নাঈমের সেঞ্চুরিতে মোহামেডানকে হারিয়ে সবার উপরে আবাহনী

ওপেনারদের উড়ন্ত সূচনায় মোহামেডানরা ম্যাচের শুরুতেই ৩০০ ছুঁয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। যাইহোক, ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার কারণে এটি শেষ পর্যন্ত ২৪০ রানে থেমে যায়। যা যাই হোক পর্যাপ্ত নয়। টার্গেট করে প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করে আবাহনী। ওপেনার নাঈম শেখের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে আবাহনী ৩৫ ওভারের আগেই ২৩৬ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। টানা ৩ জয়ে তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছে মোসাদ্দেক হোসেনের দল।

এদিন ২৩৬ রানের টার্গেটে নামার পর এনামুল হক বিজয়কে হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৩ রান তুলেছে আবাহনী। এই ওপেনার ১৮ বলে ১৭ রান করে রুয়েল মিয়ার উইকেট শিকার করেন। নাঈম শেখের সাথে তিন রানে পড়ে যাওয়া মাহমুদুল হাসানকে হারালেও জয় স্কোরবোর্ডে নিয়মিত রান যোগ করতে থাকেন।

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৮ উইকেট ২৩৫ রান করে মোহামেডান। জবাবে নাঈম শেখের অপরাজিত ১১০ রানের সুবাদে ৩৪.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আবাহনী। আবাহনীর বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু এনে দেন মোহামেডানের দুই ওপেনার মাহেদুল অঙ্কন এবং ইমরুল কায়েস। দলীয় ১৩৭ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৬৮ রানে সাজঘরে ফেরেন মোহামেডানের অধিনায়ক ইমরুল। এরপর ব্যক্তিগত ৭০ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন অঙ্কন। দুই ওপেনার দ্রুত বিদায় নিলে মোহামেডান শিবিরে ছন্দপতন ঘটে।

ওয়ানডাউনে নামা সৌম্য সরকার ফিরে যান মাত্র ১ রানে। এদিন ব্যাট হাতে দাপট দেখাতে পারেননি অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। মাত্র ৩ রান করে তিনিও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া মোহামেডানকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন অনুতাপ মজুমদার।

আরো পড়ুন :
> সিসিইউতে ভর্তি অভিনেত্রী উর্মিলা
> ইউক্রেনে রুশ ড্রোন হামলায় নিহত ৮

তবে ব্যক্তিগত ৩০ রানে তিনি বিদায় নিলে আর কেউ ইনিংস বড় করতে পারেনি। শেষদিকে আরিফুল হকের অপরাজিত ৩৭ রানের সুবাদে ২৩৫ রানের স্বল্প পুঁজি পায় মোহামেডান। রান পাননি শুভাগত হোম, কামরুল ইসলাম রাব্বি এবং শফিউল রুবেল। আবাহনীর হয়ে সাইফউদ্দিন ১০ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। সাইফউদ্দিন ছাড়াও তানভীর ইসলাম এবং তানজিম ইসলাম সাকিব ২টি করে উইকেট শিকার করেন।

২৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেন আবাহনীর দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় এবং নাঈম শেখ। তবে ব্যক্তিগত ১৭ রানের মাথায় রুয়েল মিয়ার বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে যান বিজয়। একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং চালিয়ে যান নাঈম। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন মাহমুদুল হাসান জয়। ব্যক্তিগত ২৪ রানে থাকা অবস্থায় বিদায় নেন জয়। এরপর দ্রুত বিদায় নেন ইন্দ্রজিত।

এরপর জাতীয় দল থেকে সদ্য বাদ পড়া আফিফ হোসেনের সঙ্গে জুটি গড়েন নাঈম। ব্যাট হাতে দাপট দেখান আফিফ। অর্ধশতক থেকে মাত্র ১ রান দূরে থাকতে ৪৯ রানে বিদায় নেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। পরবর্তীতে অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে বাকি পথ পাড়ি দেন নাঈম। ৩৪.৩ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আবাহনী। মোসাদ্দেক অপরাজিত থাকেন ২৫ রান করে। আর ৮৬ বলে ১১০ রানে অপরাজিত থাকেন নাঈম। ঝড়ো সেঞ্চুরির পুরস্কার হিসেবে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন তিনি। মোহামেডানের হয়ে সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, এনামুল হক জুনিয়ার এবং রুয়েল মিয়া ১টি করে উইকেট নেন।

লিগের অপর ম্যাচে বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে মার্শাল আইয়ুবের সেঞ্চুরি এবং ইলিয়াস সানির পাঁচ উইকেটে ঢাকা লেপার্ডসকে উড়িয়ে দেয় অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেটে ২৫৮ তোলে অগ্রণী ব্যাংক। দলীয় ২০ রানের মাথায় ওপেনার আজমির আহমেদের উইকেট হারায় দলটি। ১৪ বলে ৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।

এরপর দলীয় ৪৪ রানে ফিরে যান মোহাম্মদ ফাহিম। ১৯ বলে ১৭ রান করেন এই ব্যাটার। এরপর সাদমা ইসলামের সঙ্গে ১০১ রানের জুটি গড়েন মার্শাল আইয়ুব। এই জুটিতে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাদমান। ১০৪ বলে ৭৩ রান করে সাদমান বিদায় নিলেও সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মার্শাল। এর মাঝে আজিম কাজিও বিদায় নেন। ১০৮ বলে খেলা ১০০ রানের এই ইনিংসে মার্শালের ছিল তিনটি চার ও দুটি ছক্কার মার। তার সেঞ্চুরির সুবাদে ২৫৮ রান তুলতে পারে অগ্রণী ব্যাংক। লেপার্ডসের বোলারদের মধ্যে ৪৫ রান খরচায় তিন উইকেট নেন সালাউদ্দিন। দুটি করে উইকেট নেন সোহেল এবং চতুরাঙ্গা।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩৬.৩ ওভারে মাত্র ১৩৭ রানে অলআউট হয় লেপার্ডস। লেপার্ডসের হয়ে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩১ রান আসে মইন খানের ব্যাট থেকে। এছাড়া মোহাম্মদ সাব্বির করেন ৩৬ বলে ২১ রান। এছাড়া এই ইনিংসে উল্লেখ করার মতো সংগ্রহ করতে পারেননি কেউই। ইলিয়াসের অসাধারণ বোলিংয়ে এদিন দাঁড়াতেই পারেনি দলটি।

দশ ওভারে মাত্র ৩৪ রান খরচায় পাঁচ উইকেট নেন এই স্পিনার। আরেক স্পিনার আরাফাত সানি ২৫ রান খরচায় নেন দুই উইকেট। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন আবু হায়দার রনি এবং মোহাম্মদ শরিফুল্লাহ। দারুণ ব্যাটিংয়ে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন মার্শাল আইয়ুব।

মার্চ ২৩, ২০২৩ at ১০:৫৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভোকা/সুরা