি বেসরকারি বহুজাতিক কোম্পানিতে উচ্চ বেতনে চাকরি পাবার পর ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন পম্পা ঘোষকে। তাদের সংসারে এসেছে শুভ ও ধ্রুব নামে দুই পুত্র সন্তান। সুখের সংসার ছিলো তাদের। কিন্তু সে সুখ বেশি দিন ভাগ্যে জোটেনি। এক সড়ক দুর্ঘটনায় রনজিতের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। দুর্ঘটনার কোম্পানির চাকরি হারিয়ে বছরের পর বছর নিজের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে সহায় সম্বল সব হারিয়ে পরিবার নিয়ে ঠাঁই নিতে হয়েছে সদরের শ্রীকুন্ডী গ্রামে ভূমিহীনদের আশ্রয়ন প্রকল্পে।

অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় সেখানে প্রতি মুহূর্তে যেন মৃত্যুর দিন গুনছেন এই মেধাবী যুবক। নিজের পত্রিক ভিটেমাটিসহ শেষ সম্বল টুকুও বিক্রি করে এক সময়ের মেধাবী রনজিত এখন নিঃস্ব। শারীরিক নানাবিধ জটিল রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য তার আরো অন্তত ৫০ লাখ টাকার প্রয়োজন। আজ যেখানে পরিবার নিয়ে দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা অনিশ্চিত সে অবস্থায় টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারছেন না অদম্য মেধাবী রনজীত। কোনো উপায় অন্তর না পেয়ে আত্মহননের পথও বেছে নিতে চেয়েছেন।

এভাবে চলতে থাকলে যে কোনো মুহূর্তে আত্মহত্যার পথই বেছে নিতে হতে পারে বলে জানালেন মেধাবী তরুণ রনজিত। ইতোমধ্যে স্বামীর ওষুধ ও সন্তানদের মুখে খাবার তুলে না দিতে পেরে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্ত্রী পম্পা ঘোষও। সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে গেলেও আজ ভবিষ্যত নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন স্ত্রী পম্পা। এ অবস্থায় তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবান সহৃদয় মানুষদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন বিপন্ন এ পরিবারটি।

রনজিত ঘোষ জানান, ২০১৪ সালে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলায় কর্মরত অবস্থায় তার মোটরসাইকেলটি ট্রাকের সাথে ধাক্কায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন। এ সময় তার মাথার খুলি ফেটে ১৪টি সেলাই লাগে। পা সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙে মারাত্মক আহত হন। প্রায় ছয় মাস ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় হাসপাতলে চিকিৎসা গ্রহণ করেন তিনি।

পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা নেন। একাধিক অস্ত্রপচার ও নানাবিধ ওষুধের প্রভাবে অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদপিন্ডের মাংসপেশীর ইনফেকশন, ফুসফুসের প্রদাহের ফলে শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন রকমের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন দেখা দিয়ে চামড়ার নিচের মেলানিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে চামড়ায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে সারা শরীরে সাদা ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয়। পায়ের হাড়ে ইনফেকশন দেখা দেয়ায় তিনি এখন আর হাঁটতে বা দাঁড়াতে পারেন না।

বছরের পর বছর ধরে এসব চিকিৎসা করতে গিয়ে তিনি পৈত্রিক ভিটাবাড়ি বিক্রিসহ ধারদেনা করে এখন রীতিমতো রিক্তহস্ত। এ অবস্থায় ঢাকার হার্ট ফাউন্ডেশন এর চিকিৎসকরা তাকে ভারতের ভেলোরে সিএমসি মেডিকেল কলেজে তিন মাস অবস্থান করে লেজার থেরাপির মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এ ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য তার কমপক্ষে ৫০ লক্ষ টাকার প্রয়োজনে যা এই মুহূর্তে সংগ্রহ করা অসম্ভব। প্রথমদিকে কিছুদিন ঘরে বশে প্রতিবেশীদের সন্তানদের প্রাইভেট পড়িয়ে সংসার চালিয়েছেন। কিন্তু অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় সেটিও আর সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সকল বিত্তবানদের সদয় দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

তিনি বলেন, সব হারিয়ে আমরা যখন রাস্তায় ঘুরছিলাম এ সময় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রায়নের এই ঘরটি আমাদের অন্তত মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। কিন্তু দিন দিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে অচিরেই উন্নত চিকিৎসা না পেলে হয়তো আমার মৃত্যু অনিবার্য। আর্থিক শারীরিক এ অবস্থা বেশিদিন চলতে থাকলে পরিবারসহ আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না বলে জানান রনজিত।

রনজিতের স্ত্রী পম্পা ঘোষ জানান, একসময় আমাদের সব থাকলেও দুর্ঘটনার পর সর্বস্ব হারিয়ে এখন আমরা নিঃস্ব। আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার দেনা করে চলতে চলতে এখন আর আমাদের খোঁজ নেন না তারা। অনেক বন্ধুবান্ধবরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কিন্তু এ বিশাল ব্যয়বহন করা তাদের জন্যও অসম্ভব। এই অনিশ্চিত জীবন থেকে মুক্তি পেতে দুই মাস আগে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা পর্যন্ত করেছিলাম বলে জানান । এই অবস্থা থেকে বাঁচতে কি করবেন বুঝতে পারছেন না। সবশেষ তাদের সহযোগিতায় সরকার , সমাজের বিত্তবান ও সমাজসেবী সংগঠনসমূহের দৃষ্টি আকর্ষকণ করেন তিনি।

(রনজিতের জন্য সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা রনজিৎ কুমার ঘোষ,সেভিংস প্লাস একাউন্ট নম্বর :২৬৭১৫৭০০০৫৭৬২;   রাউটিংনং:০৯০৫৫০৫৫৭; ডাচ-বাংলা ব্যাংক লি:মাগুরা, ব্রাঞ্চ কোড-২৬৭. +৮৮০১৩১৯৭৪৩৭০৭(বিকাশ +নগদ পারসোনাল ;+৮৮০১৩১৬৪৮৯০৩৫( বিকাশ+নগদ পারসোনাল) ;+৮৮০১৩১৯৭৪৩৭০৭৪( রকেট পারসোনাল)।

মে  ১৪, ২০২৩ at ১৩:৩৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর