চৌগাছায় মাশরুম চাষে সফল এক শিক্ষার্থী

মাশরুম চাষে ব্যাপক সফলতা লাভ করেছেন যশোরের চৌগাছার এক শিক্ষার্থী। প্রতি মাসে মাশরুম থেকে যা আয় হয় তাই দিয়ে অনার্স পড়া এই শিক্ষার্থী পড়ালেখায় খরচ উঠিয়ে বাকি টাকা বাবার হাতে তুলে দেন।
উপজেলার শেষ মহেশপুর উপজেলার গা ঘেঁষা গ্রাম কাদবিলা। এই গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে জাকিবুল ইসলাম। পড়ালেখার পাশাপাশি বাড়িতে বসেই রোজগারের সিদ্ধান্ত নেন। বাবা শহিদুল ইসলামের সহযোগিতা নিয়ে চৌগাছা-মহেশপুর সড়কে কাদবিলা দরগার পাশে ছোট্ট একটি ঘরে চার বছর আগে শুরু করেন মাশরুম চাষ, যার নামকরণ করা হয়েছে চৌগাছা মাশরুম সেন্টার। প্রধান সড়কের পাশে মাশরুম সেন্টারের অবস্থান।

তাই প্রতি মাসে এই সেন্টার হতে যে মাশরুম উৎপাদন হয় বিক্রির জন্য কোনো হাটবাজারে যাওয়া লাগে না জাকিবুল ইসলামকে। সড়কে চলাচলরত পথচারী ও স্থানীয়রা তার মাশরুম কিনে নিয়ে যান।

আরো পড়ুন :
> ডিবি পুলিশের অভিযানে ৭০পিস ইয়াবা সহ আটক-১
> কুড়িগ্রামে সীমান্তে ১৪টি সোনার বারসহ যুবক আটক

মাশরুম সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, তরুণ উদ্যোক্তা জাকিবুল ইসলাম তার মাশরুম সেন্টারে কাজ করছেন। পলিথিন ব্যাগে রোপণ করা মাশরুমে তিনি পানি স্প্রে করছেন। এ সময় কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, বাবা শহিদুল ইসলাম ঢাকার সাভারের সোবাহানবাগ জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কেন্দ্র হতে চাষ পদ্ধতি জেনে আসেন। পিতার সহযোগিতায় কাজ শুরু করা হয়। মাশরুম চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, সামান্য জায়গা, অল্প পুঁজি আর ইচ্ছা শক্তি হলেই এটি সম্ভব।
চাষের জন্য একটি পলিথিনের ব্যাগ দরকার, এরপর ওই ব্যাগে পরিমাণ মত গমের ভূষি, কাঠের গুড়া, ধানের তুষ, পরিমাণমত চুন, সমপরিমাণ পানি ও খড় দিয়ে ব্যাগের মুখ বেঁধে পানিতে ৩ ঘন্টা ডুবিয়ে রাখতে হয়। এরপর পানি হতে উঠিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাশরুমের মূল উপাদান (মাদার) প্রতিটি ব্যাগে ঢুকিয়ে ব্যাগটি নির্দিষ্ট একটি স্থানে রেখে ব্যাগ হতে দুটি ছিদ্র করতে হয়। কিছু দিন পরেই ওই ছিদ্র দিয়ে মাশরুম বের হতে শুরু করে। একটি ব্যাগ হতে আড়াই শ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যায়। ওই ধরনের চারটি ব্যাগ হতে ১ কেজি মাশরুম হয় যার বাজার দর ৩শ টাকা।
 মাশরুম চাষে কোনো সার বা কীটনাশক লাগে না, এর একমাত্র খাদ্য হচ্ছে পানি, দিনে তিনবার পানি স্প্রে করতে হয়। ব্যাগ হতে মাশরুম বের হলে চার পাঁচ দিনের মধ্যেই তা বাজারজাত শুরু করা যায়। তিনি বলেন, এই সেন্টারে ওয়েস্টার জাতের মাশরুমের চাষ করা হয়। বর্তমানে তার সেন্টারে সহস্রাধিক মাশরুম আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশাব্বির হোসাইন বলেন, চৌগাছা অঞ্চলে ব্যাপক ভাবে মাশরুমের চাষ শুরু হয়নি। অল্প কিছু ব্যক্তি এই চাষ শুরু করেছেন এবং তারা লাভবান হচ্ছেন বলে খবর পেয়েছি।

মে  ১২, ২০২৩ at ১৯:৪২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মোমই/ইর