মিরপুরের উইকেটের প্রশংসায় মাশরাফী-সাকিব

ছবি: সংগৃহীত

নবম আসরে এসেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না দেশের ক্রিকেটের বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল)। তবে নানা সমালোচনা ছাপিয়ে এবার ক্রিকেটারদের মন জয় করে নিয়েছে মিরপুরের উইকেট। শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ও সাকিব আল হাসান। মাঠে গড়ানোর আগেই এবারের বিপিএলের নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে উঠেছিল বিস্তর অভিযোগ। ভালো মানের বিদেশি ক্রিকেটার ও ডিআরএস প্রযুক্তি না থাকায় আয়োজকদের ব্যর্থতাকে দায় করেছিলেন ক্রিকেটার থেকে শুরু করে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের টিম ম্যানেজমেন্ট।

তবে নানা আলোচনা-সমালোচনা পাশ কাটিয়ে ৬ জানুয়ারি মাঠে গড়ায় এবারের আসরের প্রথম ম্যাচ। ডিআরএসের বদলে এডিআরএস প্রযুক্তি নিয়ে কিছুটা বিতর্ক থাকলেও, আগের আসরগুলোর মতো মিরপুরের পিচ নিয়ে এবার কোনো অভিযোগ দেখা যায়নি ক্রিকেটারদের মধ্যে। যদিও আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মাত্র ৮৯ রানের ইনিংস বার্তা দিচ্ছিল মন্থর উইকেটের।

আরো পড়ুন:
> গোপালগঞ্জে জমির জন্য গাছে বেঁধে গৃহবধূর শরীরে আগুন
> ১৮ জেলায় অব্যাহত থাকবে শৈত্যপ্রবাহ

কিন্তু একইদিন সন্ধ্যার ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের করা ১৭৬ রান বা পরবর্তী দিন ১৯৪ রান করেও ফরচুন বরিশালের হার, বলে দিচ্ছে এবারের মিরপুর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটর জন্য আদর্শ উইকেট। গত আসরে চট্টগ্রাম পর্বে ২০০ ছাড়ানো ইনিংস দেখা গেলেও, এবার সেটার দেখা মিলেছে ঢাকা পর্বেই। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) ঢাকা ডমিনেটর্সের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ২০১ রান সংগ্রহ করে সিলেট স্ট্রাইকার্স। টি-টোয়েন্টির জন্য এমন আদর্শ উইকেট তৈরি করায় কিউরেটরকেই ধন্যবাদ দিলেন বিপিএল নিয়ে এবার সমালোচনায় মুখর থাকা ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, এবারের উইকেট অনেক ভালো। মিরপুরে সাধারণত এতো ভালো উইকেট আমরা পাই না। কিউরেটরকে কৃতিত্ব দিতেই হয়। এ কারণেই এতো বেশি রান হচ্ছে। আর মাঠের খেলাটাও অনেক বেশি ভালো হচ্ছে। এক্সাইটিং হচ্ছে। এবারের আসরের শুরু থেকেই ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছেন দেশি ক্রিকেটাররা। ঢাকা পর্ব শেষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সেরা ছয় জনের চার জনই বাংলাদেশের। ৩ ইনিংসে ১৯৫ রান করে শীর্ষে আছেন তৌহিদ হৃদয়, দুইয়ে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে ৪ ইনিংসে এসেছে ১৬৭ রান।

তালিকার চারে থাকা রনি তালুকার ২ ইনিংস করেছেন ১০৭ এবং ছয়ে থাকা জাকির হাসান ৪ ইনিংসে করেছেন ১০০ রান। শান্ত বাদে সবারই স্ট্রাইকরেট ১৬০ এর ওপরে। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, অনেকেই ভালো খেলছে। আপনি যদি দেখেন শান্ত, তৌহিদ, জাকিররা খুবই ভালো ব্যাটিং করছে। অন্যান্য দলের ক্রিকেটাররাও ভালো ব্যাটিং করছে। লোকাল (স্থানীয়) ব্যাটাররা ভালো ব্যাটিং করছে এটা আমাদের জন্য ভালো একটা দিক। অনেক কৃতিত্ব দিতে হয় উইকেটকে।

সাকিব যোগ করেন, ‘উইকেট ভালো, তাই ব্যাটাররা সুযোগ পাচ্ছে রান করার। দেখুন আগে ৩০-৪০ হতো এখন ৭০ হচ্ছে। এরপর ওরা এটাও শিখে যাবে যে কীভাবে একশ করতে হয়। তবে আমাদের দেশীয় বোলাররা কিন্তু ভালো বল করছে না। ভালো উইকেটে কীভাবে বোলিং করতে হয় সেটাও আমাদের শিখে নিতে হয়। ঢাকা পর্বে সবচেয়ে সফল দল মাশরাফীর সিলেট স্ট্রাইকার্স। এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান এসেছে তাদের দল থেকে। সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটাও তাদের দখলে। তাছাড়া ব্যাটে বলে আসরের সেরা তালিকায় আছে সিলেটের ব্যাটার ও বোলাররাই। মিরপুরের উইকেট নিয়ে তাই প্রশংসা করেছেন দলটির অধিনায়ক মাশরাফী। এমন উইকেটে খেললে বাংলাদেশ কিছু ভালো ক্রিকেটার তৈরি করতে পারবে বলেও তিনি আশা করেন।

মাশরাফী বলেন, উইকেট ভালো হলে খেলা সহজ হয়। এমনিতে উইকেট তো চট্টগ্রামে গেলেই শুধু ভালো পাওয়া যায়। (মিরপুরে) এমন উইকেট তো পাওয়া যায় না। তিন দিন যে উইকেট দেখলাম, দারুণ উইকেট। এমন উইকেট হলে কিছু ক্রিকেটার আমরা তৈরি করতে পারব। এটা খুব ভালো দিক যে এত সমালোচনার মধ্যেও মাঠের খেলাটা ঠিক আছে।

জানুয়ারি ১১, ২০২৩ at ১৮:১৮:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস