ফেসবুকের কল্যাণে ঝুপড়ি ঘর থেকে রঙিন ঘরে ছবুরা

কল্পনা করতে পারিনি যে আমি কখনো নতুন ঘরে থাকব।এখন আর ঝড়-বৃষ্টি হলে অন্যর ঘরে আশ্রয় নেওয়া লাগবে না। নিজের রঙিন ঘরে শান্তিতে ঘুমাবো। আবেগের সাথে একথা গুলো বলছিলেন ছবুরা।

ফেসবুক বন্ধুদের সহায়তায় সংগৃহীত ৭২ হাজার টাকা দিয়ে তৈরি করা নতুন ঘর, তেপ-তোশক ও পোশাক ও খাদ্যসামগ্রী সহ নগদ টাকা সবকিছু বুধবার (৮ মার্চ) সকালে এই পরিবারকে হস্তান্তর করেন মামুন বিশ্বাস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মানবতার ফেরিওয়ালা মামুন বিশ্বাস।

জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলা শাহজাদপুর উপজেলার ঘোড়াশাল দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল গফুর শেখের স্ত্রী ছবুরা।তিন ছেলে দুই মেয়ে। তিন ছেলে বিয়ে করে মাকে ছেড়ে সবাই শ্বশুর বাড়ী ও ঢাকায় চলে গেছে, মায়ের কোন খোঁজ নেয় না সন্তানেরা। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছবুরা বেগম । বয়স ৭০। জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরেই একাকী বসবাস করছেন ছবুরা বেগম । অত্যান্ত কষ্টের সাথে বসবাস করছে। তার নামে বিধবা ভাতার কার্ড আছে ও আর বাড়িতে একটা আনাজ গাছ ও লাউ গাছ আছে তাই দিয়ে কোন মত ভাত খেয়ে চলছে৷ আগে সারাদিন মানুষের বাড়ীতে কাজ করে যায় পায় তাই দিয়ে চলতো, কিন্ত বয়সের ভারে এখন আর কাজ ও করতে পারেন না। জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছে ছবুরা বেগম, বৃষ্টি নামলে ঘরের মধ্যে পানি দিয়ে ভিজে যায় বিছানা। ঝড় উঠলে ভয়ে আশ্রয় নেন অন্যর বাড়িতে।

আরো পড়ুন :
>বদলগাছীতে ইসলামী ব্যাংকের উপ শাখার শুভ উদ্বোধন
>কাজিপুরে দুর্যোগ প্রস্তূতি দিবস পালন

ছবুরার বিষয়টি জানতে পেরে মামুন বিশ্বাস এই পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। দেশ ও বিদেশ থেকে প্রবাসী ফেসবুক বন্ধু ও ফেসবুক বন্ধুরা ও লিটল কেয়ার চ্যারিটি , কেনবেরা থেকো মোট ৭২ হাজার টাকা সংগ্রহীত হয়। সেই টাকায় একটি নতুন টিনের ঘর নির্মাণ করে দেন। এ ছাড়া থাকার জন্য লেপ-তোশক, বিছানার চাদর এবং পোশাক, খাদ্যসামগ্রী ও নগদ ৬ হাজার ১০০ টাকা তুলে দেন ছবুরাকে।

অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ছবুরা বলেন, আমি একাকী এখানে থাকি ঝুপড়ী ঘরে খুব ভয় করে। আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে আমি কখনো নতুন ঘরে থাকব। এই বয়সে এত সুন্দর ঘরে থাকতে পারব। আমি ভীষণ খুশি হয়েছি ঘর ও সবকিছু পেয়ে। যত দিন বেঁচে থাকব আপনাদের জন্য দোয়া করব।

দ্য বার্ড সেফটি হাউসের চেয়ারম্যান মামুন বিশ্বাস বলেন, অসহায় ছবুরা খালার বিষয়টি আমি জানার পরে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে সেখান থেকে ফেসবুক বন্ধুদের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করি। সেই টাকা দিয়েই তাদের জন্য ঘর তৈরি করা হয়। এ ছাড়া পোশাক, লেপ-তোশক ও খাদ্যসামগ্রীর ব্যবস্থাও করে দিই।

এই কৃতিত্ব আপনাদের, এই কৃতিত্ব ফেসবুক বন্ধুদের এবং আমি মাত্র চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি জানিয়ে ফেসবুক বন্ধুদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

মার্চ ০৯, ২০২৩ at ১৬:৩৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মআকুশা/মমেহা