শিক্ষা নিয়ে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে শাহীন স্কুল

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না। আমরা সবাই সেটা জানি। কিন্তু শুধু শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড সেটা পুরোপুরি সঠিক না। সুশিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। সুশিক্ষাই একজনকে তৈরী করতে পারে সুন্দর মনের মানুষ হিসাবে। গড়ে তুলতে পারে সুন্দর পরিচ্ছন্ন জীবন। সেই সুশিক্ষার অভাব রয়েছে শাহীন স্কুল অ্যান্ড ক্যাডেট একাডেমির বিরুদ্ধে। কোথায়ও কোথায়ও তাদের নাম বলা হয় শাহীন স্কুল এন্ড কলেজ।

প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে শতাধিক শাখা খুলে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা শিক্ষার মত একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে প্রতরণা চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর। মিথ্যে তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে কমলমতি শিক্ষার্থীদে কু-শিক্ষা দিয়ে জাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারি না থাকার কারণে তারা রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

আরো পড়ুন:
> আ.লীগের নতুন কমিটিতে জায়গা পেলেন যারা
> নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ যুগ পূর্তি ও মিলন মেলার উদ্বোধন

আর এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জাতির আগামী দিনের ভবিষ্যত। সূত্র জানায়, দেশের সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বি এ এফ শাহীন স্কুলের নামে সাথে মিলিয়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করতে পারে খুব সহজেই। যে কারণে স্কুলের নাম দেওয়া হয়েছে শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। আবার কোথাও কোথাও শাহীন স্কুল অ্যান্ড ক্যাডেট একাডেমি। জানা গেছে, সারা দেশে ৮টি বিভাগীয় শহরসহ ৩২টি জেলায় স্কুল ও কোচিংয়ের শাখা কার্যক্রম চলছে।

সব মিলিয়ে তাদের ১০৭টি শাখা রয়েছে। এসব শাখায় নেই কোন দক্ষ শিক্ষক। যেসব জায়গায় তাদের শাখা রয়েছে, সেই সব স্থানের কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীদের নামকাওয়াস্তে বেতন দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তাছাড়া টাঙ্গাইলের দুর্বৃত্তদের বিভিন্ন স্থানে পোস্টিং দিয়ে শাখা পরিচালনা করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। নতুন বছরের আগমনকে ঘিরে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য ফেস্টুন দিয়ে ছেয়ে ফেলেছে। এছাড়া বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। মিথ্যে তথ্য দিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিভ্রান্ত করে প্রতারণা করছে। শুধু তাই নয়, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য কোন জেলার জেলা প্রশাসনের অনুমতি নেই শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর জন্য।

ছবি: সংগৃহীত

এমনকি শিক্ষা বোর্ডেরও কোন অনুমোদন নেই। ফলে শিক্ষা নিয়ে তারা মনোপলি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির যশোর শাখার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। যশোর শাখার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারী, নারীর সাথে প্রতারণা, মানুষের সংসার ভাঙানোসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এলাকার মানুষও অভিযোগ করে কোন ফল পায়নি। যে কারণে এখানে কর্মরতরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

আরো পড়ুন:
> লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জামায়াতের ৩ নেতাকর্মী আটক 
> ভূঞাপুরে উৎসব মুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে পাঠাগার সম্মেলন

লাগাম ছাড়ায় চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অনৈতিক কর্মকান্ড। সচেতন অভিভাবক ও এলাকাবাসীর প্রশ্ন কোন ক্ষমতাবলে এই প্রতিষ্ঠানটি বছরের পর বছর এভাবে প্রতারণা করছে। তাদের খুটির জোর কোথায় ? তারা যদি শিক্ষা নিয়ে এতবড় প্রতারণা করে তাহলে কমলমতি শিক্ষার্থীদের তো প্রতারণার শিক্ষা দিবে। এদের কাছ থেকে জাতি কি আশা করে? অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য ০১৬২২২২২১১১ নম্বর মোবাইল ফোনে ফোন করা হলে আইডি বিভাগের মাহফুজুর রহমান ফোন রিসিভ করেন। তার কাছে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের ফোন নম্বর চাওয়া হলে তিনি দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, স্যারের ফোন নম্বর আমাদের কাছে নেই।

এছাড়া তিনি ফোন নম্বর দিতে নিষেধ করেছেন। আপনার অভিযোগ আমরা লিখে রাখবো। স্যারকে আমরা বিষয়টি জানাবো। তার কাছে প্রশ্ন রাখা হয় যশোর শাখায় কর্মরত টাঙ্গাইলের শিক্ষক ও কর্মচারীরা নানা কেলেঙ্কারীতে জড়িত এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু কেন ? এ প্রশ্নের তিনি কোন উত্তর না দিয়ে তড়িঘড়ি করে ফোন রেখে দেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাছুদুল আমীন শাহীন সাহেবকে কিভাবে কথা বলা যাবে ? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি অল্প কিছু দিন আগে যোগদান করেছি। আমি নিজেও এখন পর্যন্ত স্যারের সাথে কথা বলতে পারিনি।

ডিসেম্বর ২৪, ২০২২ at ১৯:৫৭:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস