যশোর চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচন স্থগিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

যশোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন স্থগিত করে স্মারক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৫ জানুয়ারি) যশোর জেলা প্রশাসকের নির্বাচনী কার্যালয় থেকে স্মারক নম্বর ০৫.৪৪. ৪১০০.০০১.জেসিসিআই / নির্বাচন- ২২/২১. স্মারকে যশোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন স্থগিত প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ যশোর সদর আদালতে দায়ের কৃত দেং ০৮/২৩ নম্বর মামলার আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ০৭/০১ /২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন স্থগিতরে ঘোষণা দেন।

এর আগে যশোরের মেসার্স পারভেজ ট্রেডার্সের মালিক মেহেদী হাসানের (ভোটার নম্বর-৬৪২) দায়ের করা মামলায় যশোর চেম্বার অব কমার্সের প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), নির্বাচন বোর্ডের আহবায়ক, দুই সদস্য, এবং আলম ট্রেডার্সের মালিক মো. আলম, সরোয়ার ট্রেডার্সের মালিক গোলাম সরোয়ার, রহিম স্টোরের মালিক আব্দুর রহিম ও যশোর কর অঞ্চলের উপকর কমিশনারকে বিবাদী করা হয়েছে। মামলার বাদীর অভিযোগ, নির্বাচন উপলক্ষে প্রকাশিত ভোটার তালিকায় ৩শ’র অধিক ভোটারের হালনাগাদ কোনো আয়কর সনদ নেই। এবং তারা আয়কর সনদের মুল কপি দাখিল না করে বেআইনিভাবে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এসব অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ দিলে তা গ্রহণ না করায় তিনি আদালতে মামলা করেন।

দীর্ঘ আট বছর পর এ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এরইমধ্যে সব প্রস্তুটি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে দুটি প্যানেলের একটি ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদ যার নেতৃত্বে রয়েছেন হুমায়ুন কবির কবু। অপর ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান। আগামী ৭ জানুয়ারি নির্ধারিত তারিখে যশোর চেম্বারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি হবে না। তবে, নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক বলেছেন, তারা আদালতের আদেশ হাতে পাননি। কে কারণে নির্বাচনী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

আরো পড়ুন:
> আইন মানছেন না কুবি উপাচার্য, চারমাসেও হয়নি সিন্ডিকেট সভা
> ভূঞাপুরে তেলবাহী ট্রাকের সাথে অটোভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ১

এদিকে, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘ আট বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া যশোর চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সাধারণ সদস্যরা। এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। কেউ বলছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরেই নির্বাচন স্থগিত করতে এ মামলাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আবার কেউ বলছেন, তালিকায় অবৈধ ভোটার থাকায় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠতো। এর মাধ্যমে সঠিকভাবে ভোটারতালিকা হালনাগাদ করার সুযোগ তৈরি হতে পারে। যা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়ক হবে। তবে, সাধারণ ভোটাররা দাবি করেছেন দ্রুত আইনি জটিলতা কাটিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা হোক।

আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যে সকল প্রস্ততি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে দুটি প্যানেলে অংশ নিচ্ছে। যার একটি হুমায়ুন কবির কবু, মিজানুর রহমান মিজান ও আসাদুজ্জামান মিঠুর নেতৃত্বাধীন ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদ। অন্যটি মিজানুর রহমান খান, শেখ আতিকুর বাবু, সাজ্জাদুর রহমান সুজা ও আব্দুল হামিদ চাকলাদার ঈদুলের নেতৃত্বাধীন ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ। ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদের নেতা হুমায়ুন কবির কবু বলেন, শেষ মুহুর্তে এসে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাওয়াটা দুঃখজনক। তারপরও তারা নির্বাচনী প্রচারণা করছেন। তিনি বলেন ‘আমরা ব্যবসায়ীদের সার্থে সুষ্ঠু ও দ্রুত নির্বাচন চাই।

মামলার বিষয়ে হুমায়ুন কবির কবু বলেন, আমাদের দাবি থাকবে এ বিষয়ে যেন দ্রুত নির্বাচন বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে নির্বাচনের পথ পরিস্কার করে। ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নেতা সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান গ্রামের কাগজকে বলেন, একটি পক্ষ কখনোই চায়না নির্বাচন হোক। তারাই নির্বাচন বন্ধ করতে শুরু থেকেই চেষ্টা করছে। যার প্রেক্ষিতে তাকে আটক করা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি। নির্বাচন ঘিরে নানা বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে এ মামলা করা হয়েছে। মূলত একটি মহল পরাজয়ের গ্লানি সহ্য করতে পারে এমন আশংকায় এ মামলা করিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যাচাই বাছাই ছাড়াতো আর ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়নি। ফলে এগুলো শুধুই অযুহাত। যেহেতু মামলা হয়েছে। আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

আরো পড়ুন:
> ভাঙ্গুড়ায় বই থেকে বঞ্চিত চার হাজার শিক্ষার্থী
> তালার খেশরা ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম

আইনানুগভাবেই বিষয়টির সমাধান করতে হবে।ইতিমধ্যেই গ্রুপ শ্রেণি থেকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, অভিযোগ রয়েছে ইজিবাইক চালক, দোকানের কর্মচারী ও ভবঘুরেরাও চেম্বারের সদস্য হয়েছেন। এর উপযুক্ত প্রমাণও পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তাহলে আর কনফিউশন থাকবে না। প্রকৃত ভোটাররা সুযোগ পাবেন। অন্যদিকে, অবৈধরা বাদ যাবে। তবে, দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানান শহিদুল ইসলাম মিলন।

জানুয়ারি ০৫, ২০২৩ at ২১:২০:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস