যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরে নানামুখী কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ

যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অফিসের কার্যক্রম নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা গুঞ্জন। এখানে বছর খানেক পূর্বে চার জেলার অভিযান এই কার্যালয় থেকে পরিচালিত হলেও বর্তমানে দুই জেলা নিয়ে এই কার্যালয়ের কর্মকান্ডের পরিধি হলেও জনবলের অজুহাত দেখালেন উপ-পরিচালক মহোদয়। তবে এই কার্যালয়ে ঘুষের লেনদেন ছাড়া কোন কাজ হয়না বলে খবর পাওয়া গেছে। ঘুষ দূর্নীতির ব্যাপারে অভিযোগ পেলে খবরের কাগজে লেখার কথা জানিয়েছেন অফিস প্রধান উপ-পরিচালক সাঈদ আনোয়ার।

প্রতিবেদক সম্প্রতি যশোর শহরের জেল রোডস্থ বাইলেন ডিআইজি প্রিজন্স রোডস্থ যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের উত্তর পাশে সড়কে অবস্থিত পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর জেলা কার্যালয়। এই কার্যালয়টিতে বর্তমানে উপ-পরিচালক পদে সাঈদ আনোয়ার,সহকারী পরিচালক পদে হারুন অর রশিদ,পরিদর্শক পদে জাহিদ হাসান, সার্ট লিপিকার পদে জিহাদ হোসেন হিসাব রক্ষক পদে মিজানুর রহমান,নমুনা সংগ্রহকারী পদে দিদারুল ইসলাম,নমুনা সংগ্রহকারী পদে অফিস সহকারী আবুল বাশার মোল্লা ও গাড়ীর চালক পদে হারুন অর রশিদ মানিক দায়িত্ব পালন করছেন।

আরো পড়ুন:
> ঝিনাইদহে চলছে রমরমা মাটি বিক্রির মহাউৎসব
> চুয়াডাঙ্গায় সবজির ট্রাকের ধাক্কায় এক ব্যবসায়ী নিহত

অফিস প্রধানসহ ৮ জন এই অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে থাকছে নানান জটিল। এই অফিসে জনবলের সংকটের দোহায় দিয়ে অফিসের প্রধান উপ-পরিচালক সাঈদ আনোয়ার জানান, যশোর ও মাগুরা জেলা নিয়ে এই অফিসের কার্যক্রমের পরিধি। দুই জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদ পাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে দারুন বিড়ম্বনা। জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে অফিস প্রধান বলেন,এই অফিসের কেউ দূর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে কোন ছাড় নেই। তবে এই অফিসে যারা দায়িত্ব পালন করছেন,তাদের মধ্যে কয়েকজন সরাসরি দূর্নীতির সাথে জড়িত। দূর্নীতির মাধ্যমে তারা মাসে লাখ লাখ টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করছেন। এই অফিসে যার যা দায়িত্ব তিনি সেই দায়িত্ব পালন না করে সহকারী পরিচালক,নমুনা সংগ্রহকারী ও পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করছেন অন্যান্যরা। কে কর্মকর্তা আর কে কর্মচারী বাইরের কেউ বুঝতে পারছেন না। তার কারণ পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে এই অফিসের বেশ কয়েকজন পরিদর্শন বাবদ মাথা পিছু ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। অথচ অফিসের নিজস্ব গাড়ী রয়েছে। যে গাড়ীর জ্বলানীর খরচ সরকারের কোষাগার থেকে গুনতে হয়। তারপরও কখনও গাড়ীর ফুয়েল ও পরিদর্শনের ফি বাবদ গোপনে অর্থ চান এই অফিসের কয়েকজন কর্মচারী।

যারা পরিদর্শনের ফি দেন না। তাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়াপত্র পাওয়া দুস্প্রাপ্য হয়ে পড়েন। তাছাড়া, এই প্রতিবেদক অফিস প্রধানের কাছে বিগত ছয় মাসে এই অফিসের কার্যক্রমের ব্যাপারে তথ্য চাইলে তিনি জানান, হিসাব কষে প্রতিবেদকের ওয়াটসঅ্যাপে পাঠানোর কথা বলেন। আজ পর্যন্ত এই অফিসের অধীনে দুই জেলায় বিগত ছয় মাসে অভিযানসহ কর্মকান্ডের চিত্রের কোন খবর জানাননি অফিস প্রধান। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,বর্তমানে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে মাত্র কয়েকশো গজ দূরে আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে পরিবেশ বিঘ্নকারী প্রতিষ্ঠান।

যে প্রতিষ্ঠানের জন্য পরিবেশ হুমকীর মুখে। জেল রোড থেকে ডিআইজি প্রিজন্স রোডে প্রবেশের মুখে অপ্রশস্ত রাস্তার দু’ধানে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া ওয়েল্ডিংসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। যার কারনে আবাসিক এলাকার বাসিন্দা দারুন শংকিত। তাই বছর খানেক পূর্বে যশোরের একটি পত্রিকায় পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ে পরিবেশের ছাড়পত্র নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যশোরের বিভিন্ন পেশার মানুষ।

ডিসেম্বর ২০, ২০২২ at ২০:২০:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস