পোশাকের দাম বাড়লেও কমেনি ক্রেতা জমে উঠেছে ঈদ বাজার

পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে জমে উঠেছে কুড়িগ্রামের চিলমারীর কাপড়ের বাজার গুলো । প্রতিটি পোষাকের দাম বাড়লেও আশানুরুপ বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাপড় ব্যবসায়ীরা । গত বছরের ঈদ বাজারের থেকে এ বছর বাজারে আগাম বাড়তে শুরু করেছে ক্রেতার সংখ্যা । গেলো ঈদ বাজারের তুলনায় এ বছর বেচা বিক্রিও বেশি হবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা । তবে কাপড় কিনতে আশা ক্রেতারা বলছেন, প্রতিটি কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে । ঈদকে ঘিরে কাপড় কিনতে হবে বলেই চড়া মূল্যে কাপড় সংগ্রহ করছেন তারা ।

আরো পড়ুন :
> ধর্মীয় শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে হোসনে আরা তালিমুল কোরআন নূরানী হাফেজিয়া কওমি মাদ্রাসা
> অন টিভি নিউজের চেয়ারম্যানের ছেলের মৃত্যু

উপজেলা সদরের বড় কাপড়ের বাজার হচ্ছে থানাহাট বাজার । এ বাজারে প্রায় অর্ধশতাধিক কাপড়ের দোকান রয়েছে । আশপাশের কয়েক স্থানে কাপড়ের দোকান থাকলেও সেসব স্থানে জনসমাগম কম হয় । এর কারণ হিসেবে থানাহাট বাজারে দোকানে সংখ্যা বেশি হওয়ায় ক্রেতারা তাদের পছন্দ মতো পোষাক কিনতে পারেন । তাই বলা যায় থানাহাট বাজারটি এ উপজেলার মানুষের কেন্দ্রীয় কাপড় বাজার ।

গতকাল মঙ্গলবার থানাহাট বাজারে গেলে সাধারণ ক্রেতার সমাগম চোখে পড়ার মত অবস্থা দেখা যায় । প্রায় সব দোকনের ফটকে ভীড় জমতে শুরু করেছে । ঈদ যত সন্নিকটে আসছে ক্রেতার সংখ্যা ততই বাড়তে শুরু করেছে । বাজারে পুরুষের তুলনায় নারী ও শিশুর সংখ্যা বেশি । ব্যস্ত সময় পাড় করতে দেখা গেছে দোকান মালিক ও বিক্রয়কর্মীদের । সকাল ১০টার পর দোকান পাট খুলে রাত ১২টা ১টা পর্যন্ত চলে বেচা বিক্রি ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজান মাসের শুরু দিকে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকলেও তা প্রতিদিন ক্রমান্বয়ে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে । প্রথমের দিকে ক্রেতা শূণ্য অবস্থায় থাকলেও গেলো ১৫ রমজানের পর এর চিত্র একেবারেই আলাদা অবস্থায় দাঁড়িয়েছে । ব্যবসায়ীরা বলছে, চাঁদ রাত পর্যন্ত এখন ক্রেতারা ভীড় করতে থাকবে তাদের পছন্দের কাপড় কিনতে । প্রতিটি কাপড়ের দাম বেড়েছে গড়ে ১০০ থেকে ২০০টাকা । আবার কোন কোন কাপড়ে দাম বেড়েছে ৭০ থেকে ৮০টাকা বলে জানা গেছে ।

ঈদ উপলক্ষে কাপড় কিনতে থানাহাট বাজারে এসেছেন তাহের আলী ও তার স্ত্রী সাথে এসেছে তাদের ছোট একটি মেয়ে । এই দম্পত্তি থানাহাট ইউনিয়নের ডেমনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা । তারা তাদের পছন্দের কাপড় নেড়েচেড়ে দেখেছেন । ছোট মেয়েটির জন্য কিনেছে একটি জামা । এসময় কথা হলে তারা জানান, তাদের মেয়ের আবদার পূরণ করতে ঈদের কেনা কাটা করতে বাজারে এসেছেন । প্রতিটি কাপড়ের দাম বেড়েছে বলে জানান এই দম্পতি । গত ঈদে যে শাড়ি কিনেছেন ৬-৭ শ টাকা মধ্যে এবার তার দাম বেড়ে ২ থেকে ৩ শ টাকা। তারপরেও দ্বিধাহীনভাবে নিজেদের পরিবারের জন্য কাপড় কিনেছে ।

রমনা মডেল ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল হক দুদিন আগে নিজের জন্য পান্জাবী ও একটি শার্ট কিনেছেন । আজ এসেছে মেয়ে ও স্ত্রীর জন্য নতুন কাপড় কিনতে । তিনি বলেন, কাপড় চোপড়ের দাম বেড়েছে । কিন্তু তারপরেও কিনতে হচ্ছে । আয় রোজগার তো বাড়েনি আগের মতই আছে । কিন্তু কাপড়ের দাম ঠিকই বেড়েছে । ঈদের সময় ভীড় জমে সাচ্ছন্দ্যভাবে কাপড় নিতে সমস্যা হয় । তাই ঈদের কয়েকদিন আগেই কাপড় কিনতে আসছি ।

কাপড় বিক্রিতে ব্যস্ত সৌরভ কালেকশনে বিক্রয়কর্মী নাকিব হাসান । তিনি জানান, শুধুমাত্র ঈদের এই সময়টাতে দোকানে থেকে তার চাচাকে সাহায্য করেন । কারণ এমনি সময়ের তুলনায় রমজান মাসে শেষের দিন গুলো ক্রেতার চাপ বেড়ে যায় । দোকানে কর্মী কম হলে ক্রেতাদের পছন্দ মতো কাপড় দেখানোয় ভোগান্তি হয় । তাই এই সময়টাতে তিনি দোকানে কাপড় বিক্রি করেন বলে যোগ করেন তিনি ।

সৌরভ কালেকশনের মালিক ও স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী মো. আক্কাস আলী বলেন, গেলো বছরের তুলনায় এবার ক্রেতার সংখ্যা বেশি । দিন দিন ক্রেতার সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে। আর এবার প্রতিটি কাপড়ের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরেও বেচা কেনা ভালোই হচ্ছে । ঈদের বাজার কে ঘিরে চিলমারীর প্রেক্ষাপটেও প্রতিটি দোকানে গড়ে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার কাপড় বিক্রি হবে বলে তিনি ধারণা করছেন ।

এপ্রিল ১২, ২০২৩ at ১২:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/ আক/ফহ/ ইর