গুচ্ছ পরীক্ষা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে ইবি ও ইউজিসি

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষকদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) মুখোমুখি অবস্থানে আছে। মুখোমুখি অবস্থানের সমাধান জানা নেই ইবি উপাচার্যের। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চায় আগেরমত নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে। নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য গত রবিবার গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় একাডেমিক কাউন্সিল।

তবে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে ইবিকে গুচ্ছে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। গুচ্ছের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রীর বক্তব্য হলো, যেসকল বিশ্ববিদ্যালয় গত দুই বছরে গুচ্ছ পদ্ধতিতে যুক্ত ছিল, তাঁদের সকলকে চলতি বছরও গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রীর বার্তা পেয়ে গুচ্ছ পরীক্ষা ত্রুটিমুক্ত ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গত সোমবার সভা করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেয়।

সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে, তাই বলে এখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছে না থাকার বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রতি ইউজিসির নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ব্যত্যয় বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে অনড় রয়েছেন ইবির শিক্ষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে আমরা গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হলে আবার একাডেমিক কাউন্সিল ডেকে গুচ্ছে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়ে যেতে হবে। উপাচার্য ছুটি থেকে এসে ভর্তি পরীক্ষার মিটিং ডাকার কথা। মিটিংয়ে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলবো। বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব আইনে চলে। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ের সিদ্ধান্তগুলো ইউজিসির মিটিংয়ে জানিয়েছি। তাঁরা বলেছে, এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। এটি আমি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদককে জানাবো। যেভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবে সব কার্যক্রম কিন্তু তাঁরাই নিবে। সেইক্ষেত্রে নিশ্চয়ই দুইপক্ষ একটা সমাধানে আসবে।

আরো পড়ুন :
> ক্ষেতলালে গণহত্যা দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
> শিবগঞ্জে গণহত্যা দিবসে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির সদস্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, পরস্পরবিরোধী এই অবস্থান সমাধান করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষর। ইউজিসি শুধু শিক্ষা মন্ত্রীর বার্তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে। তাঁরা আগে কেনো গুচ্ছে এসেছিলো? এখন আবার বের হতে চায় কেন? যেই ভোগান্তির কথা বলে তাঁরা বের হতে চায়, সেই ভোগান্তির দায়ভার তাঁদেরই। কেউ বের হতে চাইলে বের হতে পারবে। ইউজিসি কাউকে বাধা দিবে না।

উল্লেখ্য, এর আগেও শিক্ষক সমিতি গুচ্ছের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন চাপে এ দাবি থেকে সরে আসেন।

মার্চ ২৫, ২০২৩ at ১৫:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/নাহো/সুরা