যশোরে ত্রাণের চাল আত্মসাত, ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত

ছবি: সংগৃহীত

সরকারি ত্রাণের চাল আত্মসাতের মামলায় যশোরের মণিরামপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চুর বিরুদ্ধে আজ মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিভাগীয় তদন্ত শুরু হচ্ছে । খুলনা বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার শহিদুল ইসলাম তদন্তের কাজ শুরু করবেন।

২০২০ সালের ৫৪৯ বস্তা ত্রাণের চাল ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম কুমার চক্রবর্তী বাচ্চু বেশি মুনাফার লোভে কালোবাজারে বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে জেলা ডিবি তদন্ত শেষে ভাইস চেয়ারম্যান বাচ্চুসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়। এরই পরিপেক্ষিতে উপজেলা পরিষদে আজ তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে সাময়িক বহিস্কারসহ শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্রিষ্ঠরা।

অতিরিক্ত খুলনা বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম বলেন, করোনাকালে ত্রাণের চাল আত্মসাৎতের ঘটনায় ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম কুমার চক্রবর্তী বাচ্চুর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হচ্ছে। এতোদিন নানা কারণে করা হয়নি। ঐ ঘটনায় সাক্ষী প্রমাণসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থিত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে স্থানীয় সরকারের আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৪ এপ্রিল খুলনার মহেশ্বরপাশা থেকে যশোরের মনিরামপুরের উদ্দেশে ৫ ট্রাক সরকারি ত্রাণের চাল আসে। যার মধ্যে থেকে এক ট্রাক চাল গোডাউনে লোড না দিয়েই স্থানীয় ভাই ভাই রাইস মিলে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে ৫৪৯ বস্তা চাল উদ্ধার এবং মিল মালিক ও ট্রাক ড্রাইভারকে আটক করে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, এই চালের কোন বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় থানার এসআই তপন কুমার সিংহ বাদী হয়ে কালোবাজারির মাধ্যমে চাল মজুদের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মণিরামপুর থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় আটক দু’জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ওই জবানবন্দিতে তারা মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চুসহ কয়েকজনের নাম প্রকাশ করে। তদন্ত শেষে ওই ৬ জনকে অভিযুক্ত করে যশোর আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করে জেলা ডিবি পুলিশ। তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে, ৫৪৯ বস্তা চাল ত্রাণের। ওই চাল ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম কুমার চক্রবর্তী বাচ্চু বেশি মুনাফার লোভে কালোবাজারে বিক্রি করে দেন।

যার মূল্য ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রথমে উত্তম কুমার ৪ লাখ টাকা নিয়েছেন পরে আরো ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন। সর্বশেষ ২০২১ সালের ৭ ফ্রেবুয়ারি যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বর্তমানে এই মামলায় বাচ্চু জামিনে রয়েছেন। মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- মণিরামপুরের বিজয়রামপুরের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন, তাহেরপুর গ্রামের মৃত সোলায়মান মোড়লের ছেলে শহিদুল ইসলাম, জুড়ানপুর গ্রামের রবিন দাসের ছেলে জগদিশ দাস, একুব্বার মোড়লের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস ও খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা সাহেবপাড়ার রতন হাওলাদারের ছেলে ড্রাইভার ফরিদ হাওলাদার।

জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ at ১৯:৫৪:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস