নিত্যপণ্যের বাজারে উত্তাপ, বেগুন, শসা ও লেবুর দাম বেড়েছে দ্বিগুণ

ছবি- সংগৃহীত।

সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভোক্তা অধিকার অভিযান চালায়। অনেককে জরিমানা করা হয়। কিন্তু বাজার পরিস্থিতি আগের চেয়েও উত্তপ্ত। সব কিছুর দাম বেশি। সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে। জানা যায়, রমজানের শুরুতেই নিত্যপণ্যের বাজারে ছড়িয়ে পড়ছে এর উত্তাপ। প্রায় প্রতিটি জিনিসপত্রের দামই বেড়েছে। তবে ইফতার আইটেম সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলোর দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। কাঁচাবাজারে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে। এর মধ্যে ইফতার আইটেম হিসেবে বেগুন, শসা ও লেবুর দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

রোজার প্রথম দিন শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার সূত্রে জানা যায়, ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকায়। শসার কেজি মানভেদে ৮০-১০০ টাকা। যা কদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৪০-৬০ টাকা কেজি দরে। ছোট সাইজের লেবুর হালি প্রতি ২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা। বড় সাইজের লেবু পিসপ্রতি ১০ টাকা বেডে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। এদিকে মাছের দামও কেজিতে ২০-৫০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রমজানে যেসব পণ্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি সেসব পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়লো রাজধানীর বাজারে। এখনও নৈরাজ্য চলছে চিনির দরে। খেজুরের দামও গেলো বছরের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ের বাড়তি চাহিদার প্রায় সব পণ্যের দামই এখন বেশ চড়া। পুরো মাস এই বেসামাল বাজার পরিস্থিতি কিভাবে সামলাবে, সে আশঙ্কায় অস্বস্তিতে ভোক্তারা।

বাজারগুলোতে দেখা যায়, আলুর দাম কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৪০ টাকা, যা গতকাল বৃহস্পতিবারও ছিল ৩৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচের কেজি ২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৭০ টাকা। ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজন ১৪০ টাকা করে, যা ছিল ১২০ টাকা। আর দেশি মুরগির ডিমের ডজন ১৯০-২০০ টাকা।

প্রতি কেজি ছোলার দাম ৯০-৯৫ টাকা। সপ্তাহখানেক আগেও ছোলার কেজি ছিল ৮০ টাকা। এছাড়াও অন্যান্য ডাল কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অ্যাংকার ডাল কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, মাসকলাইয়ের ডাল ১৫০ টাকা, মুগডাল ১১০ টাকা।

মানভেদে বেসন বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১২০ টাকায়। বুটের ডালের বেসন ৯৫ টাকা ও মুগ ডালের বেসন কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। সবধরনের বেসনের দাম বেড়েছে ২০-২৫ টাকা পর্যন্ত।

সাধারণ সবজির দামও বাড়তি। শিম ৪০-৫০ টাকা কেজি, করলা ১০০-১২০ টাকা, আকারভেদে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০, পটল ৮০, ঢেঁড়স ১০০, কচুর লতি ১০০, পেঁপে ৩০-৪০, বরবটি ১২০ ও ধুন্দুল ৫০-৬০ টাকা কেজি। পাতা কপি ৩০-৪০ টাকা পিস। বাজার ঘুরে আরও দেখা গেছে, নতুন করে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দামও বেড়ে গেছে।

পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং দেশি আদা কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। চীন থেকে আমদানি করা আদা ২৮০ টাকা কেজি। বড় আলুর দামও কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে এখন ২৫ টাকা। নাগালের বাইরেই রয়েছে গরুর মাংসের দাম। গরু বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় আর আর খাসির মাংসের কেজি ১০৫০-১১০০ টাকা।

আরো পড়ুন :
> এক হালি লেবুর দাম ১০০ টাকা
> দেশে প্রতিদিন যক্ষ্মায় ১০০ জনের মৃত্যু

বড় রসুনের কেজি ১৩০-১৪০ টাকা। ছোট রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা, আদার কেজি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, চায়না আদা ২২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে যা রসুন ও আদার দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ টাকা।

খোলা চিনির কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, খোলা আটা ৬০ টাকা। সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৭ টাকা, লবণের কেজি ৩৮-৪০ টাকা। এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ-রসুনের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘দু-তিন দিন ধরে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। খুচরা বাজারে মানভেদে পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি, যা আগে বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। দেশি রসুন প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকা, যা আগে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। দেশি আদা ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি, যা দু-তিন দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়। চীনা আদা ২৮০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ২৫০ টাকা।

মার্চ ২৪, ২০২৩ at ১৮:১৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/যাদি/সুরা