উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালের অনারারি সেক্রেটারীর বিরুদ্ধে টেন্ডার জালিয়াতির অভিযোগ

উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালে সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে গত বছরের ২১ আগস্ট তারিখ পত্রিকায় দরপত্র আহ্বান বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়েছে, যাহার বিবরণ এইরূপ যে, বিএমএসআরআই এর অধীন বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ধানমন্ডি এবং উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফার্মেসী আলাদা আলাদা ভাবে লিজ দেবার জন্য ফার্মেসী পরিচালনা সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানদের/ঔষধ বিক্রেতাদের নিকট দরপত্র আহ্বান করা যাচ্ছে।

ফার্মেসী লীজ প্রদানের সিডিউল নগদ পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে (অফেরৎ যোগ্য) প্রকিউরমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (বাড়ি নং ৩৪, ৬ষ্ট তলা সড়ক নং ১৪/এ ধানমন্ডি ঢাকা ঠিকানায় পাওয়া যাবে। দরপত্র আগামী ০৩/০৯/২০২২ ইং বেলা ২ ঘটিকা পর্যন্ত ক্রয় করা যাবে এবং ১০/৯/২০২২ ইং বেলা ১২.০০ টার মধ্যে উক্ত ঠিকানায় পৌছানোর জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে। এই বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে চারটি কোম্পানি আব্দুল্লাহ ফার্মেসী, দৃষ্টি কমিউনিকেশন, নবরুপা ফার্মেসী, ডে নাইট ফার্মেসী সিডিউল ক্রয় এবং জমা দেয়।

প্রথমেই অনারারি সেক্রেটারি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ৫০ লাখ টাকার পে অর্ডার না থাকায়, নবরুপা ফার্মেসীকে লালকালি দিয়ে বাতিল করে স্বাক্ষর করেন, ২৬/১১/০২২, বাকি আব্দুল্লাহ ফার্মেসী এবং ডে নাইট ফার্মেসীকে অভিজ্ঞতা সনদ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় বাতিল করা হয়। বাকি থাকলো দৃষ্টি কমিউনিকেশন যার শিডিউল অনুযায়ী সকল কাগজপত্র এবং ছ অনুচ্ছেদে উল্লেখিত ৫০ লক্ষ টাকার পে অর্ডার জমা দেওয়া থাকলেও অদৃশ্য কারণে হঠাৎ রফিকুল ইসলাম নবরুপা ফার্মেসীকে কাজ দেওয়ার জন্য মৌখিক অর্ডার প্রদান করেন, বিষয়টি জানতে পেরে দৃষ্টি কমিউনিকেশনের মালিক আপত্তি জানালে প্রকিউরমেন্ট ইন্জিনিয়ার মো. কামাল বিষয়টি ইসি কমিটিকে অবগত করেন।

তারপরও নিয়ম বহির্ভূতভাবে সেক্রেটারি অদ্যবধি পর্যন্ত বিষয়টিকে নিষ্পত্তি না করে ঝুলিয়ে রেখে অফিস অর্ডার না দিয়ে মৌখিক ভাবে নবরুপা ফার্মেসীর মালিককে দিয়ে ফার্মেসীর ডেকোরেশনের কাজ করাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একই সাথে বাকীদের ৫০ লক্ষ টাকার পে অর্ডারসহ আটকিয়ে রাখায় ব্যবসায়ীকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন দৃষ্টি কমিউনিকেশনের অথরাইজডকৃত মালিক মো. নজরুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন এই রকম অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

আরো পড়ুন:
>কালীগঞ্জে নতুন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির অফিস উদ্বোধন করলেন এমপি আনার
>পাইকগাছায় বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস পালিত

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইতিপূর্বে কাকরাইল ফার্মেসীর সাথে আঁতাত করে প্রায় ৩ কোটি টাকা বকেয়া দেখিয়ে ইন্জিনিয়ার কামাল রফিকুল ইসলাম অনিয়ম করতেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শুধু তাই নয় রফিকুল ইসলাম নিজেকে সাবেক বিজিবির মহাপরিচালক দাবি করেন। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন আপনি কি আমার পরিচয় ব্যাক গ্রাউন্ড যানেন, বলে হুমকি দেন।

এবিষয়ে প্রকিউরমেন্ট ডিপার্টমেন্টের ইন্জিনিয়ার মো. কামালের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিভাবে এইরকম ঘটনা ঘটেছে তা আমি জানিনা। আমি সকল বিষয়ে লিখিত ভাবে সেক্রেটারিকে অবহিত করেছি, যেই প্রোফাইল বাতিল করা হয়েছে কিভাবে তাকে কাজ দেওয়ার চেষ্টা করেন কত টাকার বিনিময়ে এসব হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভাই এটা স্যার নিজেই লিখে সাক্ষর করে বাতিল করেছেন, এখন কিভাবে এ রকম হচ্ছে আমি জানি না।

এসকল বিষয়ে রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি শুরুতেই নিজেকে বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে বলেন, আমি নবরুপা ফার্মেসীকে বাতিল করেছি তাদের ৫০ লাখ টাকার পে অর্ডার ছিল না। তাহলে এখন কিভাবে তাদেরকে কাজ দিতে চাচ্ছেন, জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে ইসি কমিটিতে আলোচনা করেছি, তবে বিষয় টি নিয়ে ইসি কমিটিতে হট্টগোল হয়েছে বলে জানা গেছে। নবরুপার মালিকের সাথে কথা বলেছি তাদের ভ্যাটের কাগজ নাই বিলাঙ্ক চেক দিয়েছে সেই একাউন্টে টাকা আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন ব্যাংকের ম্যানেজার টাকা আছে কিনা না বলে জানিয়েছেন হি ইজ দ্যা সলবেন্ট, এই কথায় কি প্রমান হয় যে তার ৫০ লাখ টাকা আছে? তিনি নয় ছয় বলে স্বীকার করেন যে আমাদের ভুল ছিলো, তারপরেও তিনি নবরুপা ফার্মেসীকে কাজ দিতে বদ্ধ পরিকর।

সচেতন মহল বলছেন মোটা অংকের লেনদেনের মাধ্যমে এমন কাজ করতে পারেন বলে অনেকেই ধারনা করেছেন। যদিও বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।

মার্চ ০৩, ২০২৩ at ২১:১১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রইমি/সুরা