র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে পাকিস্তান, বাবর আজমের অন্যন্য রেকর্ড

ছবি- সংগৃহীত।

টানা ১১ বছর পাকিস্তান নিউ জিল্যাণ্ডের কাছে পাত্তা পাচ্ছিল না। কিন্তু এবার পাশা উল্টে গেছে।মানে নিউ জিল্যাণ্ড দীর্ঘ দিন পর পাকিস্তান সফরে এসে ওয়ান্ডে সিরিজ তো হেরে বরং এখন হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়াতে পারবে কিন্তু সে প্রশ্ন সামনে আসছে। কারণ ইতোমধ্যে টানা চার ম্যার হেরেছে কিউইরা।

গতকাল শু্ক্রবার ৪র্থ ম্যাচে পাকিস্তান একাধিক পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজালেও পরিবর্তন ছিল না খেলার ধাঁচে, পরিবর্তন দেখা দিলো না ম্যাচের ফলাফলেও। ১১ বছর পর নিউ জিল্যাণ্ডের বিপক্ষে টানা চার ম্যাচ জিললো বাবর আজমের পাকিস্তান। এদিন সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলার অহামিকাও পেয়ে বসেনি পাকিস্তানকে। বাবর আজমের রেকর্ড গড়া শতকে এবার তারা কিউইদের হারিয়েছে ১০২ রানের বড় ব্যবধানে। এটি পাকিস্তান অধিনায়ক তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ১৮তম সেঞ্চুরি। শুক্রবারের এ জয়ে আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানও দখলে নিয়েছে পাকিস্তান।

আরো পড়ুন :
> ধুনটে শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যা!
> মণিপুরের মনিপুর জ্বলছে : সহিংসতায় নিহত ১১

এর আগে পাকিস্তানের দেয়া ৩৩৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও ৩৫ ওভারে ২০০ রান তুলে ফেলে নিউজিল্যান্ড। ফলে পরের ১৫ ওভারে তাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৩৫ রান, হাতে ছিল ৬ উইকেট। আধুনিক ক্রিকেটে যা সহজাত লক্ষ্য বলা যায়। তবে এই লক্ষ্যই বড় কঠিন হয়ে উঠে তাদের জন্যে। ১৩৫ তো বহুদূর, শুধু ৩৫ রানও যোগ করতে পারেনি তারা, পাকিস্তানী বোলারদের তোপের মুখে ৩২ রান তুলতেই শেষ ৬ উইকেট হারায় কিউইরা। এর এতে এখন হোয়াইটওয়াশের লজ্জার সামনে কিউইরা।

এদিকে টানা তিন জয়ে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলায় আজ করাচিতে পাকিস্তান মাঠে নামে একাদশে পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে। তবে ছিলেন প্রথম দুই ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ফখর জামান। এদিন ওপেনার শান মাসুদ খেলতে থাকেন নিজের শান অনুযায়ী। বাবর আজমের সাথে ৫০ রানের জুটি ভেঙে যখন ফেরেন তিনি, নামের পাশে তখন ৫৫ বলে ৪৪ রান।

এরই মাঝে বাবর গড়েন অনবদ্য এক কীর্তি। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলাকে পেছনে ফেলে ইতিহাসের দ্রুততম ব্যাটার হিসেনে ওয়ানডেতে ৫ হাজার সংগ্রাহক বনে যান তিনি। মাত্র ৯৭ ইনিংসে ৫ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ভেঙে দেন হাশিম আমলার রেকর্ডটি। পাকিস্তানের ১৪তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে পাঁচ হাজার রানের গণ্ডি পেরিয়েছেন বাবর।

এদিকে শান ফেরায় দেখা মেলে বিখ্যাত বাবর-রিজওয়ান জুটি। তবে এর আগেই তবে রিজওয়ান রান আউট হয়ে যাওয়ায় তা বড় হয়নি। ৪২ রানের জুটি ভাঙে ২৪ রান করে রিজওয়ান ফিরলে। তবে তিন অঙ্কের ঘর ছাড়ায় চতুর্থ উইকেট জুটি। যেখানে আগা সালমান বাবরের সঙ্গী। দু’জনেই তুলে নেন অর্ধশতক।

ক্যারিয়ার সেরা ৪৬ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে সালমান বিদায় নেন। ফলে ভাঙে বাবরের সাথে তার ১০২ বলে দু’জনের ১০৭ রানের জুটি। এরপর ইফতেখার আহমেদকে নিয়ে বাবর যোগ করেন ৩৬ বলে ৪১ রান। এই সময় তুলে নেন নিজের ১৮তম ওয়ানডে শতকটাও। এর এক বল পরই ২২ বলে ২৮ করে আউট হন ইফতেখার।

৪৮তম ওভারের শেষ বলে ফেরেন বাবর আজমও, আউট হবার আগে করেন ১১৭ বলে ১০৭ রান। বাকি সময়টায় ঝড় তুলেন হারিস রউফ ও শাহিন শাহ আফ্রিদি। শেষ দুই ওভারে ৩৮ রান যোগ করেন দু’জনে। এর সুবাদে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। হারিস ৮ বলে ১৭ ও শাহিন অপরাজিত থাকেন ৭ বলে ২৩ রানে। কিউইদের হয়ে ৩ উইকেট নেন ম্যাট হ্যানরি।

রান তাড়া করতে নেমে দলীয় রান ৫০ পেরোনোর আগেই কিউইদের দুই ওপেনারই ফেরে সাজঘরে। টম ব্লান্ডেল ২৩ এবং উইল ইয়ং আউট হন ১৫ রানে। তবে এরপর ডেরিয়েল মিচেল ও টম লাথাম মিলে ঘুরে দাঁড় করান দলকে, যোগ করেন আরো ৮৩ রান। ৪৮ বলে ৩৪ রান করে আউট হন মিচেল। তবে অভাব বুঝতে দেননি চাপম্যান। লাথামের সঙ্গী হন তিনি।

এই জুটিতে দ্রুত রান বাড়তে থাকে কিউইদের। বিশেষ করে হাত খুলে খেলতে থাকেন চাপম্যান। তবে ৩৩.১ ওভারে টম লাথাম ৭৬ বলে ৬০ রান করে শাহিন আফ্রিদির শিকার হন। ফলে ভাঙে দুজনের ৪৫ বলে ৫৫ রানে জুটি। তবে দলকে ৩৫ ওভারেই ২০০ রানে পৌঁছে দেন চাপম্যান।

কিন্তু এরপরই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে কিউইদের ইনিংস। ৩৩ রানের ভেতর ৬ উইকেট হারায় তারা। যেখানে নেতৃত্ব দেন উসামা মির। ৩৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ফেরান ৩৩ বলে ৪৬ রান করে চাপ হয়ে উঠা চাপম্যানকে। এরপর পর পর দুই ওভারে ইশ সোধি (৯) ও ম্যাট হেনরিকেও (৫) শিকার করেন তিনি।

মাঝের সময়ে জিমি নিশামকে হারিস রউফ ও ম্যাকখুনকে আউট করেন ওয়াসিম জুনিয়র। কিউইদের শেষ উইকেটটাও তুলে নেন ওয়াসিম। ৪৩.৪ ওভারে ২৩২ রানেই অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। ১০২ রানের বড় জয় পায় পাকিস্তান।

সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে এসেও ভাগ্য বদলাতে পারল না নিউজিল্যান্ড। আগামীকাল একই মাঠে সিরিজের শেষ ওয়ানডে খেলতে নামবে উভয় দল।

মে  ০৬, ২০২৩ at ১৩:১৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর