গত বছর আত্মহত্যা করেছে ৪৪৬ শিক্ষার্থী

গত বছর সারাদেশে ৪৪৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে আঁচল ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে স্কুল ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থী ৩৪০ জন, কলেজ ও সমমান পর্যায়ে ১০৬ জন। নারী শিক্ষার্থী ২৮৫ জন ও পুরুষ শিক্ষার্থী ১৬১ জন। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে জানায় সংগঠনটি।

শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। দেশের পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। আঁচল ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ইউনিটের টিম লিডার ফারজানা আক্তার লাবনী এসব তথ্য তুলে ধরেন।

আগের জরিপের সূত্র দিয়ে তিনি বলেন, স্কুলপড়ুয়া থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়, সব স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যেই আত্মহত্যা সংক্রামক হারে বেড়ে চলছে। মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে আত্মহত্যার সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে আঁচল ফাউন্ডেশন। সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশের মোট আট বিভাগে আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ঢাকা বিভাগে।

এরপরই চট্টগ্রাম বিভাগে ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ, রংপুরে ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ, বরিশালে ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং সিলেট বিভাগে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন।

আরো পড়ুন:
>পাকিস্তানের মন্ত্রী হলেন ওয়াহাব রিয়াজ
>কোটচাঁদপুরে শীতার্তদের মাঝে এমপি চঞ্চলের কম্বল বিতরণ

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আত্মহত্যা করা স্কুল-কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৬৩ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং ছাত্র ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া শুধু স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৬৫ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং ছাত্র ৩৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। একই পথে পা বাড়ানো শুধু কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৫৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং ছাত্র ৪০ দশমিক ৫৬ শতাংশ রয়েছে।

আঁচল ফাউন্ডেশন জানায়, ২৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ অভিমান করে শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এদের বড় অংশেরই অভিমান ছিল পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার অন্য কারণগুলোর মধ্যে প্রেমঘটিত কারণও অন্যতম। প্রেমঘটিত কারণে ২৩ দশমিক ৩২ শতাংশ, পারিবারিক কলহে ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ, হতাশাগ্রস্ত হয়ে ২ দশমিক ০১ শতাংশ, মানসিক সমস্যায় ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ, আর্থিক সমস্যায় ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং উত্ত্যক্ত, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথে ধাবিত হয়েছেন ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থী।

আরো পড়ুন:
>পাকিস্তানের মন্ত্রী হলেন ওয়াহাব রিয়াজ
>কোটচাঁদপুরে শীতার্তদের মাঝে এমপি চঞ্চলের কম্বল বিতরণ

তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আত্মহত্যার পেছনে প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে আরও বেশ কিছু কারণের তথ্য পেয়েছে আঁচল ফাউন্ডেশন। এরমধ্যে আছে- আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ায় ৪ জন, শিক্ষক কর্তৃক অপমানিত হয়ে ৬ জন, মোবাইল গেম খেলায় বাধা দেওয়ায় ৭ জন, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে ২৭ জন, মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় ১০ জন, মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় ৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন। এছাড়া আত্মহত্যার অন্য কারণের মধ্যে রয়েছে পরীক্ষায় অকৃতকার্য বা আশানুরূপ ফলাফল না করতে পারা, পড়াশোনার চাপ অনুভব এবং পারিবারিক চাপ। সূত্র – আঁচল ফাউন্ডেশন।

জানুয়ারি ২৭.২০২৩ at ১৭:৫৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসআর