রেমিটেন্স যোদ্ধার লাশ দেশে আসবে কি ভাবে ?

অভাব অনটন থাকলেও গ্রামে বকুলের ছিল সুখের সংসার। দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে চলছিল বেশ ভালোই। কিন্তু দালালের খপ্পরে পড়ে সুখ এখন অসুখে পরিণত হয়েছে। স্ত্রী সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে দালাল ধরে মধ্য বয়সে সৌদি আরব পাড়ি জমান বকুল। নাম লেখান রেমিটেন্স যোদ্ধার তালিকায়। চলতি বছরের ৩১ সেপ্টেম্বর পৌছান সৌদি আরবের রিয়াদে। কাজ না জানার কারণে মালিকের বকাঝকা আর বেতন না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন বকুল হোসেন। এ ভাবে হতাশা থেকে গভীর চিন্তামগ্ন হয়ে পড়েন তিনি।

এক রাতে দুঃশ্চিন্তায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন বকুল। রিয়াদের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে গত ২৪ নভেম্বর তিনি মৃত্যু পেয়ালায় চুমুক দিয়ে চিরঘুমে আচ্ছন্ন হন। বকুলের মৃত্যুর পর তার পরিবারের কাছে সঠিক সংবাদটি জানায়নি দালাল চক্র। বকুল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটী ইউনিয়নের রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের আব্দুল গফুর মুন্সির ছেলে।

বকুলের লাশ এখন রিয়াদের ফ্যামিলি কেয়ার হাসপাতালের হিমঘরে পড়ে আছে বলে তার ছেলে শিমুল জানান। বকুলের স্ত্রী আসমা খাতুন শিউলি ও শ্বাশুড়ি আলেয়া খাতুন অভিযোগ করেন, ডাকবাংলা এলাকার দালাল হাসান ও তার বৈমাত্রিক ভাই সাইফুলকে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়ে বকুলকে সৌদি আরবে পাঠান। এ জন্য তাদের ঝিনাইদহ প্রবাসি কল্যান ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋন নিতে হয়েছে।

আরো পড়ুন :
চৌগাছায় চলতি মৌসুমে ৩৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ
মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের ২০২২-২৩ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
ঝিনাইদহে কৃষকের ১ বিঘা জমির ধরন্ত লাউগাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

সব মিলিয়ে সৌদি যেতে খরচ পড়ে ৫ লাখ টাকা। এখন বকুলের লাশ আনতে তারা আরো দাবী করছে তিন লাখ টাকা। অথচ বকুলের পরিবারের কোন সক্ষমতা নেই। বকুলের দুই ছেলে শিমুল ও নাহিদ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে পড়ছেন। তারা পিতার মৃত মুখটা দেখতে উদগ্রীব। এদিকে স্বামীকে হারিয়ে দুই সন্তান নিয়ে গভীর পানিতে পড়েছেন বকুলের স্ত্রী আসমা খাতুন শিউলি।

স্বামীর লাশ কি ভাবে দেশে আনবেন তা নিয়ে পরিবারটি চিন্তিত। এই শোকের মধ্যেও বকুলের লাশ নিয়ে সৌদি আরবে অবস্থানরত দালাল সাইফুল ব্যাবসা শুরু করেছেন। লাশ দেশে পাঠাতে সেখানে সাহায্য তুলে পকেটস্থ করছে বলে পরিবারটির কানে আসছে। এমতাবস্থায় বকুলের লাশ দেশ আনতে অসহায় পরিবারটি সৌদি ও বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা কামনা করেছেন। বকুলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগঃ ০১৭৯৪-০৮৭২১৮

ডিসেম্বর ২৩.২০২২ at ২১:১৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর