পুরান ছেঁড়া কাপড় দিয়া ঈদ কইরমো, বিরামপুরের মাহফুজা বেগম

ঈদ হামার জইন্যে নোয়ায়। হারা ঈদের আশাও করো না। কিন্তুক ছোলগুলার জইন্যে মনটা কাঁন্দে।’ কথাগুলো কষ্টের সঙ্গে বলছিলেন ৪০ বছর বয়সী মাহফুজা বেগম।

মাহফুজা বেগম মৃত বাবুর স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার পলিপ্রায়াগপুর ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামে স্বামীর রেখে যাওয়া শেষ সম্বল ছোট্ট একটা বেড়ার ঘরে থাকেন ।  মৃত স্বামী দিনমজুরি কাজ করে সংসার চালাতেন কোনো রকম করে সংসার চলত, টাকার অভাবে স্বামীর চিকিৎসা করতে না পেরে ছোট ছেলে-মেয়েকে রেখে মারা যায় মাহফুজা বেগমের স্বামী ।

আরো পড়ুন :
> জঙ্গি নয় দুষ্টু পোলাপান চিরকুট লিখেছে ডিএমপি কমিশনার
> বাস-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষ চট্টগ্রামে নিহত ৫

মাহফুজা বেগম বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়া ছয় মাস হয়ে গেল, তার রেখে যাওয়া শুধু বাড়ি আর ছেলে মেয়ে ছাড়া আর কিছুই ছিল না । মানুষের বাড়ি থেকে  চাল এনে স্বামীর চল্লিশা করিছো । মানুষের বাড়ি কাজ করে যে টাকা পাই সেই টাকা দিয়ে চাল, ডাল কিনতেই টাকা শেষ হয়ে যায় । একবেলা খেলে আর একবেলা খাওন থাকে না । একদিন কাজে যেতে না পারলে অনাহারে অর্ধাহারে কাটাতে হয় । দেড় মাস হয়ে গেল কোনো কাজ নাই, যতক্ষণে মানুষ চাল, ডাল দেয় ওতক্ষণে খাওন হয় । অপেক্ষার প্রহর গুনছি মানুষের ভুট্টা ভাঙ্গানোর কাজের জন্য । ছেলে টা এতিমখানায় থাকে তাকে একটা পাঞ্জাবি কিনে দেওয়া পারোছোনা ।

পুরান ছেঁড়া কাপড় দিয়া ঈদ কইরমো’ ঈদের দিন সেমাই রান্না করমু, সে ব্যবস্থাও এখনো হয়নি । ঈদ আসছে তাই সংসারে তিন ছেলে-মেয়ে নতুন কাপড় কেনার বায়না ধরেছে । ছেলে-মেয়ে নতুন জামা-কাপড়ের জন্য কাঁদছে, কেঁদে কেঁদে বললেন মাহফুজা ।

এপ্রিল ১৩, ২০২৩ at ১৩:২৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/ আক/নূই/ ইর