অভয়নগরে মানব পাচার মামলায় ২জন গ্রেফতার।

যশোরের অভয়নগর থানার অভিযানে মানব পাচার মামলায় ২জন আসামিকে গ্রেফতার করেছেন থানা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার শংকরপাশা বুনারামনগর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে উপজেলা শংকরপাশা গ্রামের মোঃ আলীর ছেলে ইমরান হোসেন বাদি হয়ে বিজ্ঞ মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল-১, যশোর আদালতে ৪ জনকে আসামি করে একটি মানব পাচার মামলা করেন। গ্রেফতারকৃত আসামি উপজেলার বুনারামনগরের মৃত ইন্তাজ আলীর ছেলে মোঃ ইনামুল হক, মোঃ শহর আলীর মেয়ে নাজমা বেগম। মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদী ও আসামীদের বাড়ী পাশাপাশি গ্রাম, ফলে বাদীর সাতে আসামীদের পরিচয় হয়। আসামী শহর আলীর ছেলে নিজাম দীর্ঘ দিন মালয়েশিয়া থাকে। মাঝে মাঝে বাড়ীতে এসে বিদেশে লোক পাঠায়। আসামী ইনামুল নিজামের মামা, নামজা বেগম বোন, শহর আলী পিতা।

আসামী নিজাম অন্যান্য আসামীদের সক্রিয় সহযোগিতায় বিদেশে লোক পাঠায়। বাদী বেকার থাকায় বিদেশ যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করার কারণে আসামী নিজাম সহ অন্যান্য আসামীদের কথা হয়। আসামী শহর আলী ও অন্যান্যরা বাদীকে ইতালি পাঠানোর জন্য ১৪,০০,০০০/- (চৌদ্দ লাখ) টাকা চুক্তি করে এবং ১০০, ১০০ টাকা ২টি ননজুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে বিদেশ গামীর গত ইং-২৮/০৬/২০২২ তারিখ লিখিত চুক্তি করে। (যার ষ্ট্যাম্প নং- ৮১৫১২৫৭, খঞ-৮১৫১২৫৮) চুক্তির পরে আসামী শহর আলী স্বাক্ষর আছে ও আসামী ইনামুল, নাজমা বেগম সাক্ষী হিসাবে স্বাক্ষর আছে। উক্ত চুক্তিপত্রে শর্ত থাকে যে, অতিদ্রুত ইতালি পৌঁছাইয়া দিবে।

আরো পড়ুন :
>> বেড়া মডেল থানার চিত্র পাল্টে দিলেন ওসি আসাদুজ্জামান
>> হাসপাতালে যেতে পড়ে গিয়ে পথেই মৃত সন্তান প্রসব করলো অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ

পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত বাদীকে কোন প্রকার হয়রানি বা জিম্মি রেখে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা যাবে না ষ্ট্যাম্পের দ্বিতীয় পাতায় আসামী শহর আলী স্বাক্ষর করিয়া পর্যায়ক্রমে মোট ৬,০০,০০০/- (ছয় লক্ষ) টাকা নেয়। বাকী টাকা ইতালি পৌছানোর পরে নিবে।। গত ইং-০২/০৭/২০২২ তারিখ বিকাল ৫.০০ ঘটিকার সময় সাক্ষীদের উপস্থিতিতে আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে সকল আসামীরা একই অভিপ্রায় সাধনের উদ্দেশ্যে কোন আর্থিক বা অন্য কোন মুনাফা অর্জনের জন্য বাদী অবৈধভাবে আটক করার উদ্দেশ্যে পাচারের জন্য বাদীর বাড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

পরের দিন ০৩/৭/২২ তারিখ ইটালির উদ্দেশ্যে বিমানে উঠে এবং দোবাই বিমান বন্দরে অবতরণ করে। বাদীকে ২১ দিন দুবাই রাখার পর রাস্তা যোগে ওমান দেশে নিয়ে যায়। সেখানে ৪ দিন রাখার পর স্পীড যোগে (পানি পথে) ইরান দেশে নিয়ে যায় সেখানে ১২ মাস রাখার পর তুরস্ক বর্ডারে নিয়ে যে অবৈধভাবে ১১ দিন আটক রাখে বা জিম্মি করে শারীরিক ও মানিসিক নির্যাতন করে টাকা দাবী করে। বাদীর সাথে আরও দুই জন ছিল। সবাই একই অবস্থা তার মধ্যে সাক্ষী জাকির হোসেন ওরফে জাকু এর ছেলে মান্নান, স্বাক্ষীআলী আজগার এর ছেলে মাসুম ছিল। আসামীরা বাদীর নিকট হইতে বাদীকে জিম্মি করে।

বাদীর ৬,০০,০০০/- (ছ) টাকা বাদে আরও ১৪,০০,০০০/- (চৌদ্দ লাখ) টাকা এবং অন্য ২ জনের (মান্নান ও মাসুদ) নিকট হইতে ১৫,০০,০০০/- (পনের লখ) টাকা মোট ১৯,০০,০০০/- (উনিশ লাখ) টাকা আদায় করে। বাদীর বাড়ী হইতে 017126500 ও 017030022 নম্বরে বিকাশে আসামীদের ০১৮৩৮১৯৫২৫২ ও ০১৮৩৩৫৫০০২২ বিকাশ নম্বরে টাকা দিয়াছে। টাকা দেওয়ার পর গত ইং-০৭/১০/২০২২ তারিখ বাদীকে ছেড়ে দিলে বাদী অর্ধ মৃত অবস্থায় বাংলাদেশ ফিরে আসে।

বিজ্ঞ আদালত অভয়নগর থানাকে মামলাটি গ্রহন করে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের আদেশ দেয়। থানা পুলিশ তদন্তে মামলার সত্যতা পেয়ে ঐ আাসামিদের গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। এবিষয়ে অভয়নগর থানার ওসি একেএম শামীম হাসান, বলেন আদালতের আদেশ পেয়ে তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে আসামিদের আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যহত আছে।

মার্চ ১৬, ২০২৩ at ২০:২৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/জাহোহৃ/শাস