দৌলতপুরে ৬ ইটভাটায় ২৪ লাখ টাকা জরিমানা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সরকারি নিয়মবহির্ভূতভাবে চালানো ইটভাটায় অভিযানকালে কর্মকর্তারা।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় সরকারি নীতিমালা অমান্য করে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা ও জ্বালানি হিসাবে কাঠ পোড়ানোর ঘটনায় ৬ ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানকালে এসব ইটাভাটা মালিককে ২৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে শুরু করে দিনভর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত এসব ইটভাটায় যৌথ অভিযান চালান উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে অপর ইটভাটাগুলোতেও পর্যায়ক্রমে অভিযান চালানো হবে বলে কর্মকর্তারা জানান।

সহকারী কমিশনার (ভূমি), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে উপজেলার ডাংমড়কা এলাকার এনবিএল ব্রিকসের মালিক মোহায়মেনুল হককে ৫ লাখ টাকা, একই এলাকায় এমআরএন ব্রিকসের মালিক সমেদ আলী শামীমকে ৩ লাখ টাকা, আদাবাড়িয়া এলাকার আরইউবি ব্রিকসের মালিক রাজন আহমেদকে ৫ লাখ টাকা, কিশোরীনগরের এসআরবি ব্রিকসের মালিক আহসান হাবিবকে ৩ লাখ টাকা, দুখিপুর এলাকার আরএনবি ব্রিকসের মালিক আরিফুল ইসলামকে ৩ লাখ টাকা এবং গ্রাগপুর সীমান্ত এলাকার মাঠপাড়ায় অবস্থিত বিএসবি ব্রিকসের মালিক জাহাঙ্গীর আলমকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এ অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক হাবিবুর রহমান ও পর্যাপ্তসংখ্যক র‌্যাব ও পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই আইন লঙ্ঘন করে ইট প্রস্তুত, ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করায় এসব ইটভাটার মালিককে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ (সংশোধনী ২০১৯) এর সংশ্লিষ্ট ধারা লঙ্ঘন করায় এই অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এ সময় এই অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিপুলসংখ্যক কাঁচা ইট ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়।

অভিযান শেষে সহকারী কমিশনার (ভূমি), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদেন জানান, এসব ইটভাটায় সরকারি কোনো অনুমোদন নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই তিন ফসলী কৃষি জমিতে গড়ে তোলা এই ইটভাটাগুলোয় জ্বালানি হিসাবে কাঠ পোড়ানোর দায়ে ২৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ইটভাটা মালিকরা পুনরায় যেন এমন অবৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইটভাটা না চালান সে বিষয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সরকারি নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালিত অপর ইটভাটাগুলোতেও পর্যায়ক্রমে অভিযান চালানো হবে।

প্রসঙ্গত, দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৬টি ইটভাটার মধ্যে এ বছর ২টি ইটভাটা বন্ধ রয়েছে। চলমান ২৪টির মধ্যে ২৩টিরই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এসব ইটভাটায় সরকারি নিয়মনীতিকে কোনো রকম তোয়াক্কা না করে জ্বালানি হিসেবে কয়লার বদলে অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর ইটভাটাগুলোয় কাঠ পোড়ানোর মচ্ছব চলে আসলেও তারা নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। সম্প্রতি এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর বের হলে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। অবশেষে এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়।

জানুয়ারি ০৯.২০২৩ at ২০:৩২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর