রাবিতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত পাখিমেলা

‘পাখি প্রকৃতির সৌন্দর্য আনন্দের সংগী এদের বাঁচতে দিন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দিনব্যাপী পাখিমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে এ মেলার প্রদর্শনী শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার এ মেলার উদ্বোধন করেন। এরপর পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে মেলা প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। মেলার আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ড কনজারভেশন ক্লাব। সার্বিক সহযোগিতায় ছিল প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন।

হরেক রকমের পাখির মেলা বসেছে সেখানে। প্রথম দেখায় তাদের জীবন্ত মনে হলেও তারা জীবন্ত নয়। তাদেরকে রাসায়নিক দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আর মেলায় দর্শনার্থীদের পাখির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে কাছ থেকে পাখি দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

মেলার স্টলগুলোতে রয়েছে হরেক রকম পাখির প্রদর্শনী। সেখানে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে- পানকৌড়ি, জল কাক, কাঠবিড়ালি, কোয়েল, পাঁতি কাক, নিশি বক, বালি হাঁস, তুর্কি বাজ, টিয়া, লক্ষ্মী পেঁচা, হুতুম পেঁচা, গরিয়াল মাছরাঙা, চোখাচোখি, সাতভাই ইত্যাদি। পাখিগুলো রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে সংরক্ষণ করা।

এছাড়া ছবির মাধ্যমেও পাখির চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে যার মধ্যে ছিল – কালোপিঠ গাংচিল, বাদামী ঝিল্লি, পালাসির গাংচিল, সাইবেরিয় শিলাফিদ্দা, লম্বাপা তিলাবাজ, নীল চটক, উইলসন্স স্টর্ম পেট্রল, লালঘাড় কাস্তেচোরা, তিলা লালবাটান, উল্টেঠুঁটি, ছোট বাবুবাটান, খুড়ুলে পেঁচা, কালোমাথা কাস্তেচোরা, ধলাকোমর মুনিয়া, ইউরেশিয় চামচ ঠুঁটি, বুটপা ঈগল, রঙিলা চ্যাগা, খয়রা মাথার সুঁইচোরা, সাদাগলা মানিকজোড়, সবুজ চাপাখি, তিলা লাল পা, ছোট ডুবুরী, ডাহুক, নদী টি টি, বামুন শালিক, জল ময়ূর, উদয়ী গয়ারসহ আরো বিভিন্ন রকমের পাখি।

পাখি মেলার মূল আকর্ষণ ছিল স্কুলের বাচ্চাদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। ক্যাম্পাসের আশেপাশের বিভিন্ন স্কুলের নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। লম্বা সাদা কাগজে তারা ফুটিয়ে তুলে টিয়া, মাছরাঙা, বক, শালিক, ময়নাসহ বিভিন্ন পাখির ছবি। প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

শেখ রাসেল মডেল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিকুন্নাহার শশী বলেন, ‘মেলায় পাখিগুলো দেখে খুবই ভালো লাগছে। নতুন নতুন অনেক পাখি দেখেছি যা আগে কখনো দেখিনি।’

মেলার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম সালেহ রেজা বলেন, ‘আমাদের দেশের অনেক অপরিচিত পাখি আছে যেগুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। এসব পাখি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরা এবং পাখি সংরক্ষণে তাদেরকে সচেতন করার জন্য আমাদের এ মেলা আয়োজন করা হয়েছে।’