যশোরে মালামাল ক্রয় বিক্রয়ের নাটক সাজিয়ে দুই লক্ষাধিক টাকা নিয়ে লাপাত্তা ৭ প্রতারক

যশোরে পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণা মাধ্যমে এক মুদী দোকান্দারের কাছ থেকে ২ লাখ ২ হাজার টাকা আত্মসাত করায় পিবিআইয়ের একটি টিম চক্রের সাত সদস্যকের গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বুধবার ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে যশোর কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় আসামীরা হচ্ছে,নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানার ফতেপুর গ্রামের এবাইদুল্লাহর ছেলে জাকির হোসেন, একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ফারুক, লিয়াকত আলী ওরফে স্বপনের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন, ফেনী জেলার সদর উপজেলার সরিষাদি বাজারের হাফিজুর রহমানের ছেলে ওবায়দুল হোসেন, জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার উচাই গ্রামের বর্তমানে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার গুয়াতলা বাহেরচর গ্রামের তৈয়ব মোল্লা ওরফে বিশ্বনাথের ছেলে আলম মোল্লা ওরফে সুশান্ত, কুমিল্লা মনোহর গঞ্জ থানার প্রতাপপুর গ্রামের আমাউল্লাহর ছেলে রবিউল আওয়াল ও গোপলগঞ্জ জেলা মোকসেদপুর থানার কোহালদিয়ে গ্রামের বেল্লাল হোসেনের ছেলে পাভেজজ হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪জন।

আরো পড়ুন:
> বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর পদত্যাগ
> আগামী দিন ভোলায় তিন ইউপিতে ভোট, কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার

মামলায় বাদি উল্লেখ করেন, সদর উপজেলার পুলেরহাট বাজারে কৃষ্ণবাটি রোডে আমিরুল ইসলাম ষ্টোর নামে একটি মুদী দোকান রয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর দুপুর ১২ টায় অজ্ঞাতনামা দুইজন ব্যক্তি তার দোকানে এসে তাদের নিজেদের হাজী কামাল ক্যামিকেল কোং ঢাকার লোক বলে পরিচয় দেয়। তারা বাদিকে বলে তাদের কোম্পানীর উৎপাদিত ১৫টি পণ্য তারা বিক্রয় করে। তাদের কোম্পানীর উৎপাদিত হাঁসমুরগিসহ বিভিন্ন পাখির ঔষধ বাদির দোকানে রেখে বিক্রয় করে তারা টাকা দিতে বলে চলে যায়। পরের দিন সকাল ৯ টায় অজ্ঞাতনামা দু’জন লোক বাদির দোকানে এসে উক্ত মালামালগুলি ক্রয় করে নিয়ে যায়। এভাবে ৩/৪দিন অজ্ঞাতনামা আসামীরা বাদির দোকানে এসে মালামাল ক্রয় বিক্রয় করতে থাকে।

এক পর্যায় গত ২২ ডিসেম্বর সকাল ৯ টায় অজ্ঞাতনামা চারজন লোক বাদির দোকানে এসে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার হাঁস মুরগির ঔষধসহ বিভিন্ন পোকা মাকড় নিধনের ঔষধ জাতীয় কেমিক্যালের অর্ডার দেয় এবং অগ্রিম হিসেবে ৬ হাজার টাকা ও তাদের তিনটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে চলে যায়। পরে একই দিন দুপুর আনুমানিক ২ টায় অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি বাদির দোকানে এসে ২লাখ ২ হাজার টাকার উল্লেখিত ঔষধ জাতীয় কেমিক্যাল বাদির নিকট বিক্রয় করে টাকা নিয়ে একটি ক্যাশ মেমো ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে চলে যায়।

পরে অর্ডার দেওয়া অজ্ঞাতনামা আসামীরা বাদির দোকনে মাল কিনতে আসেনি। উক্ত অর্ডার নেওয়া মালগুলি না নেওয়ায় বাদি আসামীদের উল্লেখিত মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে তারা মাল কিনতে অস্বীকার করে এবং তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। বাদির তাদের সকল মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন আসামীরা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। বাদি বিষয়টি নিয়ে পিবিআই অফিসে যোগাযোগ করে তাদেরকে ঘটনার বিষয় জানায়। পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার বিষয়টি জানতে পেরে একজন অফিসারকে দায়িত্ব দেন। পিবিআইয়ের অফিসার জিয়াউর রহমান অভিযোগটি পেয়ে তথ্য প্রযুক্তি এবং বিভিন্ন সূত্রে মাধ্যমে প্রতারক চক্রের অবস্থান সনাক্ত করেন। পরে পিবিআইয়ের একটি টিম বাদিকে নিয়ে শহরতলী নীলগঞ্জ তাঁতীপাড়াস্থ জনৈক কাজী রবিউল ইসলামের ৩তলা বিশিষ্ট বসত বাড়ির নীচতলায় যায়।

পিবিআই টিম বাড়ির মালিককে ডেকে এনে প্রতারকদের দরজা খুলে দিতে বললে তারা দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলে দেওয়ার পর বাদি ও পিবিআই টিম এবং বাড়ির মালিক উক্ত ফ্লাটে প্রবেশ করেন। প্রবেশ করে বাদি উক্ত ফ্লাটে থাকা ৭জন প্রতারক সবাইকে চিনে ফেলে। প্রতারকেরা বিভিন্ন সময় বাদির দোকানে এসেছে বলে বাদি নিশ্চিত হন। পিবিআই পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা উক্ত নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। তারা প্রতারণার বিষয় পিবিআইয়ের কাছে স্বীকার করেন। পরে তাদেরকে গ্রেফতার করে পিবিআই দপ্তরে আনা হয়। বাদির মামলায় গ্রেফতারকৃত ৭জনকে বুধবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

ডিসেম্বর ২৮, ২০২২ at ২০:১৬:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস