যশোর রেজিস্ট্রার অফিসের ভৈরব চক্রবর্তী অবৈধ টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন

দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া ভৈরব চক্রবর্তী আজ কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। তার দুর্নীতির খবর প্রকাশ হওয়ার পর বেড়িয়ে পড়ছে একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতির খবর। তার বাবা ছিলেন একজন কৃষক ও দিনমজুর। তিনি দিন এনে দিন খাওয়া কৃষক ছিলেন। তার ছেলে আজ কোটি কোটি টাকার সম্পদে বনে যাওয়ায় এলাকার মানুষও হতভম্ব।

গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, মণিরামপুর উপজেলার নিজ গ্রাম আ¤্রঝুটা গ্রামে কয়েক একর জমির মালিক বনে গেছেন। শুধু তাই নয়, মুন্সী খানপুর গ্রামের রয়েছে একটি বাড়ি। এছাড়া মণিরামপুর শহরের হাকুবা সড়কে ১২ শতক জমির ওপর গড়ে তুলেছেন আলীসান বাড়ি। পাঁচতলা ফাউন্ডেশনের এই বাড়িটির দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত সম্পন্ন করেছেন। বাড়ির নিচ তলায় রয়েছে বিশাল মার্কেট। বিলাস বাহুল এই বাড়িটি করতে অন্তত: কোটি টাকা খরচ করেছেন তিনি। যা দেখলে চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে।

সূত্র জানায়, হাকুবা সড়কের এই জমিতে কেনায় ব্যাপক দুর্নীতির আশ্রয় নেন ভৈরব চক্রবর্তী। জনৈক তপন ঠাকুরের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ দিয়ে জমি ক্রয় করলেও রেজিস্ট্রিতে নিয়েছেন দুর্নীতি আশ্রয়। সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য তপন ঠাকুরের কাছ থেকে দানপত্র হিসেবে জমিটি রেজিস্ট্রি করেছেন ভৈরব চক্রবর্তী। একজন রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী হয়ে এভাবে দুর্নীতি করার কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

আরো পড়ুন :
>বলরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সভাপতি হলেন আনোয়ার হোসেন বিপুল
>যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় দু’জন গ্রেফতার

কিন্তু অর্থ ও সম্পদের কারণে কেউ ভৈরব চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। সূত্র জানায়, ভৈরব চক্রবর্তী শুধু মণিরামপুরে নয়, তার শ্বশুর বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জেও নামে বেনামে অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। যা তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে আরো অনেক অজানা সম্পদের কাহিনী। যশোর রেজিস্ট্রি অফিসের একটি সূত্র জানায়, জাল দলিল সম্পাদনার কাজে সহায়তা সিদ্ধহস্ত ভৈরব চক্রবর্তী। মণিরামপুরে চাকরি করার কারণে বেশ কিছু জাল দলিল সম্পাদনা সহায়তা করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর থেকেই তার আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। আর এভাবেই অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করতে থাকেন।

সূত্র জানায়, ভৈরব চক্রবর্তী জেলা রেজিস্ট্রি অফিসে যোগদান করার পরই সমগ্র জেলায় একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে বিভিন্নভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে নিজ সম্প্রদায়ের মানুষদেরকে এক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি অনেকটাই সফলও হয়েছেন। সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে ভৈরব চক্রবর্তী নকল নবিশ হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন।

আরো পড়ুন :
>বলরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সভাপতি হলেন আনোয়ার হোসেন বিপুল
>যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় দু’জন গ্রেফতার

২৩০০ টাকা স্কেলের বেতনে চাকরি করা রেকর্ড কিপার কি এমন আলাউদ্দিনের চেরাগ পেয়েছেন মাত্র ৭ বছরের ব্যবধানে আজ কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন। এ প্রশ্ন এখন কুলটিয়া ইউনিয়নসহ জেলার সমগ্র রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারীদের। এ ব্যপারে জানতে চাইলে ভৈরব চক্রবর্তী বলেন, আমি চাকরি করি, আমার সম্পদ আছে, তা থেকে আজ এত সম্পদ হয়েছে। কোন দুর্নীতি করে সম্পদ গড়েনি।

ডিসেম্বর ২৬.২০২২ at ১৯:৫১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর