অভয়নগরে চেঙ্গুটিয়া টু মিস্ত্রিপাড়া সড়কের উন্নয়ন কাজে ধীরগতি: ভোগান্তি চরমে

যশোরের অভয়নগরে চেঙ্গুটিয়া বাজার টু মিস্ত্রিপাড়া সড়কের উন্নয়ন কাজে ধীরগতি থাকায় জনগনের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। অভয়নগর উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপ‚র্ণ একটি সড়ক হল চেঙ্গুটিয়া বাজার টু মিস্ত্রিপাড়া সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক চলাচল করে। শিল্পশহর নওয়াপাড়ার বেশ কয়েকটি নদীবন্দরে ঘাট, গোডাউন থাকায় ব্যবসায় মোকাম হিসেবে পরিচিত। এ সড়কের সাথে থাকা ঘাট গোডাউনে প্রায় কয়েক হাজার হ্যান্ডলিং শ্রমিক, অন্যান্যে শ্রমিকেরা কাজ করে থাকেন।

উপজেলার পরিষদের দাপ্তরিক কাজ, কর্মক্ষেত্রে, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এবং কেনাকাটা করার জন্য ওই সড়ক দিয়ে যাওয়া আসা করা হয়। তাছাড়া, নড়াইল, খুলনা, গোপালগঞ্জ, চাপাই, নাটর, কুড়িগ্রাম, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, এবং কুষ্টিয়াসহ ২২ জেলার সার, কয়লা, ভুট্টা, চাউল, গম, সিমেন্ট, ও ভুষিমাল ট্রাক যোগে এ সড়কে যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে সড়কের যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে চলাচলা করা দুরুহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরেজমিনে, সড়কের উন্নয়ন কাজে ধীরগতি করছে ঠিকাদার।

কয়েকজন ইমারাত শ্রমিকেরা কাজ করছেন। দেখা যায়, রাস্তায় বালি দিয়ে ভরাট করে রাখা হয়েছে। মাত্র ২ টা ট্রলি দিয়ে মাকাড্যামের কাজ করা হচ্ছে। কাজের অগ্রহতি তেমন নেই বললে চলে। সড়কে ডেলি লিভারে কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিকেরা বলেন,এক মাস কাজ বন্ধ ছিল। কয়েকদিন আবার চালু হয়েছে। কাজের জন্য লোক সংখ্যা কম। জানা গেছে, এ সড়কে পাশে মের্সাস নোয়াপাড়া ট্রেডার্সের নিজস্ব ঘাট গোডাউন রয়েছে। তাছাড়াও দেশ ট্রেডিংয়ের গোডাউন, দিপু স্টোনের ঘাট গোডাউনসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের গোডাউন রয়েছে। সরকারে বরাদ্দকৃত সার আনতে পারছেন না প্রতিষ্ঠান গুলো।

সড়কের কারণে গাড়ি যাওয়া আসায় বন্ধ রাখায় চরম বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। অনেক আগে থেকে গোডাউন ভাড়া নিয়ে বিপাকে আছেন তারা। এই সড়ক দিয়ে লোড আনলোড কাজ না করতে পেরে অনেকে বেকার হয়ে বসে আছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হ্যান্ডলিং সর্দার বলেন, সড়কের উন্নয়ন কাজে ধীরগতি হওয়াতে কয়েকমাস কাজ বন্ধ। কয়েক দফায় আমরা ঠিকাদারকে বলেছি। রাস্তার কাজটা অনেক শ্রমিক নিয়ে দ্রæত শেষ করতে। কিন্তু ঠিকাদার তা করছেন না।

চেঙ্গুটিয়া বাজার টু মিস্ত্রিপাড়া সড়কের ২৮০ মিটার সড়ক উন্নয়ন কাজে চরম ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। ১২ ফুট সড়কের উভয়দিকে ৩ ফুট করে বাড়িয়ে মোট ১৮ ফুট চওড়া রাস্তার পুনঃ পাকাকরন ও ঢালাই কাজের টেÐার দেয়া হয়। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক( এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের ( এলজিইডি) পল্লী সংযোগ সড়কের পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ সড়ক উন্নয়ন কাজ চলছে। কাজটি করছেন মোজাহার এন্টারপ্রাউজ (প্রাঃ)লি. ও শামীম চাকলাদার(জেভি)।

আরো পড়ুন:
>যশোরে তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ
>শূন্য কি জোড় নাকি বিজোড়?
>রাণীশংকৈলে ৫ দিনব্যাপি জাতীয় শিক্ষাক্রম বিস্তরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

প্রায় ১০ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও মাত্র ৫৫/৬০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। আনিসুর রহমান, আবুল হোসেন, রহিম খান, রবিউল ইসলাম বলেন, মোটর সাইকেলে প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে নওয়াপাড়া যেতে হয়। অনেকদিন হল সংস্কার কাজ চলছে। দ্রæত এ অবস্থার অবসান চাই। এ ব্যাপারে ঠিকাদারের লিভার সর্দার আনতার আলী বলেন, এর আগে মাস খানেক কাজ বন্ধ থাকায় কাজের গতি কমে গেছে।

সঠিক তথ্য পাবেন সাব কন্টাক্টর কালাম ভাইর কাছে। এ বিষয়টি নিয়ে কথা মুঠোফোনে সাব কন্টাক্টর মো. কালামের সাথে তিনি বলেন, ওই সড়কের কাজ আমরা যথা সময়ে শেষ করবো। আমাদের হাতে অনেক সময় আছে। নওয়াপাড়া পৌরসভার প্রকৌশলী অসিম কুমার সোম বলেন, সংস্কার কাজে ধীরগতির সুযোগ নেই। দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার শামীম চাকলাদার বলেন, আমি অসুস্থ। তাছাড়া ইট, পিচ এবং বিটুমিনসহ আনুষাঙ্গিক জিনিসের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। যে কারণে কিছু দিন বন্ধ ছিল। আগামী মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।

জানুয়ারি ১৫.২০২৩ at ১৮:২৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর