এক বছর তিনমাস ভাতা পান না ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ১নং গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান আমিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউপি সদস্যদের ভাতার টাকা না দেয়া, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড বিতরণে অনিয়ম, কর্মসৃজন ওয়ার্ডভিত্তিক জনসংখ্যার হারে বন্টন না করার অভিযোগ করেছে খোদ ইউপি সদস্যরা।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান ট্যাক্স ও হোল্ডিং এর টাকা আদায় করে আত্মসাত করেছেন এবং ব্যাংকে জমা দেননি। হিসাব না দেয়া, নিজ আত্মীয়দের মাঝে টিসিবি কার্ড, বিভিন্ন সরকারি অনুদান, সার ও বীজ বিতরণসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন ইউপি সদস্যরা।

এমন অনিয়মের অভিযোগ এনে আটজন ইউপি সদস্য যশোর জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন। যার অনুলিপি দেয়া হয়েছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের কাছে। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ও উপ-সচিব, ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও অনুলিপি দেয়া হয়েছে।

অভিযোগকারী মেম্বররা হলেন, ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য তানিয়া সুলতানা, ৪,৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য রাজিয়া সুলতানা, ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম, ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. আসাদুল ইসলাম, ৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. আশরাফুল, ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. তালিমুল ইসলাম এবং ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. মহিদুল ইসলাম।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের এল.ডি.এসপির প্রকল্প মেম্বারগণকে না জানিয়ে ইচ্ছামতো প্রকল্প দেওয়া হয়। লিখিত অভিযোগে ছয়জন জানান, তাদের না জানিয়ে চেয়ারম্যন বিভিন্ন কার্যক্রম নিজের ইচ্ছা মতো পরিচালনা করে, তারা অবহেলিত। অভিযোগের মোট ১২টি পয়েন্টে উল্লেখ করা হয়, ১৫ টাকা চালের কার্ড উপকারভোগীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক জমা নিয়ে চেয়ারম্যানের নিজস্ব আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে।  একারণে গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ১হাজার উপকারভোগী চাল পায়নি।

গত ১বছর চারমাসে ৩০লক্ষ টাকা আদায় করলেও চেয়ারম্যান সেই টাকার হিসাব দেয়নি। এছাড়া ইউপি সদস্যদের মাসিক ৪৪০০ টাকা ভাতা দেয়ার কথা থাকলেও সেটা দেয়নি। ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেন, তাদের কোন সমস্যা সমাধানের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি তার সমাধান না করে গলিগালাজ করেন।

এমনকি যেকোন ইস্যুতে চেয়ারম্যান বলেন, আমি একজন মেম্বার নিয়েই চেয়ারম্যানি করবো বাকিদের দরকার নেই। ইউপি সদস্য মো. তালিমুল ইসলাম জানান, এর আগেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান আমিন জানান, মেম্বররা অনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করে কিন্তু কোন অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, এবারও হবে না। অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। রাজনৈতিক কারণে এ অভিযোগ করা হয়েছে।

ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুল হক জানান, অভিযোগ তদন্তাধীন আছেন। কোন অন্যায়, অনিয়ম পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মে  ০৭, ২০২৩ at ২০:৩৪:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআ/ইর