রাণীশংকৈলে প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ: রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে টানা তিন দিনের প্রখর সূর্য আর তীব্র তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। এ তিন দিনে ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রা উঠানামা করছে। প্রচন্ড গরমে সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষেরা ভিষণ অস্বস্তিতে পড়েছেন। তাপমাত্রা জনিত কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা পড়েছেন চরম দূর্ভোগে। আক্রান্ত হচ্ছেন রোগে।

সরজমিনে দেখা যায়, টানা তিন দিন ধরে প্রখর রোদের কারণে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম বিপাকে। বিশেষ করে তীব্র রোদের তাপে কারণে দিন মজুর, রিকশাচালক, কুলি ও ভ্যানচালকরা কাজে করতে পারছেন না। ফলে তীব্র তাপদাহে অনেকে অলস সময়ও পাড় করতে হচ্ছে তাদেরকে। আবার অনেকেই জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে কাজে বেড়িয়েছেন।

আরো পড়ুন :
> বগুড়ায় প্রধানমন্ত্রী বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারক লিপি প্রদান
> পূবাইলে ফেনসিডিলসহ আটক ২ কারবারি

তীব্র গরমে বয়স্ক, শিশুরা পড়েছে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে। একটু স্বস্তি পেতে ঠান্ডা শরবত,পানি, আইসক্রীম খেয়ে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা সাধারণ মানুষের। এমন প্রচন্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে উপজেলাবাসীর। এতে করে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষজন। একটু শীতলতার জন্য শিশু-কিশোর সকলেই পুকুর-নদী, বিলে ছোটাছুটি করছে।

অসহনীয় প্রচন্ড গরমে এবং শেষ রাতে হিমেল ও কুয়াশায় তাপমাত্রার হেরফেরে গ্রামাঞ্চল কিংবা শহরে শিশু, বয়স্কদের জ্বর-সর্দি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। তাপের কারণে নানা বয়সিদের দেখা দিয়েছে চর্ম রোগও।

তীব্র তাপদাহে কয়েকদিন থেকে উপজেলার পৌরসভাসহ ৮ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজারে দিনের বেলায় মানুষের সমাগম কিছুটা কমেছে। প্রচন্ড গরমে কিছু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে দুপুরে  বন্ধও রাখতে দেখা গেছে। প্রচন্ড তাপদাহ থেকে একটু স্বস্তি পেতে কেউ কেউ গাছের তলে বাঁশের টং বানিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। অনেকে আবার ঘন ঘন ঠান্ডা পানিতে গোসল করছে। কেউ কেউ খাচ্ছে পানি, শরবত  ও আখের রস।

উপজেলার জনসাধারন জানান, গত তিন দিনে প্রচন্ড তাপদাহের কারণে ঠিকমতো কাজে যেতে পাচ্ছি না। গরমে কাজ করতে না পেয়ে আয় কমে গেছে। আগে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করা যেতো। এখন প্রচন্ড গরমের কারণে সারা দিনে ৩০০ টাকা আয় করা মুশকিল হয়ে পড়েছে।

আরও অনেকেই জানান, প্রচন্ড গরম পড়েছে। বাচ্চা নিয়ে খুবই সমস্যায় আছি। ঘরের মধ্যে থাকায় যায়না। গা জ্বলে। জৈনেক বলেন আমার তিন সন্তান গত কয়েকদিন থেকে জ্বর-সর্দি ও কাশিতে ভুগতেছে। জানি না কবে বৃষ্টির দেখা মিলবে। এদিকে বিভিন্ন গাছের ফল যেমন, আম লিচু, কাঁঠাল, পেঁপেঁ ইত্যাদি ফল তাপদাহ ও পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে।

রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ফিরোজ আলম জানান, প্রচন্ড তাপদাহের জন্য উপজেলায় জ্বর-সর্দি ডায়রিয়ায় রোগে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ সুস্থ হয়ে বাড়ী চলে যাচ্ছেন। গরমের জন্য এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ছোট ছোট বাচ্ছারা নিউমোনিয়ায় রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র সকল প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
মে  ০৭, ২০২৩ at ১৬:২৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/হুক/ইর