বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাসায় ঢুকে রাবেয়া আক্তার (২১) নামে এক কলেজছাত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় বাধা দিলে রাবেয়ার মা ইনসুরেত নেছা (৫০), বোন হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫) ও জান্নাতকে (১৩) কুপিয়ে জখম করা হয়। মা বর্তমানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। গাজীপুরের সালনা এলাকায় গতকাল সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় আজ মঙ্গলবার (৯ মে)।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক সাইদুল ইসলাম (২৫) পলাতক রয়েছেন। তিনি দক্ষিণ সালনা এলাকার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহত ছাত্রীর বাবা।
নিহত শিক্ষার্থী রাবেয়া আক্তার (২১) গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। তিনি ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
আরো পড়ুন :
> ভোলায় চোরাই মোটরসাইকেলসহ টিভিএস শো-রুম কর্মচারী আটক
> বাচ্চাটিকে দয়া করে দাফন করুন, কিছু টাকা রেখে গেলাম!
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার হোমনার শ্রীমদ্দি এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ সালনা বাজারে একটি শোরুমে চাকরি করেন। সেখানেই সপরিবার বসবাস করেন। ছোট দুই মেয়েকে কোরআন শিক্ষার জন্য সাইদুল ইসলামকে হাউস টিউটর হিসেবে নিয়োগ করেন আবদুর রউফ। সাইদুল রাবেয়াকে বিয়ে করার জন্য তাঁর পরিবারের কাছে প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। বিয়ের প্রস্তাবে প্রত্যাখ্যাত হয়ে সাইদুল রাবেয়াকে বিভিন্নভাবে বিয়ে করার জন্য চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে সাইদুলকে বাসায় এসে পড়ানোর জন্য নিষেধ করে দেয়া হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাইদুল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসায় প্রবেশ করে রাবেয়াকে ছুরি দিয়ে মাথা, গলা, হাত ও পায়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। তাঁর চিৎকারে মা ও দুই বোন দৌড়ে রাবেয়া আক্তারের ঘরে গিয়ে দেখেন, সাইদুল ছুরি দিয়ে তখনো রাবেয়াকে ছুরিকাঘাত করছেন। এ সময় বাধা দিলে ছুরি দিয়ে তিনি অন্যদেরও আঘাত করে পালিয়ে যান সাইদুল।
রাবেয়ার বাবা আবদুর রউফ বলেন, সাইদুল আমার বড় মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে আমরা সরাসরি না করে দিই। যার কারণেই সে বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
গুরুতর অবস্থায় রাবেয়াকে স্থানীয় ব্যক্তিরা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রাবেয়ার মা। আহত হয়েছে রাবেয়ার ছোট তিন বোন।
এ ঘটনায় রক্তাক্ত ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গাজীপুর সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সকালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মে ০৯, ২০২৩ at ২১:৫৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর