সংবিধানের সাংঘর্ষিক বিষয় বাদ দিতে কমিটি গঠনের প্রস্তাব হাসানুল হক ইনুর

রাষ্ট্রধর্ম ইসলামসহ সংবিধানের মূল কাঠামোর সঙ্গে যা যা সাংঘর্ষিক সেগুলো বাদ দিতে পর্যালোচনা কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এর জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান করে একটি বিশেষ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন।

শনিবার (৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী ‍উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪৭ বিধিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবের উপর আলোচনা অংশ নিয়ে হাসানুল হক ইনু এ প্রস্তাব দেন । এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়া সরকার গঠন করলেও শেখ হাসিনা বিরোধীদলের নেতা হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিএনপিকে বাধ্য করেছিলেন সংসদীয় পদ্ধতিতে প্রত্যাবর্তন করতে। শেখ হাসিনাই দ্বাদশ সংশোধনীর কারিগর, ৭৫-এ হারিয়ে যাওয়া সংসদের সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনার কারিগর। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রজ্ঞা, দৃঢ়তা প্রকাশ পায় ৯১ সালেই।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের কোনো লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণ, জাত-পাত নাই। স্বয়ং মহানবী মদিনা সনদে কোনো রাষ্ট্রীয় দলিলে বিসমিল্লাহ ব্যবহার করেননি। অপর দিকে, ধর্মকে উনি কোনো সময়ই ব্যবহার করে নাই। জেনারেল জিয়া ও জেনারেল এরশাদ সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম সংযোজন করেছে। সংবিধানের মূল কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থায় নিয়ে গেছেন। এই সাংঘর্ষিক অবস্থা আমাদের বিব্রত করছে। সংবিধানের এই সাংঘর্ষিক অবস্থা থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য এবং সংবিধানর মূল কাঠামোর সঙ্গে যা যা সাংঘর্ষিক সব বিলোপের জন্য বিবেচনা করা উচিত।
আরো পড়ুন :
> বঙ্গবন্ধুই প্রথম স্বাধীনতা চেয়েছেন: ইমাজউদ্দিন
> সাংবাদিক মাহবুব উল ইসলাম আলমগীরের ১১ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলার প্রশংসা করে হাসানুল হক ইনু বলেন, আমাদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য দরকার আরো সম্পূরক আইন-কানুন, আরো অংশগ্রহণমূলক আরো গণতান্ত্রিক সংসদীয় ব্যবস্থা। প্রশাসনের উপর আরো নজরদারি ব্যবস্থা। আরো অংশগ্রহণমুলক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে রাজনীতির মাঠে যে প্রস্তাবগুলো আলোচনায় আসে সেগুলো আমলে নিয়ে, বিবেচনায় নিয়ে সংবিধান সংশোধন করার একটি সংসদীয় কমিটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করা উচিত।

যে আলোচনাগুলো মাঠে আছে সেগুলো কি প্রচলিত পদ্ধতির নির্বাচনী ব্যবস্থা পাশাপাশি দলভিত্তিতে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি, সংসদের একটি শ্রেণী-পেশা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ স্থানীয় সরকারদের নিয়ে একটি উচ্চ কক্ষ গঠন করা। কেবল মাত্র অনাস্থা বিল, অর্থ বিল, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা বিষয় বাদ দিয়ে ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে এমপিদেরকে আরও আইন তৈরিতে ক্ষমতা প্রদান, স্থায়ী কমিটিকে উন্মুক্ত করা, সকরল স্থানীয় সরকারে নির্বাচিতদের পূর্ণ কর্তত্ব প্রতিষ্ঠা করা, সংবিধানের ৫৯, ৬০ অনুচ্ছেদকে সংশোধন করা। রাষ্ট্রের কোনো লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণ, জাতপাত নাই। স্বয়ং মহানবী মদিনা সনদে কোনো রাষ্ট্রীয় দলিলে বিসমিল্লাহ ব্যবহার করে নাই। অপরদিকে ধর্মকে উনি কোনো সময়ই ব্যবহার করেন নাই।

জেনারেল জিয়া এবং এরশাদ সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম সংযোজন করেছে। সংবিধানের মূল কাঠামোর সঙ্গে সংঘর্ষিক অবস্থায় নিয়ে গিয়েছেন। এই সাংঘষিক অস্থা আমাদের বিব্রত করছে। সংবিধানের এই সাংঘর্ষিক অবস্থা থেকে রেহাই দেবার জন্য এবং সংবিধানর মুল কাঠামোর সঙ্গে যা যা সাংঘর্ষিক সব বিলোপ সাধন করার বিবেচনা করতে হবে। এই সব প্রস্তাবসহ যে সব প্রস্তাব বাজারে আছে যেগুলো আমলে নিয়ে আমি সংবিধান পর্যালোচনা করা এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাকে প্রধান করে জাতীয় সংসদের প্রতিনিধিশীল সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির সমন্বয়ে সংবিধান পর্যালোচনার জন্য সংসদের বিশেষ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করছি ।

এপ্রিল ০৮, ২০২৩ at ১৪:১০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/ আক/দেপ্র/ ইর