গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছে সরকার

ছবি: সংগৃহীত

জনগণের ভোটের অধিকার, মৌলিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে নিযুক্ত ওআইসির সদস্যভুক্ত সাতটি দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে এ কথা বলেন তিনি।

পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্র সুসংহত হয়েছে। জনগণ যদি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে, না হলে আসবে না। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করেন। আওয়ামী লীগ জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাসী।

নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইন করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। জনগণের স্বার্থে গুরু দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রাবস্থায় থেকে তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও কখনো চিন্তা করেননি যে পরে সক্রিয় রাজনীতি করবেন এবং দেশ পরিচালনার মতো গুরু দায়িত্ব তাকে পালন করতে হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা-মা, পরিবারের সবাইকে হারানো এবং বিদেশে থাকায় দুই বোন বেঁচে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরে বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে, জনগণের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে গুরু দায়িত্ব নিতে হয়েছে।

আরো পড়ুন:
> ভোলার শশীভূষণে স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং সভা ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত
> মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল ক্লাস বর্জনের ঘোষণা !

বার বার মৃত্যুর হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯ বারের বেশি হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। মানুষের সেবা করার জন্যই হয়তো আল্লাহ দয়া করে বাঁচিয়ে রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের জন্য নয়, তিনি কাজ করেন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। তার একটাই উদ্দেশ্য, দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আমরা একটা নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিলাম। সেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ ২০২১ রূপকল্প ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেখানে আমরা বলেছিলাম ২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে এবং উন্নয়নশীল দেশ হবে। আমাদের প্রচেষ্টা ছিল, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ছিল। আল্লাহর রহমতে আমরা উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ করেছি।

পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না। আর মাত্র ৪০ হাজার ঘর করে দিলেই দেশে কেউ আর ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। এটা এ বছরেই হবে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশে কেউ ভূমিহীন থাকবে না।

বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে এক হয়ে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম উম্মাহর উচিত সম্মিলিতভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো। বঙ্গবন্ধু ফিলিস্তিনকে সমর্থন দিয়ে গেছেন। বাংলাদেশ সব সময় ফিলিস্তিনিদের পাশে আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। দ্রুত যুদ্ধ বন্ধ করা দরকার। আমাদের মাটি ও মানুষ আছে, ফসল ফলিয়ে আমরা এর প্রভাব মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি।

গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার ভূয়সী প্রশংসা করেন হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা। বিশেষ করে সফলতার সঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলা করায় তারা বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে, সুখে আছে অভিমত ব্যক্ত করে রাষ্ট্রদূতরা বলেন, এ জন্য মুসলিম উম্মাহর সদস্য হিসেবে তারাও খুশি এবং গর্বিত।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা তুলে ধরে তারা বলেন, বাংলাদেশ শুধু নিজেরই উন্নয়ন করছে না, বাংলাদেশের প্রায় ৭০ লাখ জনগোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত। সেখানকার অর্থনীতিতে তারা ব্যাপক অবদান রাখছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন রাষ্ট্রদূতরা। পরবর্তী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফলতা কামনা করেন তারা।

জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ at ১৬:৩৭:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/এমএইচ