ক্রেতারা ছাড় চাওয়ায় চাপে রপ্তানিকারকরা

ছবি- সংগৃহীত।

তৈরি পোশাক (আরএমজি) ক্রয়ে ৫% পর্যন্ত ছাড় চেয়েছেন ক্রেতারা। এতে চাপে পড়েছেন দেশের রপ্তানিকারকরা।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, নতুন দামের সাথে সম্মত না হলে অনেকেই ক্রয়াদেশ বাতিল করতে পারে। এজন্য সরবরাহকারীরা কম দাম মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। কখনও কখনও, দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম হয়।

তিনি বলেন, বর্তমান উৎপাদন খরচের পরিস্থিতিতে স্থানীয় নির্মাতাদের বর্তমান ১০-১৫% এর পরিবর্তে ২০-২৫% লাভ প্রয়োজন।

লাভের সীমা ২০-২৫% হলে নির্মাতারা শ্রমিকদের মজুরি ঠিক মতো দিতে পারে। তবে তা ১০-১৫%-এ নামলে নিট মুনাফা ২%-এ নেমে আসে।

আরো পড়ুন :
> ভারতের কেরালায় হাউসবোট উল্টে ২২ জনের মৃত্যু
> সোনালী স্বপ্ন ঘরে তুলছেন ফুলবাড়ীর কৃষকেরা

তিনি বলেন, “খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোকে নৈতিক এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক নীতি অনুশীলন করতে হবে। কারণ স্থানীয় সরবরাহকারীরা অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের (বিশ্ব ক্রেতাদের সমর্থিত দুটি কারখানা পরিদর্শন সংস্থা) সুপারিশের সঙ্গে মিল রেখে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা জোরদার করতে বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।”

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে হারনেট ফাউন্ডেশন আয়োজিত আয়োজিত এক সংলাপে এসব কথা বলেন হাতেম।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) ভাইস-প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “গ্যাস ও বিদ্যুতের জন্য উচ্চ শুল্ক দেওয়া এবং বৈশ্বিক মানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সবচেয়ে নিরাপদ কারখানা স্থাপনে প্রচুর ব্যয় করার পরে স্থানীয় টেক্সটাইল ও পোশাক সরবরাহকারীরা ক্রেতাদের কাছ থেকে সবচেয়ে কম দাম পাচ্ছেন।”

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসানও একই অনুভূতির প্রতিধ্বনি করেছেন। দাম কমানোর চাপ সহ্য করতে না পেরে অনেক নির্মাতা ইতিমধ্যেই দেউলিয়া হয়ে গেছে উল্লেখ করে খুচরা বিক্রেতা এবং ব্র্যান্ডগুলোকে নৈতিক ক্রয়ের অনুশীলন অনুসরণ করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের গুরুতর পতনের জেরে রপ্তানির বর্তমান নিম্নমুখী প্রবণতার কারণে ২০২২ সালের রপ্তানি আয় ধরে রাখা কঠিন হবে।

হাসানের মতে, গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি বোর্ডের প্রথম সভা ২৪ মে অনুষ্ঠিত হবে এবং মজুরি ভাল বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি যোগ করেন, পণ্যের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে মজুরি বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ক্রেতাদের প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। মজুরি বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, পোশাক রপ্তানিকারকরা খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডের কাছ থেকে সবচেয়ে কম দাম পাচ্ছেন। ফলে ব্র্যান্ডগুলো মুনাফা করছে কিন্তু কর্মীরা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি খুচরা বিক্রেতাদের ক্রয়ের নৈতিকতা অনুশীলন অনুসরণ করার আহ্বান জানান।

মে  ০৮, ২০২৩ at ১২:৩৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর