প্রতিষ্ঠার এক যুগ পেরিয়েছে এখনো ভাড়া ভবনেই চলছে পৌরসভার কার্যক্রম

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর ১২ বছর পেরিয়েছে। রয়েছে নিজস্ব জায়গা, আছে ভবন নির্মাণের বরাদ্দও। তবুও এখন পর্যন্ত হয়নি নিজস্ব কোনো ভবন। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ভবন ভাড়া নিয়েই চলছে পৌরসভার কার্যক্রম।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নিচতলায় পৌর মেয়রের কক্ষ, কাউন্সিলরদের কক্ষ, প্রকৌশলী শাখা, হিসাব শাখা, কর শাখা আর দ্বিতীয় তলায় লাইসেন্স শাখা, প্যানেল মেয়রের কক্ষ, সাধারণ শাখা ও স্বাস্থ্য শাখা। মেয়রের কক্ষসহ প্রতিটি কক্ষই খুব ছোট। এ কারণে সেবা নিতে আসা লোকজন একসঙ্গে কক্ষের ভেতর যেতে পারছেন না।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সাবেক মেয়র সিরাজুল ইসলাম বুলু পৌর ভবনের জন্য জায়গা কিনেছেন। একই দাগে তিনি নিজের নামেও জায়গা কিনেছেন। ওই জায়গায় যোগাযোগব্যবস্থা অনুপযোগী হওয়ায় পৌর ভবন নির্মাণ হয়নি। বর্তমান পরিষদ নতুন জায়গা ক্রয় করে সেখানে পৌর ভবন নির্মাণের কথা ভাবছে।

ক্ষেতলাল উপজেলা সদরকে নিয়ে ২০১০ সালে পৌরসভা ঘোষণা করে সরকার। ২০১১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন মিঞাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি বদলির পর শাহানা আক্তার জাহান প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালের ৮ জুলাই বিএনপি সমর্থিত নির্বাচিত মেয়র আবদুল মান্নান মোল্লা দায়িত্ব নেন। ২০১৭ সালে তার মেয়াদ শেষ হয়।

২০১৭ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বুলু মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ২০১৮ সালে অক্টোবর মাসে ক্ষেতলাল পৌরসভার নামে ক্ষেতলাল সদর মৌজার ফকিরপাড়া মহল্লায় ৫৫ শতক জায়গা ক্রয় করেন। ২০১৯ সালে সেখানে ভবন নির্মাণের জন্য সাড়ে তিন কোটি টাকায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরে সেটি বাতিল করে আবারও দরপত্র আহ্বান করা হলে সেটিও বাতিল হয়।

এদিকে ২০২২ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন। এই মেয়রের পরিষদ ওই জায়গাতে চলাচলের রাস্তা না থাকাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে পৌরসভার ভবন নির্মাণে আপত্তি জানান।

ক্ষেতলাল পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খলিলুর রহমান কাজী বলেন, পৌর ভবন নির্মাণের জন্য যে জায়গা কেনা হয়েছে, সেখানে জনসাধারণের চলাচলের সমস্যা রয়েছে। রাস্তার অবস্থা বেহাল। তাই ভাড়া ভবনেই দাফতরিক কাজ করা হচ্ছে। এই স্বল্প পরিসরের জায়গায় কাজ করতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

আরো পড়ুন :
> দক্ষিণখান থেকে অপহরণকারী চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার
> বান্দরবানে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের গোলাগুলি, নিহত ৮

পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আফতাব হোসেন বলেন, সাবেক মেয়র সিরাজুল ইসলাম বুলুর সময় পৌর ভবনের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। সেই দরপত্রে একজন ঠিকাদার অংশ নিয়েছিলেন। পরে মন্ত্রণালয় দরপত্র বাতিল করে। পরে আবারও দরপত্র আহ্বান করা হলে মন্ত্রণালয় সেটিও বাতিল করে। তৃতীয় দফায় আবারও দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার চূড়ান্ত করা হয়েছে। যে কোনো সময় কার্যাদেশ দিয়ে ভবনের কাজ শুরু করা যাবে। তবে জায়গাতে চলাচল নিয়ে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

ক্ষেতলাল পৌর মেয়র সিরাজুল ইসলাম সরদার বলেন, সাবেক মেয়র পৌরসভার জন্য যে জায়গা ক্রয় করেছেন তা অনুপযোগী। ওই জমিতে আসা-যাওয়ার রাস্তা নেই। জমির সামনে ও পাশেও ডোবা আছে। তাই সেখানে ভবন নির্মাণ সম্ভব নয়। এ জন্য ভালো জায়গা দেখা হচ্ছে। নতুন জায়গা কেনার পর সেখানে পৌর ভবন নির্মাণ করা হবে।

এপ্রিল ০৭, ২০২৩ at ১৬:৪৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/শাই/সুরা