দৌলতপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুই বোনের মৃত্যু

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া দুই বোনের মরদেহ। ছবি: দেশ দর্পণ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সোনিয়া (৮) ও সর্মিলা (২) নামে আপন দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। একটি বাড়ির রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে পাশাপাশি দুই বাড়ির চারটি ঘর সম্পূর্ণ ভস্মীভুত হয়। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাথমিক সহায়তা করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে দৌলতপুর উপজেলার রিফায়েতপুর ইউনিয়নের দিঘলকান্দী গ্রামে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দিঘলকান্দী গ্রামের দুখু মণ্ডলের স্ত্রী রান্না করছিলেন। রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় তাদের দুই শিশুকন্যা ঘরের ভেতর ঘুমিয়ে ছিল। শিশু দুটি আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আপ্রাণ চেষ্টা করেও আগুন নেভাতে ব্যর্থ হন। পুরো বাড়িতে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। এই আগুনে প্রতিবেশী ওসমান আলীর বাড়িও পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে দুই বাড়ির চারটি ঘর সম্পূর্ণরূপে ভস্মীভূত হয়।

খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী মিরপুর উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে প্রায় এক ঘণ্টা প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা বসতঘরের ভেতর থেকে আপন দুই বোন সোনিয়া ও সর্মিলার বীভৎস হয়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করেন। দুপুরের পর নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিল তারা। ঘুমের মাঝেই আগুনে পুড়ে অঙ্গার হতে হলো শিশু দুটিকে। এদিকে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে দুই কন্যাশিশুর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

দিঘলকান্দী ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই জামাল আহমেদ জানান, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী দুই শিশুর মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

রিফাইতপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বাবলু বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শোনার পর তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাটি খুবই হৃদয় বিদারক। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্টদের অবগত করেছি। দুই বোনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মজিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, শিশু দুটি ঘুমাচ্ছিল আর তাদের মা রান্না করছিলেন। এমন সময় রান্না ঘর থেকে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। পরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বসতঘরে। এতে ঘুমন্ত দুই শিশুর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। আগুনে এক প্রতিবেশীর ঘরও পুড়ে গেছে।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওবায়দুল্লাহ খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক তিনি ক্ষতিগ্রস্ত দুই পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তাদের সরকারি সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও।