মদনে খননের নামে নদী কেটে খাল তৈরি!

নেত্রকোনার মদনে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চাওয়াই নদী খননের নামে নদী কেটে খাল তৈরি করা হচ্ছে। নদী খননের মাটি নদীর পাড়ে ফেলা হচ্ছে। বর্ষার সময় ওই মাটি পানির স্রোতে ভেসে আবারও নদী ভরাট হয়ে যাবে। কাজের কাজ কিছু না হলেও খননের নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয়ের অভিযোগও উঠেছে।

নেত্রকোনা পাউবো সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে মেসার্স বেলাল কন্সট্রাকশন নামের কোড়িগ্রামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী চাওয়াই নদীর ৪.০০ কিঃমিঃ খননের কাজ বাস্তবায়ন করছে। এই খনন কাজে ১ কোটি ৮১ লাখ ৪৪ হাজার ৭৮৮ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। নদী খননের দরপত্রে ১৮.০০ থেকে ২৫.১৯ ফুট প্রস্থে অবস্থাভেদে গভীরতা ১০ থেকে ১২ ফুট এবং খননের জায়গা থেকে ৩৮ থেকে ৪০ ফুট দূরত্বে মাটি ফেলার কথা রয়েছে। কিন্তু খননের মাটি সঠিক দূরত্বে না ফেলে নদীর পাড়েই রাখা হচ্ছে।

মঙ্গলবার চাওয়াই নদী খনন প্রকল্প সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদী খননের প্রায় এক তৃতীয়াংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে যার মাটি দুই পাড়ে ফেলা হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ার আগে থেকেই পাড়ে রাখা মাটি ধ্বসে পড়ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোবিন্দশ্রী গ্রামের অনেকেই বলেন, চাওয়াই নদী খনন করে খাল করা হচ্ছে। নদী খনন করে পাড়ের মধ্যে মাটি ফেলার কারণে নদীটি আরও সরো হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে এই নদীতে বর্ষা মৌসুমে নৌ দূর্ঘটনার আশঙ্কা বেরে গেছে। খালিয়াজুরি উপজেলা ও মোহনগঞ্জ, সুনামগঞ্জের শাল্লা ও দিরাই কিছু এলাকা নৌ-পথে মদনে আসার একমাত্র নদী পথ এটি। আমরা পাউবো’র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন আমাদের এলাকা ভয়াবহ কোন দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

ঠিকাদারের প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা ইষ্টিমেট অনুযায়ী কাজ করছি। নদীর পাড়ে ভালভাবে মাটি রাখছি যাতে ধ্বসে না পড়ে। ফিনিশিংয়ের সময় ত্রুটিগুলো সম্পন্ন করা হবে।

নদীর পাড়ে মাটি রাখার ব্যাপারে প্রকল্প তত্বাবধানকারী নেত্রকোনা পারবো’র উপ-প্রকৌশলী ওবায়দুল হক বলেন, খননের মাটি নদীর পাড়ে রাখার নিয়ম নেই। খনন কাজ চলমান রয়েছে। নির্দিষ্ট স্থানে খননের মাটি সরিয়ে নেওয়ার হবে।

নদী কেটে খাল খননের ব্যাপারে নেত্রকোনা পারবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান মুঠোফোনে জানান, ২০১৮ সালে দায়িত্বে যারা ছিলেন তাঁরা প্রকল্প করেছেন। তবে চাওয়াই খাল খননে এলাকাবাসী সুফল পাবে।

নদীর পাড়ে খননের মাটি রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে খুব শীঘ্রই খননের মাটি বিক্রি করে সরিয়ে ফেলা হবে।