স্বরচিত গানে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে জবি‘র স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী সুতপা

স্বরচিত গানে জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী সুতপা রায়। তার নিজের লেখা রয়েছে অসংখ্য গান। তন্মধ্যে সুর করা আছে চার থেকে পাঁচটি গান। এসব গান গেয়েই দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন সুতপা।

ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক ছিলো সুতপার। গান কিংবা নাচ দুটোতেই পটু তিনি। সুতপার বাবা পবিত্র কুমার রায় ও মা সীমা রায় পুরান ঢাকার বাসিন্দা। বড় ভাই ড. প্র‍য়াস রায় এর আদরের ছোট বোন সুতপা শখের বশেই লেখেন অসংখ্য গান।

সুতপার নিজের লেখা ও সুর করা হারাবো পথে পথে…গানটি বন্ধুমহল, পরিবার-পরিজন সহ ক্যাম্পাসে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গানটির অংশ বিশেষ হলো, এই ফুটপাত, রাস্তা, অলিতে গলিতে, শহরের কোলাহল, যানজট পেরিয়ে, চলো না দু’জনে যাই আজ হারিয়ে ভেসে যাই অজানায় সব সীমা ছাড়িয়ে চেনা কোনো গানের সুরে হারাবো পথে পথে, কতদিন শুনি না পাখিদের কলতান, প্রকৃতি ডাকে ঐ করেছে আহ্বান, কতদিন পাই না পাহাড়ের নির্জনতা, সমুদ্র ডাকে ঐ! বাঁধাধরা নিয়মে ছুটি তো মেলে না, বদ্ধ দেয়ালে এ মন তো টেকে না, চলো না দু’জনে ভাঙি নিয়মের শৃঙ্খল, প্রকৃতি ডাকে ঐ!

গানের শুরু কিভাবে জানতে চাইলে সুতপা বলেন, পরিবারের আগ্রহে সেই ছোটবেলা থেকেই গান গাওয়া শুরু। গানের হাতে খড়ি শ্রদ্ধেয় বিষ্ণু কুমার ধর স্যারের হাত ধরে। এরপর বাসাবো ধর্মরাজিক ললিতকলা একাডেমীতে মুক্তিযুদ্ধকালীন বেতার শিল্পী ও বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীত শিল্পী শ্রদ্ধেয় এম. এ. মান্নান স্যার এবং হুমায়ুন কবির স্যারসহ প্রমুখ গুণী মানুষের সান্নিধ্যে নজরুল সঙ্গীতে ৫ বছরের কোর্স সম্পন্ন করে একাডেমিক সার্টিফিকেট অর্জন করি।

তিনি আরও বলেন, এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য ছায়ানটে নজরুল সঙ্গীতে অধ্যয়নের শুরু। সেখানে গুরু অসিত দে, খ্যাতিমান নজরুল সঙ্গীত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল স্যার এবং অন্যান্যদের সান্নিধ্যে গান শেখার সৌভাগ্য হয়েছে।

গানের জগতে প্রাপ্তি কি জানতে চাইলে সুতপা বলেন, ছোট বড় বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতায় গানে অংশগ্রহণ করে পুরস্কার পেয়েছি। এছাড়া স্টুডিও প্রোটিউন বিডি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে আমার দু’টি গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে যার একটি মৌলিক গান। তাদের সাথে রেকর্ডিং এর জন্য কথা চলছে। আরেকটা গান আমাদের একটা ব্যান্ড ছিল দেয়াল তার থিম সং কোথাও পারফর্ম করতে গেলে করতাম।

তিনি জানান, চাইলেই তো সুর দেয়া যায় না, পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী কখনো কোনো সুর মাথায় আসলে লেখায় সুর দেয়ার চেষ্টা করি।

সুতপা বলেন, অবসরে গানের চর্চা করতে গেলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা, সুর নিজের অজান্তে তৈরি হয়। নিজের ভালো লাগলে তা রেকর্ড করে পরিপূর্ণ গানে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করি। নিজের ইউটিউব চ্যানেল, ফেইসবুক, ইন্সটাগ্রামে বা বিভিন্ন ফেইসবুক পেইজে শেয়ার করে নতুন কিছু সৃষ্টির আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করি। মাঝে মাঝে বিপুল সাড়া পাই তখন আরো ভালো কিছু করার উদ্যম ফিরে পাই।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে সুতপা বলেন, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর পুরোপুরিভাবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে জড়িত হওয়ার ইচ্ছা আছে। কারণ অবসরে আমার ভালো লাগে গান গাইতে, গান লিখতে, সেই লেখা গানে সুর বসাতে। গানের প্রতি ভালো লাগা এবং তীব্র ভালবাসা থেকে আরও ভালোভাবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার গভীর স্বপ্ন দেখি। একজন সফল গানের মানুষ হতে চাই।